২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
আলঝেইমার’স ডিজিজ। অনেক সময় শুধু আলঝেইমার’স বলা হয়। রোগটিতে স্মৃতিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অসুখটি আস্তে আস্তে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যেতে থাকে। আক্রান্ত রোগীর বিভিন্ন উপসর্গ থাকে। উপসর্গগুলো কিন্তু একেকজনের একেকরকম হয়। অর্থাৎ এক রোগীর উপসর্গেও সঙ্গে অন্যজনের উপসর্গগুলো পরিপূর্ণভাবে মেলে না। তবে কিছু সাধারণ উপসর্গ রয়েছে যা প্রায় সবারই দেখা যায়। এসব উপসর্গ দেখে বোঝা যায় ব্যক্তিটি আলঝেইমার’স ডিজিজে আক্রান্ত।
আলঝেইমার’স ডিজিজ কেন হয় বিজ্ঞানীরা এখনও সবকিছু বের করতে পারেনি। তবে জীনের সম্পর্কের কথা তারা জানতে পেরেছেন। বিভিন্ন দায়ী জীনও তারা বের করেছেন। মাথায় আঘাত, হতাশা এবং উচ্চ রক্তচাপের সাথে চিকিৎসকরা রোগটির সম্পর্ক পেয়েছেন। তবে এমন কোন ওষুধ কেউ বের করতে পারেন নি যেটা এই রোগ হওয়া প্রতিরোধ করবে।
আলঝেইমার’স ডিজিজে আক্রান্ত রোগী খুব স¤প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে রাখতে পারে না। রোগটির শেষ দিকে এমন হয় যে রোগী খাবার খেয়েছে কিনা সেটাও ভুলে যান। তারিখ মনে রাখতে পারেন না। গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ভুলে যান। আগে যে কাজটি করতে কম সময় লাগত, আক্রান্ত হওয়ার পর অনেক সময় বেশি লাগে সেই কাজ করতে। রোগটিতে আক্রান্ত হলে পরিচিতজনদের নাম বা চেহারা তাদের মনে থাকে না। ফলে ভুল নামে ডাকতে থাকেন। দৈনন্দিন কাজ-কর্ম করতে তাদের বিভিন্ন সমস্যা হয়। পরিচিত জায়গা অনেক সময় রোগীর কাছে অপরিচিত মনে হতে থাকে। একটি জিনিস রাখার নির্দিষ্ট স্থানে অন্য একটি জিনিস রাখতে দেখা যায়। এরপর অনেকসময় রোগী বিভিন্ন জিনিস হারিয়ে ফেলে এবং পরে খুঁজে পায় না। চশমা, কলম,লাঠি এসব নিয়ে প্রায়ই সমস্যা হয়। আলঝেইমার’সে আক্রান্ত অনেক রোগীর দৃষ্টিবিভ্রম হয়ে থাকে। আয়নাতে নিজের ছবি দেখেও অনেক সময় চিনতে পারেন না। ভেবে বসেন এটা অন্য কারো ছবি। পড়তে সমস্যা হয় । রঙ চিনতেও অনেক সময় সমস্যা হয়ে থাকে। রোগী একই বাক্যের পুনরাবৃত্তিও কওে, একই কথা বারবার বলেন। অনেক সময় আলোচনা সঠিকভাবে চালাতে পারেন না। মানুষজনকে ভুল নামে ডাকতে থাকেন। পরিচিতজন কে ভুল নামে সম্বোধন করেন। আলঝেইমার’স ডিজিজে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং বিচার বিবেচনা বুদ্ধি লোপ পেতে পারে। রোগী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে পারেন না। রোগাক্রান্ত ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ কমিয়ে দেন। শখ, খেলাধুলা ইত্যাদি বিনোদনমুলক বিষয়গুলো থেকে বিমুখ হতে থাকেন আস্তে আস্তে।
বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই ব্রেইন ইমেজিং এবং আচরণ ও বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ নির্ণয় করা হয়। যদিও ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার বিভিন্ন কারণ আছে তাই আরও কিছু পরীক্ষা করা হয় অন্য কোন অসুখ আছে কিনা তা জানার জন্যে।
কিছু ওষুধ আছে যেগুলো আলঝেইমার’স ডিজিজে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে আছে রিভাসটিগমিন, গ্যালানটামিন, ডনেপেজিল এবং মেমানটিন। এসব ওষুধ ব্যবহারে যে খুব ভাল কাজ হয় তাও নয়। তবে চিকিৎসকরা দিয়ে থাকেন। এসব চিকিৎসা প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য ভাল কাজ করে । শেষ পর্যায়ে তেমন কোন কাজই করেনা। যেহেতু আলঝেইমার রোগটি একটি জটিল রোগ এবং এর কোনো নির্দিষ্ট কারণও ঠিকমতো উদ্ধার করা যায়নি তাই এর চিকিৎসা পদ্ধতিও জটিল । এমন কোনো ম্যাজিক নেই যার মাধ্যমে রোগটি ভাল হয়ে যাবে। চিকিৎসকরা আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য কিছু খাদ্যাভাস ও মানসিক ব্যায়ামের নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। এসবের মাধ্যমে রোগটি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।