Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শৈত্য প্রবাহে স্থবির জনজীবন ছাতকে ১ জনের মৃত্যু

নওগাঁয় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড ৬.২

| প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। কয়েক দিনের তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। প্রচন্ড ঠান্ডাতেও জীবিকার তাগিদে তাদের ছুটে চলা থেমে নেই। জীবনের তাগিদে হাড় কাঁপানো শীতেও কাজ করতে হয় তাদের। এছাড়া ছিন্নমূল মানুষদের অনেকেরই শীতের পোশাকের অভাবে কাটে নির্ঘুম রাত। খুব ভোরে শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজে যেতেও সমস্যা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শ্রীমঙ্গল, কুমিল্লা, সীতাকুÐ, ফেনী ও হাতিয়া অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং তা উত্তর পশ্চিমাংশে দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
নাছিম উল আলম বরিশাল থেকে জানান, তাপমাত্রার পারদ হ্রাস-বৃদ্ধির মধ্যে গত দুদিন ধরে মধ্যরাত থেকে সকাল হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় সড়ক ও নৌযোগাযোগে বিপর্যয়ের পাশাপাশি সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলের জনজীবনে চরম দূর্ভোগ নেমে এসেছে। রাজধানী ও সন্নিহিত এলাকার সাথে দেশের দক্ষিন ও দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা চরম বিপর্যয়ের কবলে। রাজধানীর সাথে দক্ষিনাঞ্চলের যাত্রীবাহী নৌ যোগাযোগও ব্যহত হচ্ছে প্রতিদিন। গত দুদিন ধরে দেশের দুটি প্রধান ফেরি রুটসহ ৩টি ফেরি পথে যানবাহন পারাপার ৭Ñ৯ঘন্টা পর্যন্ত বন্ধ থাকায় দেড় থেকে দু হ্জাার যানবাহন আটকা পড়ছে পদ্মা ও তেতুলিয়ার পাড়ে। হাজার হাজার যাত্রীর সীমাহীন দূর্ভোগ এখন সব বর্ণনার বাইরে। লাগাতর শৈত্য প্রবাহের সাথে গত দুদিনের মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা বোরো বীজতলাসহ শীতকালীন শাক-সবজীর ক্ষতির আশংকা আরো একদফা বৃদ্ধি করল। জনস্বাস্থ্যের জন্যও বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতি নানা সংকট সৃষ্টি করছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে দক্ষিনাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি কুয়াশা অব্যাহত থাকার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি চলমান শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে পরবর্তি ৪৮ ঘন্টায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধির সুসংবাদও দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
গতকাল দ্বিতীয় দিনের মত দেশের প্রধান দুটি ফেরি রুটে চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হয় ঘন কুয়াশার কারনে। গতকাল রাত ৩টা থেকে সকাল পৌনে ১১টা পর্যন্ত মাওয়ায় সব ধরনের ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল ঘন কুয়াশায়। এ সময় প্রায় ৩০ টি যানবাহন নিয়ে ৩টি বিভিন্ন ধরনের ফেরি পদ্মায় আটকে ছিল। টানা ৯ ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় মাওয়া-শিমুলিয়া ও কবাঠালবাড়ী ঘাটে প্রায় ৮শ যানবাহন আটকা পড়ে। সকাল ১১টা থেকে পারাপার শুরু হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ লাইন অব্যাহত ছিল।
অপরদিকে আরিচার পাটুরিয়াÑদৌলতদিয়া রুটেও রাত ৩টা থেকে সকাল ১০টা কুড়ি মিনিট পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হয় ঘন কুয়াশার কারনে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যানবাহন পারাপার শুরু হলেও অনেক রাত পর্যন্ত দুটি ঘাটেই যানবাহনের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে।
গত মঙ্গলবার দক্ষিনাঞ্চলেও সা¤প্রতিককালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৫.২ ডিগ্রী কম। বৃহস্পতিবার তা পুনরায় ৭.৬ ডিগ্রীতে নেমে আসে। পদ্মা ও মেঘনার বুকসহ নদী অববাহিকা কুয়াশায় ঢেকে যাওয়ায় ঠান্ডার অনুভুতিও যথেষ্ঠ বৃদ্ধি পায়। গতকাল বরিশালে তাপমাত্রা আবার ৮.৩ ডিগ্রীতে বৃদ্ধি পেলেও সকাল প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ছিল। গত দুদিনের ঘন কুয়াশা জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি রবি ফসলেল ঝুকি যথেষ্ঠ বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরীতে আক্রান্ত হবার পাশাপাশি গোল আলুর উৎপাদন ব্যহত করবে। বুধবার মধ্যরাতের পর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় সড়ক ও নৌযোগাযোগে বিপর্যয় সৃষ্টি হয় দক্ষিনাঞ্চলে। বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় যানবাহন পারাপার শুরু হলেও পদ্মার দুপাড়ে প্রায় ৭শ যানবাহন আটকা পরে।
অপরদিকে পাটুরিয়াÑদৌলতদিয়া রুটে বৃহস্পতিবার সকাল ৪টা ১০মিনিট থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৬টি ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। এ সময় পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ঘাটে প্রায় সাড়ে ৭শ যানবাহন আটকা পরে। ঐদিন একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় চট্টগ্রামÑবরিশালÑমোংলাÑখুলনা মহাসড়কের ভোলা ও বরিশালের মধ্যবর্তি ভেদুরিয়াÑলাহারহাট ফেরি রুটেও। সকাল ৪টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ঐ রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। সকাল ৮টার পরে দু পাড়ে প্রায় দেড়শ যানবাহন অপেক্ষমান থাকার মধ্যেই বিআইডবিøউটসির দুটি ইউটিলিটি ফেরি যানবাহন পারাপার শুরু করে।
বুধ ও বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে সকাল প্রায় ১১টা পর্যন্ত ৩টি ফেরি সেক্টরে যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকায় দেশের দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় নেমে আসে। ঐসব রুটে বিপুল সংখ্যক যানবাহন ৭-৯ঘন্টা পর্যন্ত আটকে থাকায় চরম দূর্ভোগে পরেন হাজার-হাজার যাত্রী। পচনশীল পণ্যবাহী বিপুল সংখ্যক ট্রাক আটকা পড়ায় সময়মত তা গন্তব্যে পৌছতে পারেনি। গতকাল সকাল ১১টার দিকে মাওয়ায় ফেরি পারপার শুরু হলেও বিকেল পর্যন্ত কোন পণ্যবাহী যানবাহন পারপার সম্ভব হয়নি।
এদিকে ঘন কুয়াশায় গত দুদিন ধরে মধ্যরাত থেকে সকাল ১০-১১টা পর্যন্ত হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে বরিশালসহ দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের শতাধীক যাত্রীবাহী নৌযান মেঘনার উজান-ভাটিতে আটকা পড়ছে। বাগেরহাট-পিরোজপুর-ঝালকাঠী-বরিশাল-চাঁদপুর হয়ে ঢাকামুখি বিআইডবিøউটিসি’র রকেট স্টিমার ‘পিএস লেপচা’ গতকাল নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৮ঘন্টা পরে ঢাকায় পৌছে। গত বৃহস্পতিবার ‘এমভি বাঙালী’ জাহাজ সকাল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ঢাকার অদূরে ফতুল্লার কাছে আটকে ছিল। গতকালও এমভি বাঙালী ঢাকা থেকে মোড়েলগঞ্জে যাবার পথে প্রায় ৫ঘন্টা মাঝ নদীতে নোঙরে ছিল। বৃহস্পতিবার ঢাকাÑচাঁদপুরÑবরিশাল হয়ে খুলনামুখি রকেট স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’ সকাল ৬টায় বরিশাল থেকে যাত্রা করার আধ ঘন্টার মাথায় দপদপিয়ার কাছে কির্তনখোলা নদীতে নোঙর ফেলে ঘন কুয়াশার কারনে। প্রায় দুঘন্টা আটকে থাকার পরে নৌযানটি গন্তব্যে যাত্রা করে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় উত্তরবঙ্গের বদলগাছীতে ৬.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
দিনাজপুর অফিস জানায়, দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদফতর ও পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জুর রহমান জানান, ধীরে ধীরে তাপমাত্রা আরও বাড়বে।শুক্রবার বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। তবে তাপমাত্রা বাড়লেও শীতের অনুভূতি কমেনি।
সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় বোরো চাষের বীজতলা ও রবি শস্য ক্ষেত ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছে।
দিনাজপুর জেলা সার্জন ডা. মওলা বক্স চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, জেলার ১৩ উপজেলাতেই শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। যেসব শিশু ও বৃদ্ধ শ্বাসকষ্টজনিত এবং ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তাদের চিকিৎসা চলছে। জেলার প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল ইসলাম জানান, শীতার্ত মানুষের মধ্যে ৭৭ হাজার পিস কম্বল ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় গতকাল শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা সারাদিনই চুয়াডাঙ্গার আকাশ কুয়াশার চাদরে ঢাকা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, চুয়াডাঙ্গায় ঘন্টায় প্রায় ৯ কিলোমিটার গতি বেগে বাতাস বইছে এবং বাতাসের আর্দ্রতা রয়েছে ৯৮ শতাংশ। আকাশ ঘন কুয়াশায় ঢাকা। শুক্রবার সারা দিনেও সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যা থেকেই জেলার উপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছামাদুল হক জানান, শুক্রবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৮ ডিগ্রিসেলসিয়াস। গত কয়েকদিন ধরেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে জেলায়।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, দেশের সর্ব নিন্ম তাপমাত্রা শুক্রবার রেকর্ড করা হয় নওগাঁয় ৬.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এদিকে ভোর থেকে ঘন কুয়াশা আর তীব্র শৈত্য প্রবাহে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে । নিন্ম আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে ঠেকেছে। বিশেষ করে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে রয়েছে সাধারণ মানুষ। শীত থেকে গবাদি পশুকে রক্ষায় চটের বস্তা দিয়ে ঢেকে রাখছে। একটু গরমের খোঁজে আগুন জ¦ালিয়ে শীত নিবারন করছে মানুষ জন। আরো দু একদিন শৈত্য প্রবাহ অব্যহত থাকবে বলে জানিয়েছে স্থানয়ি আবহাওয়া অফিস। কনকনে ঠান্ডা বাতাসের দাপটে মানুষ এখন কাহিল হয়ে পড়েছে। শিশু-বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশী দুভোর্গের মধ্যে পড়েছে। নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শীতজনিত সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার রোগে জেলা সদরসহ ১১টি উপজেলা হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু ও বৃদ্ধ। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র জানা যায় তীব্র শীত ও কুয়াশার শস্য ক্ষেতে ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, টানা শৈত্য প্রবাহে চরম দুর্ভোগে পড়েছে কুড়িগ্রামের মানুষজন। ঘন কুয়াশা, কনকনে ঠান্ডা ও উত্তরীয় হিমেল হাওয়া অব্যাহত থাকায় বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে পুরো জনপদ।
গতকাল শুক্রবার জেলার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম জেলার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৮.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের দেখা না মেলায় তাপমাত্রা নি¤œগামী হচ্ছে।
এদিকে গরম কাপড়ের চরম দুর্ভোগে পড়েছে নি¤œ আয়ের হতদরিদ্র মানুষেরা। শ্রমজীবি মানুষেরা কাজে যেতে না পাড়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। বিশেষ করে নদ-নদী তীরবর্তী এলাকায় ঠান্ডা বেশি অনুভুত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে রয়েছে চরাঞ্চলের মানুষেরা।
তাপমাত্রা নি¤œগামী থাকায় শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়া, ডায়রিরা, স্ট্রকসহ বিভিন্ন রোগে। ফলে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
সরকারীভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। জেলা প্রশাসনের ত্রান শাখা সূত্রে জানা গেছে ইতিমধ্যে জেলার ৯ উপজেলায় ৫৭ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীতে অব্যাহত শৈত্য প্রবাহ আর উত্তরের হিমেল বাতাসে জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। কনকনে ঠান্ডায় লোকজন ঘরের বাহিরে বের হতে পারছে না। সারাদিন ঘন কুয়াশায় আছন্ন হয়ে থাকছে পথ-ঘাট। গত দু’দিন ধরে জেলার কোথাও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। শীত বস্ত্রের অভাবে শীতার্ত মানুষজন দিনভর খড়কুটে জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশী বেকায়দায় পড়েছে বয়স্ক ও শিশুরা। সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিস জানায় শুক্রবার নীলফামারীতে ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
ছাতক (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, ছাতকের পলীতে হাওরের বোরো জমিতে ধানের চারা রোপন করতে গিয়ে শীতের তীব্রতায় আব্দুল মনাফ (৬০) নামের এক কৃষকের মৃত্যুর হয়েছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের চাউলী হাওরে বোরো ধানের চারা রোপন করছিলেন তিনি। বিকেলে ঠান্ডাজনিত কারনে আব্দুল মনাফের হাত-পা অবশ হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে।
পীরগাছা (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রংপুরের পীরগাছায় শীতে বিপর্যস্ত মানুষ পুরাতন কাপড়ের দোকানে ছুটছে। শীত মোকাবেলায় গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছে ছিন্নমূল ও মধ্যবৃত্ত মানুষ।
উপজেলা গেট, রেলস্টেশন ও বাজারের একাধিক এলাকায় পুরাতন গরম কাপড়ের পসরা নিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা। এসব দোকানে গরম কাপড় ক্রয়ের জন্য নিম্নবৃত্তের পাশাপাশি মধ্যবৃত্তদেরও ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। অল্পদামে গরম কাপড়ের জন্য দোকানগুলোতে মহিলাদেরও ভিড় লেগেই আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাউজুল কবির বলেন, পর্যাক্রমে হতদরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ