রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : ভেজাল ও নিম্নমানের লুব্রিকেন্ট অয়েলে কুমিল্লার বাজার সয়লাব। বিভিন্ন মোটরওয়ার্কসপ, হোন্ডা গ্যারেজ থেকে নামি দামি ব্র্যান্ডের লুব ওয়েলের খালি ক্যান সংগ্রহ করে তাতে ভেজাল লুব্রিকেন্ট ঢুকিয়ে বিশেষ কারিগরী পদ্ধতিতে একই রকমের মুখ লাগিয়ে বাজারজাত করছে। বর্তমানে কুমিল্লার বাজারে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের আমদানিকৃত সুপারভি এবং পদ্মা ওয়েল ডিপোর টোটাল লুব্রিকেন্ট ওয়েল নকল হয়ে বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগে কুমিল্লা শহরের শাসনগাছা ষ্টেশন রোডে টোটাল লুব্রিকেন্ট ওয়েলের দশ কার্টুন নকল ক্যান স্থানীয় ব্যবসায়িরা আটক করে। অন্যদিকে নগরীর পদুয়ার বাজারে সুপারভি লুব্রিকেন্ট ওয়েলে ভেজাল মিশিয়ে কমদামে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। এসব ভেজাল লুব ওয়েল ব্যবহারে গাড়ীর ইঞ্জিন, ব্রেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ভেজাল লুব ওয়েল তৈরি ও বাজারজাত করছে।
কেরোসিন, ডিজেল ও নিম্নমানের রিফাইনারি পুরনো মবিল, ভেজাল ক্যামিকেল মিশিয়ে তৈরি সুপারভি, টোটাল, মবিল, ক্যাষ্টরওয়েল, ওমেরা, অ্যাডভান্স, টিটানসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল লুব্রিকেন্ট ওয়েলে কুমিল্লার বাজারে ছেয়ে গেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের ওয়েল ডিপোর স্থানীয় মার্কেটিং কর্মকর্তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকা সত্তে¡ও কিছুই করার নেই অপারগতাও প্রকাশ করেছেন। একটি ওয়েল ডিপোর মার্কেটিং কর্মকর্তা বলেছেন, প্রশাসনিক বা আইনগতভাবে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা ছাড়া ভেজাল লুব্রিকেন্ট ব্যবসায়িদের ধরা সম্ভব নয়। তবে লুব্রিকেন্ট ওয়েল কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের সচেতন হওয়ার হওয়ার কথা বলেছেন মেঘনা পেট্রোলিয়ামের কুমিল্লার মার্কেটিং কর্মকর্তা মেহেদী। তিনি বলেন, ‘মেঘনা পেট্রোলিয়ামের আমদানীকৃত লুব্রিকেন্ট ওয়েল সুপারভি একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। শুনেছি এটির ক্যান হুবহু রেখে ভেতরে ভেজাল ওয়েল দিয়ে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের করার কিছু নেই। যারা সুপারভি চান তারা যেনো মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ডিলার থেকে ক্রয় করেন।’
এদিকে নগরীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারের পপুলার ব্র্যান্ড দুবাই থেকে আমদানীকৃত সুপারভি লুব ওয়েলের খালি ক্যান কেনার হিড়িক পড়েছে। ১ লিটার, ৫ লিটার ও ১৫ লিটারের খালি ক্যান বিভিন্ন মোটরওয়ার্কসপ, হোন্ডা গ্যারেজ থেকে অসাধু ব্যবসায়িদের সিন্ডিকেটের লোকজন কিনে নিচ্ছে। জানা গেছে লক্ষ্রীপুরে সাদা মবিল তৈরির একটি কারখানায় সংগ্রহকৃত সুপারভি’র খালি ক্যানে ভেজাল লুব্রিকেন্ট ওয়েল ঢুকিয়ে তা বাজারজাত করছে। সুপার ভি’র এসব ভেজাল ও নকল ক্যান দেখতে হুবহু আসল ক্যানের মতো। সাধারণ ক্রেতাদের পক্ষে আসল-নকল চেনার উপায় থাকে না। এসব নকল ক্যান আসল ক্যানের চেয়ে কিছুটা কম দামে বিক্রি করা হয়। যাতে ক্রেতার সন্দেহ না হয়। কুমিল্লা নগরীর পদুয়ার বাজার ও রেলষ্টেশন রোডের কয়েকটি দোকান ছাড়াও চাঁদপুর, নোয়াখালি, লক্ষ্রিপুর জেলায় সুপার ভি’র ভেজাল লুব্রিকেন্ট ওয়েল বিক্রি হয়ে থাকে।
এদিকে কয়েকদিন আগে শাসনগাছা রেলষ্টেশন এলাকায় পদ্মা ওয়েল ডিপোর টোটাল নামের লুব্রিকেন্ট ওয়েলের নকল দশ কার্টুন ক্যান স্থানীয় ব্যবসায়িরা আটক করে। কুমিল্লায় পদ্মার বিক্রয় ডিলার তাজুল ইসলাম জানান, ‘স্টেশন রোডে বিভিন্ন নামি দামি ব্র্যান্ডের লুব ওয়েল, ব্রক ওয়েল, মবিল ভেজাল ও নকলে ছেয়ে গেছে। এসব ভেজাল নকল লুব্রিকেন্ট ওয়েল ব্যবহারের ফলে গাড়ীর ইঞ্জিন দ্রুত সময়ের মধ্যে বিকল হচ্ছে। ভেজাল ব্রেক ওয়েলের কারণে ব্রেক সঠিকভাবে কাজ করে না। গাড়ী দুর্ঘটনায় পড়ছে। এঅঞ্চলে ভেজাল লুব্রিকেন্ট অয়েল ও ব্রেক ওয়েল তৈরি এবং বাজারজাতকরণে একটি শক্তিশালী অবৈধ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। আমরা এসব বিষয় জেলা বিপণন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি এবং ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার ব্যাপারে ভূমিকা রাখার কথা বলেছি।’ কুমিল্লা স্টেশন রোড ব্যবসায়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ জানান,‘আমরা পুরো বিষয়টি মনিটরিং করছি। এধরণের প্রত্যেক দোকানিকে সতর্ক করে দিয়েছি কোন ভেজাল নকল পন্য বিক্রি করা যাবেনা। ভেজাল নকল ইঞ্জিন ওয়েল, ব্রেক ওয়েলের জন্য লাখ টাকা, কোটি টাকার গাড়ী ক্ষতিগ্রস্ত হবে এটা মেনে মেনে নেয়া যায়না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।