পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিল পরিস্থিতির অবসান হয়নি। সউদী আরব তার আটক করার কথা অস্বীকার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে যে সউদী আরব তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। তাই তাকে গৃহবন্দী করে রেখে তার বড় ভাই বাহাকে তার স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে হারিরি রবিবার বলেছেন যে তিনি আটক নন ও মুক্ত রয়েছেন। খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন। প্রথমদিকে জল্পনাকল্পনা ছিল যে সউদী আরবে তার বিরাট পারিবারিক ব্যবসার জন্য হারিরিও এ অভিযানের লক্ষ্য ছিলেন। পরে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানান যে ইরানকে মোকাবেলার সউদী চেষ্টার অংশ হিসেবেই তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
হারিরির ঘনিষ্ঠ সূত্র বলেন, সউদীরা হারিরিকে গৃহবন্দী করে রাখার পাশাপাশি হারিরির ফিউচার মুভমেন্ট দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে তার বড় ভাই বাহাকে তার স্থলাভিষিক্ত করে। ২০০৫ সালে তাদের পিতাকে হত্যার পর বাহা দলের শীর্ষপদের দায়িত্বে ছিলেন। কয়েক বছর ধরে দু’জনের খারাপ সম্পর্ক চলছে।
ফিউচার মুভমেন্ট দলের বিবৃতিতে বলা হয়, হারিরির প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। হারিরির সহযোগী ও স্বরষ্ট্রমন্ত্রী নোহাদ মাখনুক হারিরির বদলে বাহার দলের নেতা হওয়ার ধারণা নাকচ করে দেন।
পরিবারের সদস্য, সহযোগী ও রাজনীতিকরা যারা রিয়াদে হারিরির সাথে যোগাযোগ করেছেন তারা বলেন, তিনি আমি ভালো আছি এ কথার বাইরে আর কিছ বলতে ভয় পান। দেশে ফিরবেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তার সাধারণ জবাব- ইনশাল্লাহ।
এদিকে রবিবার রিয়াদে তার দলের সাথে সম্পৃক্ত টিভি চ্যানেল ফিউচার টিভির সাথে এক সাক্ষাতকারে হারিরি বলেন, তিনি মুক্ত রয়েছেন এবং খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন। সাংবাদিক পলা ইয়াকুবিয়ানকে তিনি বলেন, আমি নিজের হাতে পদত্যাগপত্র লিখেছি। এর মধ্য দিয়ে আমি একটি ইতিবাচক ধাক্কা দিতে চেয়েছি, নেতিবাচক কিছু নয়। পরে তিনি বলেন, দু’তিনদিনের মধ্যে আমি বৈরুতে ফিরব।
হারিরিকে নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয় ৩ নভেম্বর শুক্রবার থেকে। এদিন তিনি সউদী আরবে পৌঁছেন। তাকে বহনকারী বিমানটি যে মুহর্তে সউদী আরবে অবতরণ করে তখন থেকেই তার বিস্মিত হওয়ার পালা শুরু হয়।
হারিরির ঘনিষ্ঠ এবং লেবাননের শীর্ষ রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেন, বাদশাহ সালমানের সাথে সরকারীভাবে সাক্ষাত করতে আসা একজন প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য সচরাচর যা ঘটে, সেদিন তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য শাহজাদাগণ বা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সার বেঁধে দাঁড়িয়ে ছিলেন না।
তার ফোন জব্দ করা হয়। পরদিন সউদী সরকারী মালিকানাধীন একটি টিভি চ্যানেল থেকে সম্প্রচার করা এক বিবৃতিতে তিনি তার পদত্যাগের কথা ঘোষণা করতে বাধ্য হন।
এ ঘটনা লেবাননকে মধ্যপ্রাচ্যকে পাল্টে দেয়ার সউদী-ইরান লড়াইয়ের সম্মুখভাগে ঠেলে দিয়েছে।
সউদী আরব ও ইরানের মধ্যকার প্রতিদ্ব›িদ্বতা ইরাক , সিরিয়া ও ইয়েমেনে যুদ্ধে জ¦ালানি সরবরাহ করেছে। তারা সেখানে বিরোধী পক্ষগুলোকে সাহায্য করছে । সে প্রতিদ্ব›িদ্বতা এখন লেবাননকে অস্থিতিশীল করার ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। সউদী আরব অনেকদিন ধরেই লেবাননের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি ও ক্ষমতাসীন সরকারের শরিক দল ইরান সমর্থিত হেজবুল্লাহকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
হারিরির ঘনিষ্ঠ সূত্র বলেন, সউদী আরব সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরির পুত্র সাদ হারিরি যেহেতু হেজবুল্লাহর সাথে বিরোধে যেতে অনিচ্ছুক সে কারণে তাকে সরে যেতে হবে।
বিভিন্ন লেবাননী সূত্র বলছেন, সউদী আরব লেবাননের শীর্ষ সুন্নী রাজনীতিক হিসেবে সাদ হারিরির স্থানে তার বড় ভাই বাহাকে বসানোর আশা করছে। সূত্র জানান, বাহা এখন সউদী আরবে রয়েছেন বলে ধারণা। তবে হারিরির পরিবারের সদস্যদের সউদী আরব গিয়ে বাহার প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য বলা হলেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
হারিরির একটি সূত্র জানান, হারিরি বিমান সউদী আরবে অবতরণের সাথে সাথে তিনি বার্তা পান যে কিছু একটা গোলমাল হয়েছে। তার জন্য কেউ অপেক্ষমাণ ছিল না।
এদিকে সউদী আরব হারিরিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা ও আটক রাখাার কথা অস্বীকার করে বলেছে তিনি মুক্ত রয়েছেন। তার উপস্থিতির পর পরিস্থিতির ব্যাপারে বা তার ফোন নিয়ে নেয়া হয়েছে কিনা কিংবা রিয়াদ তার জায়গায় তার ভাইকে বসানোর পরিকল্পনা করেছে কিনা সে ব্যাপারে মন্তব্য করার জন্য সউদী কর্মকর্তাদের পাওয়া যায়নি।
পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে হারিরি প্রকাশ্যে কোনো কথা বলেননি বা তিনি কখন লেবানন ফিরবেন সে বিষয়ে কোনো অভাস দেননি।
জানা যায়, ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে হারিরিকে ফোনে বাদশাহ সালমানের সাথে সাক্ষাত করার কথা বলা হয়। পরদিন লেবানন ছাড়ার আগে তিনি কর্মকর্তাদের জানান যে সোমবার আলোচনা হবে। তিনি তার মিডিয়া টিমকে জানান যে সপ্তাহান্তে লোহিত সাগর তীরের মিসরীয় অবকাশ কেন্দ্র শারম আল শেখে তাদের দেখা হবে। সেখানে বিশ^ যুব ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির সাথে তার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
হারিরি ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, শনিবার সকালে হারিরি এক সউদী প্রটোকল কর্মকর্তার ফোন পান । তিনি বলেন, তাকে সউদী যুবরাজের সাথে একটি বৈঠকে যোগ দিতে হবে।
সূত্র জানান, পদত্যাগের ঘোষণা পাঠের জন্য টেলিভিশনে হাজির করার আগে ৪ ঘন্টা তিনি অপেক্ষা করেন। এক ঊর্ধ¦তন লেবাননী রাজনৈতিক সূত্রে বলা হয়, উপস্থিতির মুহূর্ত থেকে সউদীরা তাকে কোনো সম্মান দেয়নি।
হারিরি প্রায়ই সউদী আরব সফর করতেন। কয়েকদিন আগে এক সফরে তিনি সউদী আরব যান। তখন শাহজাদা মোহাম্মদ বিন সালমান তাকে ঊর্ধ¦তন গোয়েন্দা কর্মকর্তাগণ এবং উপসাগর বিষয় মন্ত্রী ও লেবানন সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সামের আল সোবহানের সাথে তার বৈঠকের ব্যবস্থা করেন।
হারিরি সেবার খুশি মনে ও স্বস্তি নিয়েই বৈরুত ফিরে আসেন বলে তার ভ্রমণ সঙ্গীদলের একটি সূত্র জানান। তিনি সহযোগীদের বলেন যে সউদী যুবরাজের কাছ থেকে লেবাননী সেনাবাহিনীর জন্য একটি সহায়তা প্যাকেজের প্রতিশ্রæতিসহ উৎসাহজনক কথা শুনেছেন।
হারিরির সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্রগণ জানান, হারিরি মনে করেছিলেন যে লেবাননের স্থিতিশীলতার স্বার্থে হেজবুল্লাহর সাথে একটি আঁতাত রক্ষার ব্যাপারে তিনি সউদী কর্মকর্তাদের বোঝাতে পেরেছেন।
লেবাননে হেজবুল্ল্াহর একটি শক্তিশালী মিলিশিয়া বাহিনী আছে। তারা বর্তমান সরকারের শরিক দল। লেবাননে গ্রæপটিকে দুর্বল করার সউদী চেষ্টা এক দশক আগে সুন্নী-শিয়া লড়াইয়ের সূচনা করে যার পরিণতিতে বৈরুত হেজবুল্লাহর দখলে চলে যায়।
সউদী আরবে অনুষ্ঠিত বৈঠক সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক সূত্র জানান, আমার ধারণা যে এ সব বৈঠকে হারিরি লেবাননে হেজবুল্ল্াহর সাথে কিভাবে চলতে হবে এবং সংঘাত লেবাননকে অস্থিতিশীল করবে বলে মত প্রকাশ করেছিলেন। আমার মনে হয়, তারা তার কথা পছন্দ করেনি।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন লেবাননের রাষ্ট্রদূতদের শুক্রবার বলেন, সউদী আরব হারিরিকে অপহরণ করেছে। ফ্রান্স শুক্রবার বলে যে তারা হারিরির চলাফেরার পূর্ণ স্বাধীনতা চায়।
হারিরি তার পদত্যাগ বিবৃতিতে বলেন, তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে তিনি আশংকা করছেন। তিনি এ অঞ্চলে গোলযোগ সৃষ্টির জন্য হেজবুল্লাহকে অভিযুক্ত করেন।
উল্লেখ্য, ৪ নভেম্বর সউদী আরবে দুর্নীতি দমন অভিযানে ২শ’রও বেশি লোককে গ্রেফতারের আগে হারিরির পদত্যাগের ঘোষণা প্রচারিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।