বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মোঃ আজিজুল হক টুকু, নাটোর জেলা সংবাদদাতা : নাটোরের চলনবিলে বিষটোপ-ফাঁদ ব্যবহার করে নির্বিচারে অতিথি পাখি শিকার করা হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে পাখি শিকারের ফলে লোকবলের অভাবে যথেষ্ট তদারকি করতে পারছে না প্রশাসন। বিষটোপ-বড়শিসহ নানা প্রকার ফাঁদ পেতে নির্বিচারে শিকার করা হচ্ছে এসব অতিথি পাখি। বাঁশের খুটি, কলা পাতা, খেজুর ডাল বেতের পাতার সাহায্যে বিশেষ উপায়ে তৈরি করা ৬ থেকে ৭ ফিট উঁচু ফাঁদ তৈরী করা হয়। আর এভাবেই প্রতিদিন শিকারিরা চলনবিলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে সারি সারি করে ফাঁদ পেতে এবং বিষটোপ-বড়শি দিয়ে সাদা বক, বালিহাঁস, মাছরাঙ্গা, সারস, পানকৌরীসহ নানা প্রকার অতিথি পাখি শিকার করছে। প্রতিদিন বিকাল থেকে গভির রাত পর্যন্ত আর ভোর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত চলে পাখি শিকার করার উৎসব।
চলনবিলে সরেজমিনে বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা গেল শিকারির জালে বন্ধি প্রায় দুই শতাধিক কোয়েল পাখি। প্রকাশ্যে হাটে নেওয়া হচ্ছে বিμির জন্য। রাতের শেষ প্রহর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত শিকার করা হয়েছে এসব পাখি। কেউ কেউ হাট-বাজারে ফেরি করেও বিμি করছে এসব পাখি। প্রতিটি বক ১২০টাকা থেকে ১৫০ টাকা, বালিহাঁস ৪০০-৫০০টাকা এবং চাকলা পাখি প্রতিটি ৪০ টাকায় বিμি করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পাখি শিকারি জানান, চলনবিলের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, সিংড়া, তাড়াশ-চাটমোহর উপজেলার বিভিনড়ব এলাকার ফসলের মাঠে মাঠে খুঁটি পুঁতে কলাপাতা, খেজুর ডাল দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা ফাঁদের সামনে একটি বাঁশের মগডালে রাখা হয় শিকারি বক। আকাশ দিয়ে বকের ঝাঁক নির্মিত ফাঁদের ওপর দিয়ে দল বেঁধে উড়ে যাওয়ার সময় শিকারি তার শিকারি বকটিকে নাচাতে থাকে। এক পর্যায়ে শিকারি বকটি ডাকাডাকি শুরু করলে উড়ন্ত বকের ঝাঁকটি বিশেষ ভাবে নির্মিত ঘরের (ফাঁদ) ওপর বসে। এসময় তারা ভেতর থেকে একে একে বকগুলোকে ধরে ধরে খাঁচায় ভরে। এছাড়া বিশেষ কায়দায় বিষটোপ দিয়েও এসব অতিথি পাখি শিকার করা হচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবী ‘এএসবি’ সংঘের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন- শুধু যে কোয়েল, পানকৌরি, বালি হাস, বক পাখি শিকারির ফাঁদে আটকা পড়ছে তা নয়। শীতের আগমনে এ অঞ্চলে ঝাঁকে ঝাঁকে আশ্রয় নেওয়া নানা প্রজাতির অতিথি পাখি শিকার করছে একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল। বছরের পর বছর ধরে এসব পন্থায় বক শিকার করে বাজারে বিμি হলেও পাখি শিকার রোধে কার্যত আইনী ব্যবস্থার প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে না। এতে μমশ বাড়ছে পাখি শিকার। গুরুদাসপুর বনবিভাগের কর্মকর্তা বলেন, পাখি শিকার রোধে অভিযান অব্যহত রয়েছে। কিন্তু শিকারিরা রাতে এবং ভোরে পাখি শিকার করছে। লোকবলের অভাবে সেসময় অভিযান চালানো সম্ভব হয়না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনির হোসেন এই প্রতিবেদক কে বলেন- পাখি শিকার জীব বৈচিত্রের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি। পাখি শিকার রোধে অভিযান চালানো হবে।
প্রতি বছর নভেম্বও মাসে শীতের আমেজ শুরু হলেই রঙ-বেঙয়ের অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত হতো চলনবিল। শীত মুওসুম জুড়েই দেখা যেত সাদা বক, বালিহাঁস, মাছরাঙ্গা, সারস, পানকৌরীসহ দেশি বিদেশি অসংখ্য পাখি। পানি নেমে যাওয়ায় চলনবিলের খাল-বিল, জলাশয়গুলোতে পুঁটি, খলসে, দারকিনাসহ ছোট ছোট মাছ খাওয়ার লোভেই নানা প্রজাতির অতিথি পাখি ঝাঁকে ঝঁকে আশ্রয় নেয় চলনবিলে। মাছ আছে, দিগন্তজোড়া বিল আছে, আসছে অতিথি পাখিও। কিন্তু একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী লের লোভের খোরাক হচ্ছে এসব অতিথি পাখি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।