গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানী যাত্রাবাড়ী থান এলাকা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন রায়েরবাগ এলাকায় অভিজান পরিচালনা করে আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের মূল হোতাসহ ৩ ডাকাতকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তাররা প্রতি মাসে ২/৩টি ডাকাতি করত। ডাকাতির আগে স্থান নির্ধারণ করে বেশ কয়েকবার রেকি করে তারপর অস্ত্রশস্ত্র ও ডাকাতির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে তাদের নির্ধারিত স্থানে ডাকাতি করত বলে জানা যায়। বিদেশ থেকে আগত প্রবাসিদের বাড়িতে এবং বিভিন্ন মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করত। বিভিন্ন পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করত।
গ্রেপ্তাররা হলো- ইছা খাঁ ওরফে রাজ্জাক (৩৪), সৈয়দ জসিম উদ্দিন (৫০) ও নুর ইসলাম (২৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ১টি একনলা বন্দুক, ৩ রাউন্ড এ্যামুনেশন (গুলি), ১টি সুইচ গিয়ার চাকু, ২টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ৫টি মোবাইল ফোন ও নগদ- ২ হাজার ১৮০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার র্যাব-১০ এর নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ জানায় র্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন।
গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য যাদের মূল নেতৃত্বে রয়েছে ইছা খাঁ ওরফে রাজ্জাক। তারা গত এক মাসে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, চাঁদপুর, পাটুয়াখালী ও কুড়িগ্রামে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করেছে বলে জানায়।
অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন বলেন, তারা বড় বড় ব্যবসায়ীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করত এবং ডাকাতির কাজে কেউ বাধা দিলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয়াসহ অস্ত্র দিয়ে হত্যা ও গুরুতর জখম করত। গ্রেপ্তাররা প্রতি মাসে ২/৩টি ডাকাতি করত বলে স্বীকারোক্তি দেয়। ডাকাতির আগে স্থান নির্ধারণ করে বেশ কয়েকবার রেকি করে তারপর অস্ত্রশস্ত্র ও ডাকাতির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে তাদের নির্ধারিত স্থানে ডাকাতি করত বলে জানা যায়।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, গ্রেপ্তার ডাকাত সর্দার রাজ্জাক কিশোরগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। সে অন্য পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি চক্রের নেতৃত্ব প্রদান করে আসছিল। তার নির্দেশে উক্ত ডাকাত দলের সকল সদস্য একটি নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ করত।
তার নেতৃত্বে উক্ত ডাকাত চক্রটি উল্লেখিত এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিদেশ থেকে আগত প্রবাসিদের বাড়িতে এবং বিভিন্ন মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ মোট ৪টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার জসিম বরগুনা জেলার বাসিন্দা। সে অন্য পেশার আড়ালে ডাকাত চক্রটির তথ্য সংগ্রহকারী ও দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ মোট ৫টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও সে ২০১৩ সালের মগবাজারের চাঞ্চল্যকর বিদেশীর বাড়ীতে ডাকাতির সময় কেয়ারটেকার হত্যা মামলার হত্যাকারী বলে জানা যায়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার নুর ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার বাসিন্দা। সে অন্য পেশার আড়ালে রাজ্জাকের সাথে ডাকাতি চক্রের অন্যতম সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছিল। নুর ইসলামের আশ্রয়স্থলে ডাকাতির সমস্ত পরিকল্পনা করা হতো এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সকল অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি তার দায়িত্বে তাদের গোপন আস্তানায় রাখা হতো বলে জানা যায়।
তাদের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।