মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণার পর আফগানিস্তান সীমান্ত দিয়ে মার্কিন সেনাদের রসদ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নেশন এ খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রস্তাবটি নিয়ে কূটনীতিক এবং বেসামরিক ও সামরিক নেতাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। আমরা শিগগিরই একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানি কূটনীতিকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের বিপরীতে এটা একটা ভালো কৌশল। আমাদের এই একটি অস্ত্র আছে।’
যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান থেকে এসব পথ দিয়ে আফগানিস্তানে খাদ্য ও যন্ত্রপাতি আনা নেওয়া করে থাকে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানকে সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে পাকিস্তান বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। আর এরপর থেকে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো সরকারকে এ উদ্যোগ নিতে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। খবরে বলা হয়েছে, দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন কারণে যুক্তরাষ্ট্রও পাকিস্তানের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে নজর রাখছে।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে পাকিস্তান। এছাড়া পাকিস্তানকে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার সামরিক সহায়তা দেওয়ার ট্রাম্পের দাবি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দেশটি। ইসলামাবাদ বলছে, তারা নিজ দেশ ও বিশ্বের শান্তি বজায় রাখতে নিজের সম্পদ ব্যবহার করে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই করে আসছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস সাংবাদিকদের বলেন, পাকিস্তান স্থলপথে বা আকাশ পথে সরবরাহ পথ বন্ধ করার কোনও আভাস দেয়নি। তিনি দাবি করেন, ট্রাম্পের সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণার পরও আফগানিস্তানে সামরিক রসদ সরবরাহের জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।
ম্যাটিস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় প্রধান কমান্ডার জেনারেল যোশেফ ভোটেল পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে কয়েকদিন আগেই কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই ২০১১ সালে আফগানিস্তানে ন্যাটোর রসদ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল পাকিস্তান। ওই সময় বিমান হামলা চালিয়ে আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তখন যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়া, মধ্য এশিয়া ও ককেশাস অঞ্চলের আরও ব্যয়বহুল পথ ব্যবহার করতে হয়েছিল।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, রসদ সরবরাহের জন্য হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের আরও পথ রয়েছে। তবে খরচ ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে এটা সবচেয়ে ভাল। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে পথ বন্ধ করে দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র বিপাকে পড়েছিল। তাদের পক্ষে পথ পরিবর্তন করা মোটেও সহজ নয়।’ যুক্তরাষ্ট্রের ওই ঘোষণার পর পাকিস্তানের বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি ও তেহরিক-ই-ইনসাফ সরকারকে ওই পথ বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। নীতি-নির্ধারকদের ঘনিষ্ঠ জনরা জানিয়েছেন, ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতি আলোচনার জন্য শিগগিরই পার্লামেন্টের একটি যৌথ অধিবেশন ডাকা হবে। সেখানে জাতীয় অখন্ডতার জন্য সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব তাহমিনা জানজুয়া পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক দ্রুতই স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের পাকিস্তানবিরোধী টুইট ‘গ্রাহ্য করার মতো নয়’। ওয়াশিংটনের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখতে চায় ইসলামাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের দিকেও মনযোগ দিচ্ছে। হাক্কানি নেটওয়ার্ক পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সক্রিয় নয়। এমনকি পাকিস্তানে শত্রুরা আফগানিস্তানেই তাদের অবস্থান শক্তিশালী করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।