Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সীতাকুন্ডে বিয়ের গাড়িতে হানা র‌্যাবের গুলিতে ডাকাত নিহত

| প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডেএকটি বিয়ের গাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির পর র‌্যাবের তাৎক্ষণিক অভিযানে গোলাগুলিতে সন্দেহভাজন এক ডাকাত নিহত হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) ভোরে চট্টগ্রাম মহানগরীর অদূরে সীতাকুন্ডে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড় কুমিরা ব্রিজে এ ঘটনা ঘটে। গোলাগুলির পর ঘটনাস্থল থেকে তিনটি অস্ত্র এবং লুট করা মালামাল উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।
র‌্যাব জানায়, ওই বিয়েরগাড়ীটি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমানবাজার থেকে লাকসাম যাচ্ছিল। আমান বাজারের তুলার কারখানার মালিক সামসুদ্দিনের মেয়ে নিপুর শ্বশুর বাড়ি লাকসামে বিয়ের মালামাল নিয়ে ওই গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন ২১ জন বিয়ে বাড়ীর যাত্রী। রাত সাড়ে তিনটায় গাড়িটি কুমিরা বাইপাস এলাকায় পৌঁছালে ৬ থেকে ৭ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত লোহার পাইপ মেরে গাড়িটি গতি রোধ করে। পরে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি করে।
ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে ফেরার সময় ছোট কুমিরায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে টহলরত র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের টহল দলকে দেখতে পেয়ে বরযাত্রীরা অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে র‌্যাব সদস্যরা দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে ডাকাতদের খুঁজতে থাকেন। ঐ সময় ডাকাত সদস্যরা জঙ্গলে বসে ডাকাতির মালামাল ভাগাভাগি করছিল। হঠাৎ ডাকাতরা র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে র‌্যাবকে লক্ষ করে এলোপাথারি গুলি বর্ষণ শুরু করে। আতœরক্ষা ও সরকারী জানমাল রক্ষার্থে র‌্যাবও পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। গুলি বিনিময়ে র‌্যাবের সাথে টিকতে না পেরে কিছু সময় পর উক্ত ডাকাত দল পিছু হটে পালিয়ে যায়।
এ সময় ঘটনাস্থলে একজন অজ্ঞাতনামা ডাকাতকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক আহত ব্যক্তিকে সীতাকুÐ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশী করে ডাকাতিকৃত মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও সেখান থেকে ১ বিদেশী পিস্তল, দুইটি ওয়ানশুটার গান, একটি ম্যাগাজিন, ১১ রাউন্ড গুলি ও কার্তুজ,সাত রাউন্ড খালি খোসা, তিনটি ছোরা, চারটি রামদা এবং দুইটি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে নিহত ডাকাতের মানিব্যাগে রক্ষিত কাগজের মাধ্যমে জানা যায় তার নাম মোঃ সেলিম। র‌্যাব সদস্যরা আহত বিয়েবাড়ির যাত্রীদের উদ্ধার করে পতেঙ্গা র‌্যাব সদরদপ্তরে নিয়ে যান। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক নিরাপদ রাখার চেষ্টায় র‌্যাবের ডাকাত বিরোধী অভিযানে ইতোপূর্বে বিগত ২০১৬ সালের ১৮এপ্রিল জেলার জোরারগঞ্জ থানা এলাকায় ডাকাতির সময় র‌্যাবের সাথে গুলি বিনিময়ে দুই ডাকাত, একই বছরের ২৯ অক্টোবর মীরসরাই এলাকায় তিনজন এবং ১৮ নভেম্বর ফেনী জেলার সদর থানার লালপোল এলাকায় দুই ডাকাতসহ মোট সাত ডাকাত নিহত হয়। সন্ত্রাসী ডাকাত প্রতিরোধের পাশাপাশি র‌্যাব অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এ ধারাবাহিকতায় গত এক বছর দেড় মাসে র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের অভিযানে সর্বমোট ৩৫৬ টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। একই সময়ে মোট ৪৯ টি ম্যাগাজিন এবং ৫ হাজার ৫৩৯ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গুলি ও কার্তুজ উদ্ধার হয়। পাশাপাশি ৭৫ লাখ সাত হাজার ৫৪২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩১ হাজার ৮৪৭ বোতল ফেন্সিডিল, ২ হাজার ৬৫২ বোতল বিদেশী মদ ও বিয়ার, পাঁচ লাখ ১২ হাজার ১৭৫ লিটার দেশীয় তৈরী মদ, ৭৪৩ কেজি ২৮০ গ্রাম গাঁজা, ৩৬০ গ্রাম হেরোইন এবং ৪০০ গ্রাম আফিম উদ্ধার করা হয়েছে।




 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকাত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ