মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহকে হত্যার মধ্য দিয়ে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ নতুন মাত্রা পেয়েছে। এর ফলে সেখানকার পরিস্থিতি আরো অবনতি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশটির ভবিষ্যত কি হবে এ সম্পর্কে সন্দিহান সবাই। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সউদী আরব নেতৃত্বাধীন জোটের লড়াই আরো তীব্র হবে বলে মনে করেন তারা। এমন পূর্বাভাস দিয়েছে অনলাইন আল-জাজিরা। এতে বলা হয়, তিন দশকের বেশি দেশ চালানো প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহকে গত সোমবার হত্যা করে হুতি বিদ্রোহীরা। এই হুতিরা এক সময় তার সঙ্গে জোট করেছিল। তাদেরকে প্রেসিডেন্ট সালেহ মিত্র হিসেবে দেখতেন। কিন্তু তারাই যখন সালেহকে হত্যা করে তখন তার নিজের বাহিনীর কাছে এটা একটি বড় আঘাত বলে মনে করছেন ইয়েমেন পোস্টের প্রধান সম্পাদক হাকিম আল মাসমারি। ইয়েমেনের রাজধানী সানা থেকে তিনি আল জাজিরাকে বলেন, সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে তার বাড়িতে দুদিন অবরুদ্ধ করে রেখেছিল হুতিরা। গত সোমবার তার বাড়িতে তারা হামলা চালায়। এ সময় সালেহ পালিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় বসানো ছিল হুতিদের চেকপোস্ট। তাতে তার গাড়ি ধরা পড়ে। এ সময় বেশ কিছু সিনিয়র সহযোগী সহ তাকে হত্যা করে হুতিরা। হাকিম আল মাসমারি বলেন, সালেহকে হত্যা করায় ইয়েমেনে সামরিক অভিযান তীব্র করতে পারে সউদী আরব নেতৃত্বাধীন জোট। স¤প্রতি হুতিদের সঙ্গে সালেহর জোট ভেঙে যাওয়ার পর সউদী আরবের এই জোট রাজধানী সানায় হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বিমান হামলা জোরালো করেছে। টার্গেট করা হচ্ছে পরিত্যক্ত বিমানবন্দর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক কর্মসুচির পরিচালক জোস্ট হিলটারম্যান বলেছেন, হুতি ও সালেহ জোট ভেঙে যাওয়ার ফলে সঙ্কট বাড়বে। প্রতিশোধের মাত্রা বাড়বে। আলি আবদুল্লাহ সালেহকে হত্যার পর তার দল আরো ভেঙে যেতে পারে। তাদের অনেকেই যোগ দিতে পারে হুতি-বিরোধী যোদ্ধাদের সঙ্গে। এ অবস্থায় সউদী আরব নেতৃত্বাধীন জোটের জন্য বড় ধরনের একটি আঘাত হতে পারে। এদিকে ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহর হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে আবারও আলোচনায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। সংঘর্ষ আর বিভেদে পর্যুদস্ত রক্তাক্ত ইয়েমেন। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ৮৬০০ লোক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর সউদী জোটের অবরোধে দুর্ভিক্ষ কবলিত আছে কয়েক লাখ মানুষ। এক নজরে দেখা নেয়া যাক- কার কার মধ্যে এই সংঘর্ষ হচ্ছে, কেন এই সংঘর্ষ? কেনই বা নিহত হলেন। খবরে বলা হয়, লড়াইয়ের সূচনা ২০১১ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে বিরোধ থেকে। আর ২০১৫ সালের মার্চ থেকে গৃহযুদ্ধে চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ ইয়েমেন। হুতি বিদ্রোহীদের সউদী এবং পশ্চিমা সমর্থিত প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি ও তার সরকারকে হঠানোর মধ্য দিয়ে ইয়েমেনে সংঘর্ষ শুরু হয়। তবে মনসুর হাদি ও তার সরকার বাহিনী হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই আসছিল। সর্বশেষ হুতি বিদ্রোহীরা দেশটি দখল করে এবং নিজেদের সরকার প্রতিষ্ঠা করে। এতে যোগ দেয়, ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহর দল। এ দুই দলের সমন্বয়ে ইয়েমেনে কোয়ালিশন সরকার গড়ে ওঠে। কোয়ালিশন সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুতি বিদ্রোহীরা। কিন্তু অতি স¤প্রতি হুতিদের সঙ্গে সালেহ সমর্থকদের বিরোধ তৈরি হয়। ইয়েমেনের সানাতে হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে ৭দিন ধরে সালেহ পন্থীদের যুদ্ধ চলে আসছে বলে জানা গেছে। সালেহ সউদী জোটের সঙ্গে আঁতাত করছে, এমন সন্দেহে স¤প্রতি এই কোয়ালিশন সরকারে অস্থিরতা দেখা দেয়। এরইমধ্যে হুতি বিদ্রোহীরা সালেহকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি ইয়েমেনের কোয়ালিশন সরকারের ভেতর ষড়যন্ত্র করছে। এর দুই দিন পরই বোমা হামলায় নিজ বাড়িতে নিহত হন ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহ। এদিকে বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই সালেহকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করেছে হুতি বিদ্রোহীরা। সালেহ নিহত হওয়ার ঘটনাকে সউদী নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বিরুদ্ধে নিজেদের জয় বলে উল্লেখ করছে তারা। হুতি নিয়ন্ত্রিত টিভি নেটওয়ার্ক আল মাসিরাহর বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা খবরটি জানিয়েছে। গত সোমবার হুতিদের হামলায় নিহত হন সালেহ। প্রায় তিন বছর ধরে এ হুতিদের সঙ্গে জোট গড়ে সউদী নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন সালেহ ও তার সমর্থকরা। তবে ২ ডিসেম্বর সালেহ এক টেলিভিশন ভাষণে ইয়েমেনের উপর থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য সউদী জোটের প্রতি আহŸান জানান। আনুষ্ঠানিকভাবে হুতিদের সঙ্গে করা জোটও ভেঙে দেন তিনি। সউদী জোটের সঙ্গে সংলাপে বসার ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন সালেহ। একে সালেহর পক্ষ পরিবর্তন হিসেবে উল্লেখ করে হুতিরা। সানায় শুরু হয় হুতি ও সালেহ সমর্থকদের সংঘর্ষ। কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষ চলার পর গত সোমবার নিহত হন সালেহ। সালেহর নাম উল্লেখ না করে মালিক বলেছেন, তিনি সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সউদী জোটের যোগাযোগের কথা জানতেন। এ ব্যাপারে সালেহকে বেশ কয়েকবার সতর্কও করা হয়েছিল। মালিক দাবি করেন, হুতিদের বিরুদ্ধে সালেহ সমর্থকদের উত্থান ইয়েমেনকে হুমকিতে ঠেলে দিয়েছিল, কিন্তু তিন দিনেই তা ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। তিনি জানান, আনসার আল্লাহ নামে পরিচিত হুথি দলটি দেশের প্রজাতন্ত্রের ব্যবস্থা বজায় রাখবে এবং সালেহর দল জেনারেল পিপলস কংগ্রেসের প্রতি তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হবে না। মালিক বলেন, জেনারেল পিপলস কংগ্রেস (জিপিসি) দলটির সঙ্গে কিংবা এর সদস্যদের সঙ্গে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। বিবিসি, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।