মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ১৯৬২ সালে লাদাখ ও ওয়ালঙ সেক্টরের মতো ভারতীয় সেনাবাহিনীর শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যুহ পর্যন্ত ভেসে গিয়েছিল চীনা সৈন্যদের মানব ঢলে। ভবিষ্যত যুদ্ধের দৃশ্য আরো কঠিন হবে বলেই এখন মনে হচ্ছে। কারণ ভারতীয় প্রতিরক্ষা লাইন উড়িয়ে ও গুঁড়িয়ে দিতে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) মনুষ্যবিহীন ট্যাঙ্কের ঢল বইয়ে দিতে পারে।
রাষ্ট্রায়ত্ত চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশনের (সিসিটিভি) সা¤প্রতিক ফুটেজে দেখা গেছে, চীনের প্রথম মনুষ্যবিহীন ট্যাঙ্কটি রিমোট কন্ট্রোলে পরিচালিত হচ্ছে। ফুটেজে ট্যাঙ্কটির প্রধান বন্দু কিংবা অন্যান্য গুলিবর্ষণের সরঞ্জাম দেখানো না হলেও ভারতের সাঁজোয়া বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওই সামর্থ্য অর্জন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
২০১৪ সালের জুলাই মাসে চায়না ডেইলি ওয়েবসাইটে এক সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, পিএলএ মনুষ্যবিহীন সাঁজোয়া যান তৈরি করছে। এক মাস আগে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিরক্ষা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না নর্থ ইন্ডাস্ট্রিজ গ্রুপ করপোরেশন মনুষ্যবিহীন স্থল যান তৈরির জন্য আলাদা একটি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেছে। চীনে এ ধরনের কেন্দ্র এটিই প্রথম।
২০১৪ সালে মেজর জেনারেল ঝু হ্যাং বলেছিলেন, ভবিষ্যতের স্থল যুদ্ধে মনুষ্যবিহীন স্থলযান খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটা বুঝতে পেরে আমরা সে ধরনের যান তৈরিতে মনোযোগী হয়েছি।
চীনের পরাক্রমশালী সামরিক পরিকল্পনা ও নির্মাণ সামর্থ্যরে আলোকে বলা যায়, ওই প্রকল্পটি রিমোট কন্ট্রোলে ট্যাঙ্ক চালানোর দৃশ্যত তার প্রাথমিক লক্ষ্য হাসিল করেছে। গুগলের মতো বেসামরিক করপোরেশনগুলো চালকবিহীন প্রযুক্তির উন্নতি সাধন করলেও মনুষ্যবিহীন ট্যাঙ্ক পুরোপুরি সামরিক প্রয়োজন পূরণ করবে। এগুলো ড্রোনের মতোই শক্রর টার্গেট শনাক্ত করে সেগুলোর দিকে নিখুঁতভাবে গোলাবর্ষণ করতে পারবে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ডেনিস বøাসকো কাজ করছেন পিএলএর প্রধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে। তিনি বলেন, টাইপ-৫৯ ধরনের ট্যাঙ্ককে রিমোর্ট কন্ট্রোলে রূপান্তরিত করতে পারলে প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধক্ষেত্রে দারুণ কাজে দেবে। প্রশিক্ষণের সময় এটি ট্যাঙ্ক ও অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গার্নারদের জন্য চলমান টার্গেট হিসেবে কাজ করবে। তাছাড়া টার্গেট প্রাকটিসের ব্যবস্থাও করে দেবে।
তার মতে, এ ট্যাঙ্ক যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে, তাদের নজরদারি কার্যক্রম সমস্যায় পড়বে। তবে তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র হিসেবে একে ব্যবহার করার আগে এর আরো উন্নতি সাধন করতে হবে।
যা-ই হোক না কেন, রিমোর্ট-নিয়ন্ত্রিত ট্যাঙ্ক ভারতীয় প্রতিরক্ষা পরিকল্পনাবিদদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তারা গত দশক ধরে চীন-ভারত সীমান্তে প্রায় টি-৭২ ট্যাঙ্ক-এর দুটি ব্রিগেড মোতায়েন করেছে। ট্যাঙ্ক হলো ভারী, সাঁজোয়া যান। এটি চাকায় না চলে নিজের ট্র্যাকে চলাচল করে। এতে থাকা চালক, গানার, রেডিও অপারেটর ও কমান্ডারকে রক্ষার জন্য স্টিলের বর্ম পরানো থাকে। যুদ্ধক্ষেত্রে তার দাপট অনেক বেশি। এটি দানবীয় অস্ত্র হিসেবেই পরিচিত।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ট্রাঙ্কের আবির্ভাব ঘটে। এর পর থেকে ট্যাঙ্ককে থামানোর জন্য রকেট-চালিত গ্রেনেড, ট্যাঙ্ক-বিধ্বংস নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র, অ্যাটাক্ট হেলিকপ্টার ইত্যাদি অনেক কিছু আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু তারপরও ট্যাঙ্ক যুদ্ধক্ষেত্রে রাজাই রয়ে গেছে।
আবার ট্যাঙ্কের গতি, তার ধ্বংস ক্ষমতা, সুরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। এখন চীন এক ধাপ এগিয়ে মনুষ্যবিহীন ট্যাঙ্ক বানিয়ে ফেলল।
পিএলএ হাজারে হাজারে মনুষ্যবিহীন ট্যাঙ্ক নামানোর ক্ষমতা রাখে। সিসিটিভিতে যেটি দেখা গেছে, তা টাইপ ৫৯ ধরনের। গত শতকের শেষ ভাগে এ ধরনের প্রায় ৫০০০ ট্যাঙ্ক সক্রিয় ছিল। পিএলএ এগুলোর বদলে আরো আধুনিক টাইপ ৬৯ ও টাইপ ৭৯ নামাচ্ছে।
ইংরেজিভাষী চীনা দৈনিক গেøাবাল টাইমস ট্যাঙ্ক অ্যান্ড আমার্ড ভেহিক্যালের প্রধান সম্পাদক লিউ কিঙশানের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, টাইপ ৫৯ ট্যাঙ্ক বহরটি এখনো রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে।
অবশ্য ভবিষ্যতের মনুষ্যবিহীন ট্যাঙ্ক টাইপ-৫৯ হওয়ার সম্ভাবনা কম। এর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এটি ভারী হওয়ায় এর গতি কম। এ ধরনের ট্যাঙ্কে এর ভেতরে থাকা লোকজনের সুরক্ষাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। দ্রæত চলার জন্য হালকা ট্যাঙ্ক ব্যবহার করা হয়। ভবিষ্যতের মনুষ্যবিহীন ট্যাঙ্কের তাই কম ওজনের হালকা সুরক্ষা থাকাই স্বাভাবিক হবে। তবে তাদের গুলিবর্ষণ ক্ষমতা তথা ধ্বংস করার সামর্থ্য থাকবে বেশি। আকাশ থেকে ড্রোন এবং স্থলভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে এসব ট্যাঙ্ক যুদ্ধক্ষেত্রে বিপুল পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
ভারতের ডিফেন্স আরঅ্যান্ডডি অর্গ্যানাইজেশন (ডিআরডিও) এখনো পরবর্তী প্রজন্মের মনুষ্যবাহী ট্যাঙ্কের দিকেই নজর দিয়ে আছে। পিএলএ অবশ্য অনেক দূরের দিকে তাকিয়ে আছে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।