পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরো কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হবে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যে তারা ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে আরো পদক্ষেপ নেবে। সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তান আরো বেশি সহযোগিতা করবে- এমনটাই দেখতে চায় তারা। গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স এ কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য এবং আমরা জানি যে, তারা (পাকিস্তান) সন্ত্রাস বন্ধ করতে আরো কাজ করতে পারে এবং আমরা চাই তারা এটি করুক। আমি মনে করি আপনারা আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ এবং এ সম্পর্কে বিস্তারিত দেখতে পাবেন। পাকিস্তানি নেতারা দাবি করেছেন, আঞ্চলিকভাবে মার্কিন পরাজয়ের জন্য পাকিস্তান বলির পাঁঠায় পরিণত হয়েছে। সা¤প্রতিক এ ঘটনাকে পাকিস্তান-মার্কিন সম্পর্ক যে তলানিতে ঠেকেছে তার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন পাকিস্তানি নেতা ও বিশ্লেষকরা। এদিকে, মঙ্গলবার পাকিস্তানকে আক্রমণ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত টুইটের পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাল্টা টুইটে বলা হয়েছে, এটি ‘সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্য’ এবং বিষয়টিকে আরো বিতর্কিত করা হয়েছে। এর আগে সোমবার সকালে বছরের প্রথম দিন ট্রাম্প এক টুইটে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও প্রতারণার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া ২০০২ সাল থকে এখন পর্যন্ত বোকার মতো নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক খাতে ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, ‘আমরা আফগানিস্তানে যাদের (সন্ত্রাসী) খুঁজছি, তাদের তারা (পাকিস্তান) নিরাপদ স্বর্গ দিয়েছে। খুব সামান্য সহযোগিতা করেছে। এমনটি আর চলতে পারে না!’ ওই টুইটের পর এর জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসি ও পাকিস্তানের অন্য নেতারা মঙ্গলবার বিবৃতি দেন। তাতে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে তারা ‘খুবই হতাশ’, যখন তারা মনে করেছিলেন নতুন প্রশাসনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ইতিবাচকভাবে আবর্তিত হচ্ছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, মার্কিন নেতৃত্বের পক্ষ থেকে আসা সা¤প্রতিক বিবৃতি ও পরিভাষা সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্য। তারা বিষয়টিকে আরো বিতর্কিত করেছে, দুই দেশের পারস্পরিক বিশ্বাসের ক্ষেত্রে অসহিষ্ণুভাবে আঘাত করেছে এবং পাকিস্তানি জাতির কয়েক দশকের অবদানকে নেতিবাচকভাবে বর্ণনা করেছে। পাকিস্তানি নেতারা আবেগপ্রবণ হয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবেন না। অসমর্থিত অভিযোগ সত্তে¡ও পাকিস্তান তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করবে না বলে জানানো হয়। পাকিস্তান ক্রমাগতই হাক্কানি নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত তালেবান সন্ত্রাসী ও নিরাপত্তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক অন্যদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। পাকিস্তানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ মাহমুদ কাসুরি বলেছেন, সমস্যা হলো ট্রাম্প এমনভাবে প্রতিদিন সকালে টুইট করা শুরু করেছেন, যেন এটা সাংবিধানিক প্রয়োজন। এটা কূটনীতি পরিচালনার পথ নয়। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমজাদ শোয়েব বলেছেন, মনে হচ্ছে, এই বিষয়ে এ সম্পর্ক আর ফিরে আসবে না। দুই দেশই অন্য পথ খুঁজতে পারে। মার্কিন নেতৃত্ব পাকিস্তানের অবদান স্বীকার করে না এবং তাদের ভাষা খুবই অপমানজনক ও লজ্জাজনক। তিনি আরো বলেন, ট্রাম্প বলেছেন আমাদের কিছুই করার নেই। এটি বিরক্তিকর। যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এবং হাডসন ইনস্টিটিউটের গবেষক হুসেইন হাক্কানি বলেন, ট্রাম্পের টুইট বিস্ময়কর নয়। গত কয়েক মাস ধরেই মার্কিন নেতৃত্ব ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে, তারা পাকিস্তানের আগের প্রশাসনের চেয়ে বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে কঠিন অবস্থান নেবে। পাকিস্তানের নিরব সমর্থন ছাড়াই আফগানিস্তানে তাদের যুদ্ধ করা সহজ হবে। গত আগস্টে ট্রাম্প শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তানকে প্রতিশ্রæত হওয়ার ব্যাপারে আহŸান জানান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে। অথচ একই সময়ে তারা সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। তাদের নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। চলতি অর্থবছরে পাকিস্তানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস এ তথ্য জানায়। মার্কিন কর্মকর্তারা গত আগস্টে পাকিস্তানের ২৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল; সোমবার আরেক ঘোষণায় তা বহাল রাখার কথা জানিয়েছে। এনডিটিভি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।