বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবিতে ঘোষিত আজকের জনসভার অনুমতি না পাওয়ায় আবারও রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার তারিখ ঘোষণা করছে দলটি। আগামী ১৯ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার ঘোষণা করছে দলটি। এ ছাড়া আগামী ১৫ মার্চ চট্টগ্রাম, ২৪ মার্চ বরিশাল এবং ৩১ মার্চ রাজশাহীতে জনসভা করবে বলে জানিয়েছে বিএনপি।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমাদের জনসভার অনুমতি না দেওয়ায় আমরা তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানাই। জনসভা করতে না দেওয়ার জন্য আমরা কোনো প্রতিবাদ কর্মসূচি দেব না। আমরা ব্যতিক্রম কর্মসূচি দিচ্ছি। আমরা আবারও আগামী ১৯ মার্চ পুনরায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠানের ঘোষণা করছি। আমি আশা করছি, যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সভার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আর আমরা আশা করছি, সরকার সমাবেশ করতে আমাদের সহযোগিতা করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ঢালি, ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আজ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জনসভা অনুষ্ঠিত করতে আমরা সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম। এ উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও পুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করা হয়েছিল। জনসভা সফল করতে প্রচারপত্র বিলি থেকে শুরু করে ঢাকা মহানগর এবং বৃহত্তর ঢাকা জেলার নেতৃবৃন্দসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সাথে বৈঠক করা হয়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা দলীয় প্রধান কার্যালয়ের সামনে জনসভার জন্য উদ্যান কর্তৃপক্ষসহ পুলিশকে চিঠি দিয়ে অবহিত করি। কিন্তু বই মেলার দোহাই দিয়ে পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা দলীয় কার্যালয়ের সামনে কোথাও জনসভা করার অনুমতি দেয়নি। সে সময় মৌখিকভাবে তারা পরবর্তী মাস অর্থাৎ এই মার্চ মাসে জনসভা অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না বলে জানিয়েছিল।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গণবিচ্ছিন্ন সরকার জন-আতঙ্কে ভোগে। জনগণের বিপুল সমাগমের সম্ভাবনা থাকলে সরকার অজানা আশঙ্কায় বিপন্নবোধ করে। এই কারণে বিএনপির জনসভাকে বানচাল করতে সরকার ধারাবাহিক বাধা প্রদান অব্যাহত রেখেছে।
আওয়ামী লীগকে নাগরিক স্বাধীনতা হরণকারী সরকার হিসেবে অভিহিত করে দলটির মহাসচিব বলেন, 'সরকার বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে কদাচিৎ অনুমতি দিলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে সমাবেশস্থলে আক্রমণ চালিয়ে দলের নেতাকর্মীদেরকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে আটক করা হয়। যা বর্তমান দুঃশাসনের মধ্যেও এক ভয়ঙ্করতম কালো অধ্যায়।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্র মানে বিক্ষোভ-সমালোচনা। গণতন্ত্র মানে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষমতাসীন দলের একতরফা বলে যাওয়া নয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পাবলিক প্রপার্টি, এটি কোন ব্যক্তি, দল বা জোটের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করা সম্পত্তি নয়। সেখানে যদি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ মহাজোটের অন্যান্য দল সমাবেশ করতে অনুমতি পায়, তাহলে বিএনপিসহ বিরোধী দলকে জনসভা করতে না দেয়া ক্ষমতাসীনদের হুংকারসর্বস্ব রাজনীতিরই প্রতিফলন।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'তবুও আমরা সংঘাত এড়িয়ে গণতন্ত্রে স্বীকৃত বিরোধী দলের অধিকারগুলোকে প্রয়োগ করতে চাই। সভা-সমাবেশ বিরোধী দলের সার্বজনীন অধিকার। এটি কোনো বেআইনি কর্মসূচি নয়। আজকে কোনো কারণ ছাড়াই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে জনসভা করতে দেয়া হলো না। আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে কোনো কর্মসূচিতে না গিয়ে আগামী ১৯ মার্চ, সোমবার পুনরায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠানের ঘোষণা করছি। আমি আশা রাখি, যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।