Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফসলি জমিতে বিষবৃক্ষ

কক্সবাজার ও বান্দরবানে তামাকের দখলে ৫০ হাজার হেক্টর জমি

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

‘বিষবৃক্ষ’ তামাক চাষ দখল করে নিয়েছে কক্সবাজার ও বান্দরবানের ১০ উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ আবাদী জমি। এসব জমিতে ফসলের বদলে আবাদ হচ্ছে বিষবৃক্ষ তামাক। কক্সবাজারের চকরিয়া, রামু, কক্সবাজার সদর। বান্দরবান জেলার বান্দরবান সদর, রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা ও আলিকদমসহ ১০ উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার একর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। এই বিষবৃক্ষ চাষে অবৈধভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, সরকারের ইউরিয়াসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার। অথচ সরকার এই সার বরাদ্দ দিয়েছে কৃষকদের শাক-সবজি উৎপাদনের জন্য।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আবাদী জমিসহ স্কুলমাঠ, বসতবাড়ির আঙ্গিনা, নদীর দু’পাড়, সমতল ভূমি, পাহাড়ি ঢালু জমি ও সরকারী রিজার্ভ এলাকায় সর্বত্র এখন তামাক চাষের দখলে। তামাক চাষে কোম্পানি কর্তৃক প্রণোদনার ব্যবস্থা থাকায় দিনে দিনে বাড়ছে মরণ চাষ তামাকের চাষাবাদ।
জানা যায়, ১৯৮৪ সাল থেকে বহুজাতিক তামাক কোম্পানি বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি বাংলাদেশ এর হাত ধরে লামা উপজেলায় তামাক চাষ শুরু হয়। তারপরে একে একে আলফা টোব্যাকো, রাঙ্গুনিয়া টোব্যাকো, ঢাকা টোব্যাকো (বর্তমানে ইউনাইটেড ঢাকা টোবাকো), আবুল খায়ের, নিউ. এজ টোব্যাকো তামাক চাষ শুরু করে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, তামাক বিক্রয়ের নিশ্চয়তা থাকায় ও অল্প সময়ে লাভবান হতে অন্যান্য ফসলের চাষাবাদ ছেড়ে তামাক চাষে ঝুঁকে পড়ছেন এ অঞ্চলের অধিকাংশ চাষিরা। তবে বর্তমানে চাষিরা অনেকক্ষেত্রে লোকসানে পড়লেও শুধুমাত্র বিক্রয়ের নিশ্চয়তা থাকায় তামাক ঝুঁকছেন বলে জানা গেছে।

লামা পৌরসভার সাবেক বিলছড়ি এলাকার তামাক চাষি মো. কামাল, মংএচিং মার্মা, সিলেটি পাড়ার তামাক চাষি নীল মিয়া, জহির ইসলাম সহ অনেকে দুই যুগ ধরে তামাক চাষে জড়িত। তাদের অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোন বছর লাভ হলে পরের বছর আবার লোকসান। এক বছর তামাকের দাম ভালো থাকলে পরের বছর নানা অজুহাতে তামাকের বাজারে ধস নামে। তামাকে লোকসানে পড়ে অনেক চাষি ঋণে জর্জরিত হয়ে এলাকা ছেড়েছে। যত লাভের স্বপ্ন দেখে আমরা তামাক চাষে এসেছি বাস্তবতা তত সুখময় নয়। শুধুমাত্র বিক্রয়ের নিশ্চয়তা থাকায় মানুষ তামাক চাষে ঝুঁকছে। ধানসহ অন্যান্য ফসলে বিক্রয়ের নিশ্চয়তা থাকলে আমরা তামাক ছেড়ে ফসল চাষাবাদে ঝুঁকতাম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফসলি জমি

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ