পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ইসরাইলের সেনাবাহিনী মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী ইসলামি দেশ ইরানসহ মোট ‘ছয় শত্রু’র বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ আবিব কোচভি। দেশটির নৌ বাহিনীর স্নাতক শেষ হওয়া অফিসারদের উদ্দেশ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ইরান মধ্যপ্রাচ্যে অসংখ্য সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। এর জবাব দিতে ইসরাইলের সেনাবাহিনী প্রতিনিয়ত সংগঠিত হছে একইসঙ্গে ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। অনুষ্ঠানে ইরান ছাড়াও আরো পাঁচ শত্রæর সাথে যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা বলেছেন আবিব কোচভি। তবে তারা ঠিক কারা এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত বলেননি। অন্যদিকে ইসরাইলের নৌ বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল ইলি সারভিট বলেছেন, ইসরাইলের নৌ বাহিনী পানির উপর ও নিচ উভয় দিক দিয়েই অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে যুদ্ধ করতে সক্ষম। আমরা আমাদের বাহিনীকে এমনভাবে তৈরি করেছি যাতে দ্রুত অপারেশনে শক্তি বৃদ্ধি করে শত্রুকে মোকাবিলা করা যায়। সমপ্রতি ইসরাইলের সেনাবাহিনী সিরিয়া, লেবানন ও গাজা সীমান্তে তাদের মহড়া তীব্রতর করেছে। একইসঙ্গে মার্কিন সেনাবাহিনীর সাথে চলতি সপ্তাহে সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে। মহড়ায় ২৫০০ জন মার্কিন সৈন্য ও ২০০০ ইসরাইলি সৈন্য অংশ নিবে। এদিকে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে গত শুক্রবার মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতের নাম মোহাম্মদ জেইন আল জাবারি। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকে এ নিয়ে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ২৭ জনে দাঁড়ালো। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আল-জাজিরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার পর এর প্রতিবাদে রাজপথে নামে ফিলিস্তিনিরা। তৃতীয় ইন্তিফাদা বা সর্বাত্মক প্রতিরোধের ডাক দেয় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। শুক্রবারও ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ফিলিস্তিনিরা। ২৪ বছরের মোহাম্মদ জেইন আল জাবারিও এতে অংশ নেন। এক পর্যায়ে ইসরাইলি বাহিনীর ছোড়া একটি গুলি এসে তার বুকে বিদ্ধ হয়। হানাদার বাহিনীর বুলেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত জাবারিকে হেবরনের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নিহতের চাচা আবু নাসের আল জাজিরাকে জানান, তার ভাতিজা মানসিক প্রতিবন্ধী ছিল। এছাড়া তার উচারণেও সমস্যা ছিল। নিহত মোহাম্মদ জেইন আল জাবারি পেশায় একজন নির্মাণকর্মী ছিলেন। তার চার বছরের এক শিশু সন্তান রয়েছে। মানসিক দুর্বলতা বা অসু¯তা সত্তে¡ও হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জাবারি’র প্রতিরোধকে গর্বের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেন তার চাচা আবু নাসের। তিনি জানান, প্রায়ই ওই এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর অভিযান চলাকালে সবার আগে ঘটনা¯লে পৌঁছাতেন জাবারি। আবু নাসের বলেন, জাবারি ফিলিস্তিনকে ভালোবাসতো। ইসরাইলি সেনারা যখন শহরে প্রবেশ করতো তখন সে বসে থাকতো না। সে আমাদের পরিবারের গর্ব। তার মৃত্যু একটি অভিঘাত। পরিবারের জন্য এটা সহজ নয়। কিন্তু এটাই আল্লাহ তাআলা’র ইছা। ফলে আমাদের বিষণ্ণ হওয়ার কিছু নেই। ইসরাইলি বাহিনীর একজন মুখপাত্র আল-জাজিরাকে বলেন, সংঘাতের প্রধান উস্কানিদাতাকে গুলি করেছে সেনারা। নিহতের কাছে বোমা থাকারও দাবি করেছে ইসরাইলি বাহিনী। দখলদার বাহিনীর গুলিতে নিহত জাবারি’র জানাজায় অংশ নেন শত শত মানুষ। পশ্চিম তীরের হেবরনের রাস্তায় তার লাশ বহন করেন সতীর্থরা। স্বাধীনতার জন্য লড়াই অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন তারা। মিডল ইস্ট মনিটর, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।