Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গণতন্ত্র ও শরিয়াহ আইন একই সঙ্গে থাকতে পারে

মুনশী আবদুল মাননান | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এটা ঐতিহাসিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সত্য, বাংলাদেশের মানুষ রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সচেতন। তাদের রাজনৈতিক সচেতনতা অধিকার-চেতনাজাত। উপমহাদেশে সংবিধানিক রাজনীতি-চর্চার সেই প্রারম্ভকালেই তারা উপলব্ধি করে, রাজনৈতিক সচেতনতা ও রাজনৈতিক কর্মকাÐে সক্রিয় অংশগ্রহণই তাদের কাঙ্খিত অধিকারসমূহ সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুনিশ্চিত করতে পারে। গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতি তাদের সমর্থন ও অঙ্গীকার সেই থেকে এখন পর্যন্ত এইভাবে বহাল আছে। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী। ইসলামের প্রতি তাদের বিশ্বাস ও নিষ্ঠা বরাবরই অবিচল। ইসলামের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে তারা নারাজ। তাদের যে স্বতন্ত্র পরিচয় তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ইসলাম। তাদের স্বাধীনতা ও জাতীয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামে ইসলাম অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা ও অবদান রেখেছে। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা লাভ করে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের অংশ হিসাবে। সেকালের মুসলিম নেতৃবৃন্দ খুব ভালোভাবেই এটা অনুধাবন করেন, বাংলাদেশের অবহেলিত, উপেক্ষিত, বঞ্চিত, দরিদ্র ও পশ্চাদপদ মুসলমানদের জন্য যদি অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উন্নতি নিশ্চিত করতে হয় তবে তাদের হাতেই তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অর্পণ করতে হবে। স্বাধীনতা এক্ষেত্রে অনিবার্যভাবেই সহায়ক হবে। জাতিগত স্বাতন্ত্র্যের ভিত্তিতে উপমহাদেশ বিভক্ত করে স্বাধীনতা দেয়ার সিদ্ধান্ত যখন চূড়ান্ত হয় তখন ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলায় অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে তৎকালীন পূর্ববাংলা, আজকের বাংলাদেশের মানুষ মুসলিম লীগকে নিরংকুশভাবে বিজয়ী করে ভারতবর্ষে মুসলমানদের হোমল্যাÐ প্রতিষ্ঠার দাবিকে জোরদার করে। পরে যখন ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয় তখন পূর্ববাংলা পাকিস্তানের অংশে পড়ে। ঐতিহাসিকরা একমত, ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ যে রাজনৈতিক সচেতনতার পরিচয় দেয় এবং বিপুলভাবে মুসলিম লীগকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে সেটাই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকে অবশ্যম্ভবী করে দেয়।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এদেশের মানুষের স্বাভাবিক প্রত্যাশা ছিল, রাজনৈতিক ক্ষমতা তাদের হাতে আসবে এবং গণতন্ত্র-চর্চার নির্বাধ পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর কোনোটাই হয়নি। ক্ষমতা চলে যায় পশ্চিম পাকিস্তানের কায়েমী স্বার্থের ধ্বজাধারী সামরিক-বেসামরিক সিন্ডিকেটের হাতে। গণতন্ত্র রুদ্ধ হয়। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পালবদলের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ রহিত হয়। এরই প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের জন্য নতুন করে সংগ্রাম শুরু হয়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিার সেই সংগ্রামে স্বশাসন বা স্বায়ত্তশাসনের দাবি অনিবার্যভাবে সংযুক্ত হয়ে যায়। দীর্ঘ ও লাগাতার সংগ্রামের পটভূমিতে অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন। ওই নির্বাচনকে এদেশের মানুষ রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক একটি সুযোগ হিসাবে গ্রহণ করে। সে সুযোগের তারা সদ্বব্যবহার করে। আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বাংলাদেশে কেবল নয়, গোটা পাকিস্তানে সরকার গঠনের সক্ষমতা দিয়ে দেয়। পরের ইতিহাস সকলেরই জানা। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর অনেকেরই ধারণা হয়েছিল, যে-জাতিগত স্বাতন্ত্র্যের ভিত্তিতে পাকিস্তান হয়, সেই জাতিগত স্বাতন্ত্র্যতত্ত¡ ব্যর্থ হয়েছে। ধারণাটি যে সঠিক নয়, বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্ব তারই প্রমাণ বহন করে। এদেশের গরিষ্ঠসংখ্যক মানুষের মুসলমানিত্ব শেষ হয়ে যায়নি। তা আগের মতই সক্রিয় ও সতেজ রয়েছে। তাদের মুসলমান পরিচয়ই জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় স্বাতন্ত্র্যের মৌল উপাদান হিসাবে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। আবুল মনসুর আহমদ স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদর্শন সম্পর্কে একটু অন্যভাবে একটি বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন যা ইতিহাসসম্মত। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ‘দ্বিজাতিতত্ত’ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলে তিনি মনে করতেন না। তার মতে, ‘এক পাকিস্তানের জায়গায় দুই পাকিস্তান হইয়াছে। ভারত সরকার লাহোর প্রস্তাব বাস্তবায়নে আমাদের সাহায্য করিয়াছেন। ... লাহোর প্রস্তাবে ‘পাকিস্তান’ শব্দটার উল্লেখ নাই। শুধু মুসলিম মেজরিটি রাষ্ট্রের উল্লেখ আছে। তার মানে রাষ্ট্রের নাম পরে জনগণের দ্বারাই নির্ধারিত হওয়ার কথা। পশ্চিমা জনগণ তাদের রাষ্ট্র-নাম ‘পাকিস্তান’ রাখিয়াছে। আমরা পূরবীরা রাখিয়াছি ‘বাংলাদেশ’। এতে বিভ্রান্তির কোনো কারণ নাই।’
লেখাটির উপর্যুক্ত অংশটি প্রস্তাবনা বা ভূমিকা হিসাবে সাব্যস্ত করা যেতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে, কেন এই প্রস্তাবনা? পাঠকমাত্রেই লক্ষ্য করে থাকবেন, আমরা প্রস্তাবনা অংশে একথাটি সুনির্দিষ্ট করার চেষ্টা করেছি, বাংলাদেশের মানুষ অধিকার সচেতনায় ঋদ্ধ, যা তাদের রাজনৈতিক সচেতনতার ভিত্তিমূল। তারা রাজনৈতিক দিক দিয়ে সচেতন। তাদের গণতন্ত্রপ্রীতি প্রগাঢ় এবং ইসলামের প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাস প্রশ্নতীত। এগুলো তাদের বৈশিষ্ট্য ও স্বাতন্ত্র্যের পরিচায়ক।
সাম্প্রতিক এক জনমত জরিপে এই সত্যই ফের উঠে এসেছে। জরিপ পরিচালনাকারী গবেষকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র সমর্থন করে। তারা এও বিশ্বাস করে, কোরান-হাদিস ভিত্তিক শরিয়াহ আইন সুশাসন ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সহায়ক। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক রিজলভ নেটওয়ার্ক এই জরিপ পরিচালনা করে। এটি গবেষক ও গবেষনা প্রতিষ্ঠানের একটি বৈশ্বিক কনসোর্টিয়াম। সহিংস উগ্রবাদ নিয়ে ২৫টির বেশি দেশে তারা জরিপ পরিচালনা করে। গত ১২ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বাংলাদেশে এ জরিপ পরিচালিত হয়। দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে ৪০৬৭টি পরিবারে এ জরিপ পরিচালিত হয়। উত্তরদাতাদের ৫০ শতাংশ পুরুষ এবং ৫০ শতাংশ নারী। তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশের বসবাস গ্রামে। জরিপের ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ এবং ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী সৈয়দা সেলিনা আজিজের লেখা একটি নিবন্ধ রিজলভ নেটওয়ার্কের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
জরিপে দেখা গেছে, ৯১ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের একটি মর্মবস্তু হচ্ছে নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব। আর ৮০ শতাংশের বেশী মনে করে শরিয়াহ আইন মৌলিক সেবা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দুর্নীতিকে নিরূৎসাহিত করে। জরিপকারী গবেষকরা বলেছেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও শরিয়াহ আইন একই সঙ্গে থাকতে পারে। জরিপে আরো দেখা গেছে, ব্যক্তির সম্পতির অধিকারকে ৯২ শতাংশ উত্তরদাতা সমর্থন করে। ৯৬ শতাংশ উত্তরদাতা বিচারবিভাগের স্বাধীনতাকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। শারিয়াহ আইনের ব্যাপারে উত্তরদাতাদের বড় অংশই মনে করে, গুরুতর শারীরীক শাস্তির বিধান শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নের একটি মূল বিষয়। এই জরিপে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীরও মতামত নেয়া হয়। তারা শরিয়াহ আইন মেনে নেয়ার পক্ষে নয়; তবে অপরাধ কমাতে শারীরীক শাস্তির বিষয়কে তাদের একটি অংশ সমর্থন করে
বলার অপেক্ষা রাখেনা, বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতি এবং গণমানস, তার আকাঙ্খা ও প্রবণতা সম্পর্কে প্রকৃষ্ট ধারণা লাভের জন্য এ ধরনের জরিপ ও গবেষণার প্রয়োজন অনস্বীকার্য। রিজলভ নেটওয়ার্ক সেই প্রয়োজনীয় কাজটিই করেছে। গণতন্ত্র ও শরিয়াহ আইন সম্পর্কে অনেকের মনেই ভিন্নরকম ধারণা আছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে শরিয়াহ আইন যায় না বলে তাদের কেউ কেউ মনে করেন। কেউ কেউ আবার মনে করেন, শরিয়াহ আইন ও গণতন্ত্রের মধ্যে এক ধরনের সংঘর্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান। রিজলভ নেটওয়ার্কের জরিপে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে গণতন্ত্র ও শরিয়াহ আইন এক সঙ্গে চলতে পারে। এতে গণতন্ত্র বরং শক্তিশালী ও অধিকতর ফলপ্রসূ হতে পারে।
গণতন্ত্র এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উত্তম রাজনৈতিক ও সরকার ব্যবস্থা হিসাবে পরিগণিত। কিন্তুু গণতন্ত্রের কিছু নেতিবাচক দিকও আছে। গণতন্ত্রে ন্যায়বিচার, সুশাসন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার থাকলেও শাসকদের ক্ষমতালিপ্সা, দলবাজি, দুনীতিপ্রবণতার কারণে অনেক দেশে তা স্বেচ্ছাতন্ত্রে পরিণত হয়। তখন বিচারহীনতার সংস্কৃতি, দু:শাসন এবং আইন লংঘনের এক দু:সহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। দুর্নীতি ও অপরাধপ্রবণতা বিস্তার লাভ করে। শরিয়াহ আইন এক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রতিকারের উপায় হতে পারে। স্মরণ করা যেতে পারে, কয়েক বছর আগে পিউ রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে বাংলাদেশে অনুরূপ একটি জরিপ পরিচালিত হয়। তাতেও ৯২ শতাংশ মুসলমান শরিয়াহ আইনের পক্ষে তাদের সমর্থন জানায়। ওই জরিপে যারা ধর্মকর্ম নিয়মিত পালন করে না তাদেরও ৭৯ শতাংশ শরিয়াহ আইনের পক্ষে মত দেয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রহীনতা বিরাজমান। যে গণতন্ত্রের জন্য এদেশের মানুষ সেই ব্রিটিশ আমল থেকে সংগ্রাম করছে, এখনো তা তাদের কাছে অধরাই হয়ে আছে। একথা কে না জানে, আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র। অথচ সেই গণতন্ত্র শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হয়। এখনো বাধার মধ্যেই আছে।’ ৭৫ পরবর্তীকালে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাও বাধাগ্রস্ত হয় সেনাপ্রধান এরশাদের ক্ষমতা দখলের মধ্যদিয়ে। এরশাদের পতনের পর আবার গণতন্ত্রের পথচলা সূচিত হয়। তত্ত¡বধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো মোটামুটি গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে গণতন্ত্র এতদিনে আরো বিকশিত হতে পারতো। কিন্তু হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট ক্ষমতাসীন হয়ে তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনে সংবিধান সংশোধন করে। এরপর ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে যা হয় তাতে গণতন্ত্রের মূলে কুষ্ঠারাঘাত পড়ে। নির্বাচনের আগেই ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দি¦তায়, বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে যান। এধরনের গণতন্ত্র ও নির্বাচন বিশ্বে কেউ কখনো দেখেনি। গণতন্ত্রে ক্ষমতার মূল চাবিকাঠি থাকে জনগণের হাতে। ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা এই ক্ষমতা প্রদর্শন করে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে তারা সেই ভোটাধিকার হারিয়েছে। এই অধিকার তারা আবার পাবে ফিরে কবে, কেউ বলতে পারেনা। জনগণ কিন্তু যথেষ্ট সতর্ক ও সচেতন। তারা এখনো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে আস্থা রাখে। রিজলভ নেটওয়ার্কের জরিপে তাদের সেই আস্থার কথাই তারা জানিয়েছে। তবে বিনা সংগ্রামে তাদের সেই আস্থা ও বিশ্বাসের বাস্তবায়ন হবে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। প্রশ্ন হলো, এদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য আর কত সংগ্রাম করবে, আর কত ত্যাগ স্বীকার করবে, আর কত রক্ত ঝরাবে? ভবিষ্যতই এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারে।
দেশে সুশাসন, আইনের শাসন ও ন্যয়বিচারের যে আকাল তার বিরূপ প্রতিফলন সর্বত্র দৃশ্যমান। খুন, গুম, তুলে নেয়া, বিচারবর্হিভূত ও হেফাজতে মৃত্যু, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থ লুট ও পাচার ইত্যাদি এখন নিত্য ও সাধারণ ঘটনা এবং অনস্বীকার্য বাস্তবতা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ কিভাবে ঘটবে, কবে ঘটবে সে সম্পর্কে কারো কোনো ধারণা নেই। বিদ্যমান এই পটভূমিতে দেশের মানুষ মনে করছে শরিয়াহ আইনের বাস্তবায়ন কার্যকর সুফল দিতে পারে। জরিপ বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান গণতান্ত্রিক কর্মকাÐে সন্তুষ্ট হতে না পেরে মানুষ বিকল্প অনুসন্ধান করছে। বিকল্পের মধ্যে শরিয়াহ আইন তাদের পছন্দের শীর্ষে। বলাবাহুল্য, শরিয়াহ আইনের প্রতি মানুষের অনুরাগ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতাজাত। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, অশান্তি বিশৃংখলা, অনিরাপত্তা শোষণ, পীড়ন, অন্যায়, অবিচার নিরসনে শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। যারা রাজনীতি করেন, যারা সমাজ নিয়ে গবেষণা করেন, ভাবেন, চিন্তা করেন তাদের অনেক কিছু বুঝবার আছে এই গণ-অভিমত ও অভিপ্রায় থেকে।



 

Show all comments
  • ZAKIR ১৬ অক্টোবর, ২০১৭, ১১:১৪ এএম says : 0
    WHO CAN LEAD ON BEHALF GENERAL PEOPLE WHO WANT PEACE SECUIRITY THAT IS MAIN PROBLEM NOW
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গণতন্ত্র

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ