Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

স্মিথে জয়বঞ্চিত ইংল্যান্ড

| প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : আবারো ইংল্যান্ডকে আটকে দিলেন স্টিভেন স্মিথ। আঠার মত পড়ে থাকলেন ক্রিজে। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় মন্থর শতকের সময় অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের পাশে ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। ওয়ার্নারের ফিফটি ইনিংসটাও ছিল তার ক্যারিয়ারের ধীরতম। দুজনেই ছিলেন ধীর-শান্ত কিন্তু অবিচল। দুইয়ে মিলে হারের শঙ্কা থেকে বেরিয়ে ড্রয়ের স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া।
আগেই অ্যাশেজ সিরিজের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যাওয়ায় মেলবোর্নের বক্সিং ডে টেস্ট পরিণত হয় ‘ডেড রাবার’এ। ইংল্যান্ডের কাছে এটি ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচ। সেটা শুধু ভালোভাবে সম্পন্নই করেনি রুট বাহিনী, মাঠও ছেড়েছে উন্নত শীরে। সিডনিতে পঞ্চম ও শেষ টেস্টে হারলেও আর যাই হোক ‘ধবলধোলাই’ তকমাটা অন্তঃত পেতে হবে না রুট বাহিনীকে।
শেষ দিনটা অজিরা শুরু করেছিল ২ উইকেটে ২০৩ রান নিয়ে। তখনও তারা ৬১ রানে পিছিয়ে। শুরুতেই সফরকারীরা কয়েকটি উইকেট তুলে নিতে পারলে হয়ত ম্যাচর গল্প ভিন্ন হতে পারত। কিন্তু স্মিথ-ওয়ার্নারের ধৈর্যশীল ব্যাটিং তা হতে দেয়নি। শেষ পর্যন্ত এই জুটি বিচ্ছিন্ন করেন অনিয়মিত বোলার জো রুট। তার অফ-স্পিনে ইনফিল্ডে ক্যাচ দেন ওয়ার্নার। এর পর সারা দিনে কেবল একটি উইকেট নিতে পরে ইংলিশ বোলাররা।
দুই অধিনায়ক যখন ড্র মেনে হ্যান্ডশেক করেন অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ৪ উইকেটে ২৬৩। তার মানে টেস্টের পুরো একটি দিনে তাদের সংগ্রহ মাত্র ১৬০ রান, রান রেট ২.৪২। নিকট ২৪ বছরে ঘরের মাঠে এমন মন্থরতম ব্যাটিং এই প্রথম করল অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত ২৭৫ বল খেলে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন স্মিথ, যেখানে চারের মার মাত্র ছয়টি। সেঞ্চুরির দেখা পান ২৫৯তম বলে এসে। এরপরও কিন্তু এটি তার মন্থরতম শতক নয়, এমনকি চলতি সিরিজেও না। গ্যাবায় তিন অঙ্ক স্পর্শ করতে আরো দুটি বল বেশি খেলেছিলেন স্মিথ। ঐদিনও তার অপরাজিত ১৪১ রানের কারণেই ম্যাচ হারে ইংল্যান্ড। এই জায়গাতেই স্মিথ অন্যদের চেয়ে আলাদা। দল যত চাপে তার ব্যাটও যেন ততই শানিত।
মাঝ সেশনটা ছোট মার্শ ‘মিচেল’কে নিয়ে কাটিয়ে দেন স্মিথ, যে সময়ে উইকেট নেয়াটা সবচেয়ে জরুরী ছিল ইংল্যান্ডের। মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগে স্টুয়ার্ড ব্রডের বলে উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন শন মার্শ। বাকি সময়টা স্মিথের সঙ্গে পার করে দেন ছোট মার্শ। টি-২০ স্পেশাল্টি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অভিষেক হওয়া মিচেলের অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংসটাও ১৬৬ বলের। এর আগে ওয়ার্নারও ছিলেন সেই সাবধানী। অর্ধশতকে যেতে সময় নেন ১৬১ বল। যা তার ক্যারিয়ারে মন্থরতম ফিফটি। রুটের বলে ক্যাচ দেয়ার সময় তার সংগ্রহ ছিল ২২৭ বলে ৮৬। দিনের প্রথম ১৪ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ২০ রান। এ থেকেই বোঝা যায় ম্যাচ বাঁচাতে কতটা সাবধানী হতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। যা ইংল্যান্ডকে করে হতাশ। যে হতাশার মূল কারিগর একজন স্মিথ।
বছরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েই ২০১৭ সাল শেষ করলেন স্মিথ। ৭৬.৭৬ গড়ে এ বছর তার মোট রান ১৩০৫। রিকি পন্টিংয়ের পর এদিন দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয় হিসেবে তুলে নেন বছরের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। সব মিলে এটি তার ১১০ ইনিংসের টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৩তম শতক। তার চেয়ে কম সময়ে ২৩ সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন মাত্র দুইজন ব্যাটসম্যানÑ ডন ব্রাডম্যান (৫৯) ও সুনিল গাভাস্কার (১০৯)।
এরপরও এই ম্যাচটা বিশেষভাবে মনে থাকবে কিন্তু স্মিথের কারণে নয়। আদ্যন্ত ব্যাটিয়ের রেকর্ড গড়ে যে তার আগেই ম্যাচের সব আলো নিজের দিকে টেনে নেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক (২৪৪*)।
অস্ট্রেলিয়া : ৩২৭ ও ১২৪.২ ওভারে ২৬৩/৪ ডি. (ব্যানক্রফট ২৭, ওয়ার্নার ৮৬, খাজা ১১, স্মিথ ১০২, শন মার্শ ৪, মিচেল মার্শ ২৯*; অ্যান্ডারসন ১/৪৬, ব্রড ১/৪৪, ওকস ১/৬২, কারান ০/৫৩, মঈন ০/৩২, মালান ০/২১, রুট ১/১)।
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস : ৪৯১
ফল : ড্র। সিরিজ : ৫ ম্যাচে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া।
ম্যাচ সেরা : অ্যালেস্টার কুক (ইংল্যান্ড)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইংল্যান্ড


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ