২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
আমাদের মাথার ভেতরে পিটুইটারি গ্রন্থির অবস্থান। পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নানা রকম হরমোন বের হয়ে বিভিন্ন কাজ করে। এই গ্রন্থির দুটি অংশ। সামনের ও পেছনের। সাইমন্ড্স ডিজিজে পিটুইটারি গ্রন্থির সামনের অংশ নষ্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন কারণে এই অসুখ হয়।
কারণ :
সাধারণত বাচ্চচা হবার সময় বা বাচ্চা হবার পর অত্যধিক রক্তপাতের জন্য সাইমন্ড্স ডিজিজ হয়। রক্তপাতের জন্য পিটুইটারি গ্রন্থির ধমনীর মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে এই অবস্থা হয়। এছাড়া বিভিন্ন আঘাত, সিফিলিস এবং যক্ষ¥ার ফলেও পিটুইটারি গ্রন্থির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ব্রেনের টিউমার বা সিস্ট হলেও মস্তিস্কের ভেতরে পিটুইটারি গ্রন্থি নষ্ট হয়। তবে সাইমন্ড্স ডিজিজের বিভিন্ন কারণ থাকলেও প্রধান কারণ প্রসবের আগে, প্রসবের সময়ে বা প্রসবের পরে অতিরিক্ত রক্ষক্ষরণ।
উপসর্গ :
সাইন্ড্স ডিজিজে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। যেমনÑ
০১। রোগী অত্যন্ত দুর্বল হয়ে যায়।
০২। কোনো কাজে উৎসাহ থাকে না।
০৩। কোনো কোনো রোগী অনেক কৃশ হয়ে যায়।
০৪। ঋতুস্রাব বহুদিন বন্ধ থাকে।
০৫। যৌন কেশ এবং বগল অঞ্চলের কেশ উঠে যায়।
০৬। যৌন মিলনে অনীহা দেখা দেয়।
০৭। সর্বশরীরে ব্যথা হতে পারে।
০৮। হাঁটুর জোড়াতে ব্যথা হয়।
০৯। রোগী রক্তাল্পতায় ভোগে এবং প্রস্রাবে সামান্য এলবুমিন থাকতে পারে।
রোগ নির্ণয় :
রোগীর ইতিহাস এবং কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই অসুখ নির্ণয় করা হয়। রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ে এবং রক্তাল্পতা থাকে। ইসিজিতে কিছু পরিবর্তন পাওয়া যায়। সামনের পিটুইটারি থেকে যেসব হরমোন বের হয় তা নির্ণয় করলে সহজেই অসুখটি ধরা যায়। এনোরেক্সিয়া নার্ভোসা এবং মিক্সিডিমা অসুখের সাথে সাইমন্ডস ডিজিজের মিল আছে। সঠিক ইতিহাস এবং পরীক্ষা করলে নিশ্চিতভাবেই অসুখটি ডায়াগনসিস করা যায়।
চিকিৎসা :
সাইমন্ড্স ডিজিজের প্রকৃত চিকিৎসা হচ্ছে সামনের পিটুইটারির যে হরমোন থাকে তা বাইরে থেকে প্রয়োগ করা। কারণে এ অসুখে সামনের পিটুইটারি নষ্ট হয়। কিন্তু বাস্তবে এটি বেশ কঠিন। বর্তমানে কর্টিসোল, প্রেডনিসোলন ব্যবহার হচ্ছে। এলট্রক্সিন ট্যাবলেট আগে থেকেই চালু আছে। টেসটোসটেরন ব্যবহারে উপসর্গের উন্নতি হয়। এইচসিজি এবং প্রোজেস্টেরন ইনজেকসন সাইমন্ডস ডিজিজে দেয়া হয়। ব্রেনে বা পিটুইটারিতে টিউমার হলে তার চিকিৎসা করলে সাইমন্ডস ডিজিজ অসুখটি ভালো হয়।
সাইমন্ডস ডিজিজ বিরল হলেও হয়ে থাকে। গর্ভকালীন সময়ে সাবধান থাকতে হবে। প্রসবের সময় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা উচিত। এই অসুখের বর্তমানে খুব ভালো চিকিৎসা নেই। আশা করা যায়, অদূর ভবিষ্যতে আরো উন্নতমানের চিকিৎসা আসবে।
ডা. মো. ফজলুল কবির পাভেল
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।