Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডাকাত ও পুলিশের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কামাল ওরফে পিচ্ছি কামাল নামে এক ভয়ঙ্কর ডাকাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সার্বক্ষণিক আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে রায়পুরার আগানগর, বালুয়াকান্দীর হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু। একদিকে ডাকাতদের হুমকি, অন্যদিকে পুলিশী গ্রেফতারের ভয়ে গ্রামের মানুষ বাড়ীঘরে থাকতে সাহস পাচ্ছে না। গ্রামের অধিকাংশ যুবক গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। গত সপ্তাহাধিককাল ধরে গ্রামগুলোতে এ অবস্থা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি গ্রামের জামাল উদ্দিনের পুত্র কামাল ওরফে পিচ্ছি কামাল ছিল একজন দূর্ধর্ষ ডাকাত। তার বিরুদ্ধে নরসিংদী ও রায়পুরা থানায় বহুসংখ্যক ডাকাতির মামলা রয়েছে। কামাল বেপরোয়া হয়ে এলাকায় ডাকাতি, রাহাজানি ও চাঁদাবাজীতে লিপ্ত থাকতো। সে নিজ গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে দু’হাতে টাকা কামাতো আর এর বখরা পাঠাতো কথিত পুলিশের ঠিকানায়। বছরখানেক পূর্বে পিচ্ছি কামাল ও তার সতীর্থ ডাকাতরা আমিরগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে পুলিশকে মারধর করে। পক্ষান্তরে পিচ্ছি কামালের পরিবারের লোকজন জানায়, ফাঁড়ি পুলিশ কামালের নিকট থেকে ডাকাতির টাকার বখরা আনতে গেলে কথা কাটাকাটি জের হিসেবে পুলিশ কামালকে মারধর করে এবং কামালও পাল্টা পুলিশকে মারধর করে। এই ঘটনার পর পুলিশ কামালের বাড়ীঘর ভাঙচুর করে। এই ঘটনার পরও কামাল গ্রামেই ডাকাতি, রাহাজানি চালাতে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ কামালকে গ্রেফতার করেনি। গ্রামের মানুষ জানিয়েছে, কার সাহসে কামাল এত বেপরোয়া হয়ে ডাকাতি, রাহাজানি, চাঁদাবাজী করার সাহস পেতো। অভিযোগ অনুযায়ী পিচ্ছি কামাল আগানগর, বালুয়াকান্দী গ্রামের কমবেশী অর্ধশত মহিলাকে মারধর, অপমান, ও শ্লীলতাহানি ঘটিয়েছে। অনেক যুবতী মেয়েরা তার কু-নজর থেকে রেহাই পায়নি। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, সে মহিলাদের সামনে তার ছেলে-মেয়েদেরকে মারধর করতো। কামালের অত্যাচারের স্বীকার হয়েছে, রুবিনা, সোনিয়া, ইয়াছমিন, জোহরা, জাহানারা, রানু, জাহারা, শিউলি, মানছুরার মতো অসংখ্য মহিলারা। একইভাবে সজিব, জাকির, মোক্তার, রফিক, শরিফের মতো বহুসংখ্যক মানুষ কামালের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তার চাঁদাবাজী ও কু-প্রস্তাবে রাজী না হলে মহিলাদের ঘরে ঘরে আগুন পর্যন্ত লাগিয়ে দিতো। এই অবস্থায় গত ১ মার্চ রাতে কে বা কারা স্থানীয় আগানগর ঘাটে পিচ্ছি কামালকে কুপিয়ে হত্যা করে। এই হত্যাকান্ডের পর পুলিশ সাংবাদিকদেরকে জানায় যে, পিচ্ছি কামাল গণপিটুনীতে নিহত হয়েছে। কিন্তু এরপর দিনই পুলিশ গ্রামের নোয়াব মিয়া ও তার ছেলে রাজিব, সোহান ও বোরহানকে রায়পুরা থানায় ডেকে নিয়ে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ও নরসিংদী প্রেসক্লাব থেকে সাংবাদিকরা রায়পুরা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান। এ ব্যাপারে গ্রামের মানুষ জানিয়েছে, পুলিশ নিজেরাই জানিয়েছে পিচ্ছি কামাল গণপিটুনীতে নিহত হয়েছে। আবার বিনা তদন্তে কামালের স্ত্রী কল্পনা বেগম দায়েরকৃত হত্যা মামলা রুজু করেছে। এই মামলায় একদিকে পুলিশ গ্রামের মানুষকে হয়রানী করছে। অপরদিকে, নিহত ডাকাত কামালের সতীর্থ ডাকাতরা গ্রামের মানুষকে পাল্টা হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে। এই অবস্থায় গত ৮ দিন ধরে আগানগর, বালুয়াকান্দী গ্রামের মানুষ ব্যাপক পেরেশানীর মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।



 

Show all comments
  • Nabila Rahman ১০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০১ পিএম says : 0
    আইন,শৃংখলার উন্নয়ন কতদূরে --?
    Total Reply(0) Reply
  • joynal abdin ১০ মার্চ, ২০১৮, ৫:১৪ পিএম says : 0
    Deshe police ache bnp ke dhomon korar jonno r chordakatke rokkha korar jonno
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকাত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ