Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ

| প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন : এবারের মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন করতে পারেননি কুমিল্লার চাষিরা। যে সময়ে আলু বীজ বপন করবে, তখন বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রকৃতি। অসময়ের বৃষ্টি আর প্রতিক‚ল আবহাওয়া পেয়ে বসে আলুচাষিদের। তারপরও কুমিল্লার চাষিরা অদম্য ইচ্ছেশক্তি নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিন হাজার ৪০০ হেক্টর কম জমিতে উন্নত-১২ জাতের আলুর আবাদ করেছেন। লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে না পারলেও আলুচাষিরা এবারের আবাদে খুশি। আবার যেসব চাষিরা প্রতিক‚ল আবহাওয়ার কারণে আলুর আবাদ করতে পারেনি তারা ওই জমিতে বোরো, শাকসবজি চাষ করে খুশি।   
কুমিল্লায় আলু চাষ সমৃদ্ধ এলাকায় ক্ষেত থেকে আলু তোলা হচ্ছে। এখনো মাটির নিচে লাখ লাখ টন আলু। কুমিল্লার ১৬ উপজেলায় ফেব্রæয়ারির শেষের দিকে শুরু হবে আলু তোলার মহোৎসব। এবারের মৌসুমে আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় আলু বাম্পার ফলন ধরা দিয়েছে জমিতে। গোটা জেলায় চলতি মৌসুমে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুক‚লে না থাকায় এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিন হাজার ৪০১ হেক্টর কমে ১১ হাজার ৪৭৯ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। বর্তমানে বাজারে নতুন আলু পাওয়া যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে কুমিল্লার ১৬ উপজেলার মধ্যে দাউদকান্দি, চান্দিনা, দেবিদ্বার, আদর্শ সদর, বুড়িচং, হোমনা, মেঘনা, তিতাস, মুরাদনগর, সদর দক্ষিণ, বরুড়ায় এবারে আলুর ব্যাপক ফলন হয়েছে। তবে ফলনের দিক থেকে দাউদকান্দি, চান্দিনা এগিয়ে রয়েছে। দাউদকান্দি, চান্দিনা, বুড়িচং, মুরাদনগর, আদর্শ সদর ও দেবিদ্বারের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে আলুচাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবারের মৌসুমে চাষিরা ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, গ্র্যানোলা, মালটা, হীরা, অরিগো, কোস্টারিকা, পেট্রোনিজ, বেলেনি, এস্টারিক্স, সাগিতা ও রোজগোল্ড জাতের আলুর আবাদ করেছেন। তবে হোয়াইট ডায়মন্ড ও কার্ডিনাল জাতের আলুর ব্যাপক ফলন হয়েছে। এ ছাড়াও অনেকে অন্যান্য জাতের আলুও আবাদ করেছে।
আলুচাষিরা জানান, অনুক‚ল আবহাওয়া না পেলেও  কৃষি উপকরণ সুলভ মূল্যে পাওয়ায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মেনে চলায় শীত ও ঘন কুয়াশেও আলু ক্ষেতের কোনোরকম ক্ষতি হয়নি। জমিতে সঠিক মাত্রার সুষম সার প্রয়োগ করায় আলুর আকার সুন্দর হয়েছে। আগামী এক দেড় সপ্তাহের মধ্যে আলু তোলার কাজ শুরু হবে। আগের চেয়ে আলু চাষে আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। এবারে যারা বৃষ্টির কারণে আলু বীজ বপন করতে পারেনি তারা জমিতে অন্য ফসল করে খুশি। আবহাওয়া পুরোদমে অনুক‚লে থাকলে এবারে আলুর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আরো পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হতো। এবারে দামের দিক থেকেও বেশ সাড়া মিলবে বলে চাষিরা প্রত্যাশা করছেন।   
কৃষি সম্প্রসারণ অফিস কুমিল্লার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দিলীপ কুমার অধিকারি জানান, ‘কুমিল্লার সবকটি উপজেলার মাটি আলু চাষের জন্য খুব উপযোগী। এবারে আবহাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও উৎপাদনের পরিমাণ কম নয়। ক্ষেতে আলু ভালো রাখতে প্রতিষেধক হিসেবে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে সুফল পেয়েছেন আলুচাষিরা। মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ সার, কীটনাশক প্রয়োগের ব্যাপারে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। কেবল আলু নয়, সবধরণের কৃষিপণ্য উৎপাদনে কৃষকরা যাতে তাদের প্রয়োজন মতো সহযোগিতা, পরামর্শ পেতে পারেন, এ জন্য জেলা উপজেলাপর্যায়ে কৃষি অফিসগুলো দায়িত্বশীল ভ‚মিকা রাখছে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ