Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফসলি জমিতে ইটভাটায় কৃষকের সর্বনাশ

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাভারের বংশী নদীর কুল ঘেষে ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের সীতিপাল্লী ও আড়ালিয়া এলাকায় ফসলি জমি নষ্ট করে দুটি অবৈধ ইট ভাড়া গড়ে উঠেছে। এই দুটি ইট ভাটার কারনে ওই দুই এলাকার প্রায় কয়েক’শ কৃষক বিপাকে পড়েছেন। তাদের জমিতে থাকা ফসলও নষ্ট হয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসী অবিলম্বে উপজেলা প্রশাসনকে এই দুই ইট ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ধামরাই উপজেলা প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। এই ইট ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোও হচ্ছে। ফলে এলাকার পরিবেশ হুমকির মধ্যে পড়েছে। শিশুসহ মধ্যবয়সীরা নানা রোগে ভুগছেন ।
এলাকাবাসী জানায়, ধামরাইর কুল্লা ইউনিয়নের সীতিপাল্লী এলাকায় স্থানীয় জয়পুড়া এলাকার ভুমিদস্যু সোলায়মান ইসলাম ৩০ বিঘা ফসলি জমি নষ্ট করে একটি ইট ভাটা নির্মাণ করেছেন। তিনি তার ইট ভাটার নাম দিয়েছেন এম এম ব্রিকস। এই ইট ভাটার কারনে ওই এলাকার আশেপাশের জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে জমিতে ফসল করায় তারা লোকসানের মুখে পড়বেন বলে অভিযোগ করেছেন। এই ইট ভাটায় আবাদি জমির উপরিভাগ থেকে মাটি সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ কারণে দিন দিন কৃষিজমি উর্বরতা হারাচ্ছে, উৎপাদনও হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া ওই ইট ভাটার নেই কোন পরিবেশের ছাড়পত্র। ভাটার সামনে স্তুপ করে রাখা হয়েছে জ্বালানি কাঠ। এদিকে ওই ইট ভাটার পরিবেশের ছারপত্র না থাকায় গত কয়েকদিন আগে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলো। কিন্তু পুনরায় তারা নির্মান কাজ শুরু করেছে।
এবিষয়ে এম এম ব্রিক্সের মালিক সোলায়মান ইসলাম বলেন, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তিনি পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই ইট ভাটা নির্মাণ করেছেন। এছাড়া টাকা হলে কত পরিবেশের ছাড়পত্র পাওয়া যায় বলে তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে আড়ালিয়া এলাকায় ১৩ বিঘা ফসলি জমি নষ্ট করে মদিনা বিক্সস দিয়েছেন মুনছুর আলী নামের এক ব্যক্তি। তার ইট ভাটার চার পাশে সরিষার ক্ষেতসহ বিভিন্ন জমিতে চাষ করা ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার ইট ভাটার নেই কোন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। এই ইট ভাটাতেও গাছ পোড়ানো হচ্ছে। এই ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় এলাকার বাতাস দূষিত হয়ে পড়ছে। ফলে মানুষ চর্ম শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এলাকার গাছপালাও মরে যাচ্ছে। এছাড়া এই ইট ভাটায় শিশুরাও ঝুকি নিয়ে কাজ করছে।
এবিষয়ে মদিনা বিক্সস এর মালিক মুনছুর আলী বলেন এখন ইট ভাটা করলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগে না। তাছাড়া আমার ইট ভাটা চললেই হলো ইট ভাটার আশেপাশে কার ফসল নষ্ট হলে আমার করার কিছু নেই। কৃষকের যদি ফসল নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তারাও জমি নষ্ট করে ইট ভাটা বানাউক।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন বলেন, অবৈধ ইটভাটা গুলোর ধোঁয়ায় এলাকায় শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে ও নারা রোগে তারা ভুগছে।
এবিষয়ে ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তারপরও কতিপয় মহল আইন অমান্য করে ফসলি কৃষি জমিতে ইটভাটা করছে। এটা প্রতিহত করতে না পারলে কৃষিতে বিপর্যয় নেমে আসবে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।
যেকোনো সময় ধামরাইয়ে অবৈধ ইট ভাটা গুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে জানিয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবুল কালাম।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফসলি

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
১৪ জানুয়ারি, ২০২১
২০ অক্টোবর, ২০২০
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
১০ মার্চ, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ