পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের তুলাতলি গ্রাম সেনাসদস্য আর স্থানীয়দের দেওয়া আগুনে পুড়তে দেখেছিলেন সাবেক সেনাসদস্য নাজমুল ইসলাম। এক রোহিঙ্গা নারীকে ভালোবেসে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হন তিনি। গ্রামের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা নাজমুলকে হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে তাকে আটক করা হয়েছিলো। নাজমুলের দাবি হামলার দিন তাকে সঙ্গে করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গ্রামে হামলার পর বিকেলে স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা খাবার সেনাসদস্যরা খেয়েছিলেন বলে জানান তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তুলাতলির হামলার নৃশংসতা বর্ননা করেছেন তিনি।
গত আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রাখাইনে পূর্ব পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। জাতিসংঘ ওই সহিংসতাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ বলে মন্তব্য করে। সহিংসতার মুখে এখন পর্যন্ত সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্হা প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অভিযোগ গণহত্যা, সংঘবদ্ধ ধর্ষনের শিকার হয়েছেন তারা। তবে মিয়ানমারের দাবি বিদ্রোহীদের ওপর অভিযান চালিয়েছে তারা। রাখাইনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার ও অন্যান্য সূত্র ব্যবহার করে ওই প্রদেশে গণহত্যা ও গণকবর থাকার খবর তথ্য প্রকাশ করেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তুলাতলি গ্রামে জ্বালিয়ে দেওয়া ও গণহত্যা চালানোর তথ্য প্রথম প্রকাশ করে গার্ডিয়ান।
গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাজমুল বলেন, শেষ বিকেলে তুলাতলি থেকে যখন পোড়া গন্ধ ভেসে আসছে তখন এক সেনা কর্মকর্তা গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে ওঠেন, ‘আমাদের একশো প্লেট ভাত আর মুরগির মাংস দরকার। তাড়াতাড়ি নিয়ে আসো।’
গ্রামে নৃশংসতার পর নাজমুলের স্ত্রী তাদের পাঁচ সন্তানকে নিয়ে প্রতিবেশিদের সঙ্গে বাংলাদেশের পালিয়ে আসেন। ৬০ বছর বয়সী নাজমুলের দাবি কয়েক সপ্তাহ আটক রেখে কর্মকর্তারা তার ওপর আবারও বৌদ্ধ ধর্মে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। সহিংসতা চালানোর আগে কর্মকর্তারা তাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন বলেও জানান নাজমুল।
তিনি বলেন, ‘উফ, আমি সব দেখেছি। বসে বসে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না।’ নৃশংতা চালানোর পর ছাড়া পেয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন নাজমুল। পরে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগ দেন। গার্ডিয়ান দাবি করেছে, রাখাইনের গণহত্যার ওপর নতুন করে আলো ফেলেছে নাজমুলের এই সাক্ষাৎকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।