Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চমক দেখাতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ

১৮ অক্টোবর ইসির সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন সংস্কারের প্রস্তাবে আগামী ১৮ অক্টোবর চমক দেখাতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচনে প্রতিটি আসনে অংশ নেওয়া দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য একটি মাত্র পোস্টার ব্যবহারের প্রস্তাব দিতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে ১৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এদল টিবেশ কিছু লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরবে। ক্ষমতাসীনরা গুরুত্ব দেবে ডিজিটাল নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর। ইসি প্রয়োজন মনে করলে সেনাবাহিনী নামাতে পারবে, তবে তাদের বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার বিপক্ষে থাকবে দলটি। এ ছাড়া আরও ১১ দফা সুপারিশ এবং কয়েকটি প্রস্তাব দেয়া হবে। অবাধ-নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং শত্তিশালী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এসব প্রস্তাব দেয়া হবে বলে দলের একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী সংসদসহ অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে পোস্টার ছেপে থাকেন। নির্ধারিত আইন মেনে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার কাজও দলগুলোকে করতে হয়। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের বেশির ভাগ আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি আসনে সব প্রার্থীর জন্য একটিমাত্র পোস্টার করার পক্ষে বলে জানা গেছে। প্রস্তাবটি গৃহীত হলে সংসদের ৩০০ আসনের প্রতিটিতে একটি করে পোস্টার ছাপা হবে। সেখানে সব দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর নাম, ছবি ও প্রতীক থাকবে। নির্বাচন কমিশন পোস্টার ছাপানোর কাজ ও খরচ করবে। অর্থাৎ ৩০০ আসনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে ৩০০ ধরনের পোস্টার ছাপতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ে পোস্টার সাঁটানোর কাজ কমিশনের কাছে, নাকি দলের কাছে ন্যস্ত থাকবে, সে বিষয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে দলটিকে আরও একাধিক বৈঠকে বসতে হবে। তা ছাড়া পুরো প্রস্তাবের বিষয়ে দলের একাধিক নেতার আপত্তিও রয়েছে। একই সঙ্গে প্রস্তাবটি গ্রহণের ক্ষেত্রে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রশ্নে যে যে অবস্থা দরকার আমরা সেগুলোর পক্ষেই বলব। সংবিধানসম্মত উপায়ে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনকালীন সরকার থাকবে এবং নির্বাচন কমিশন নির্বাচন সম্পন্ন করবে, আমরা সেই মতামত তুলে ধরব।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, সব নির্বাচনেই পোস্টার লাগানো নিয়ে এক দলের সঙ্গে অন্য দলের সমর্থকদের মারামারি-হানাহানির ঘটনা ঘটে। অনেক প্রার্থী পোস্টার ছাপানো ও সাঁটানো শর্তাবলি মানেন না। এ কারণে নির্বাচনের মাঠপর্যায়ে শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। তা ছাড়া প্রার্থীদের অনেক টাকারও অপচয় হয়। সে জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে আসনওয়ারি একটিমাত্র পোস্টার ছাপানোর প্রস্তাব দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। সংলাপে আওয়ামী লীগ সংবিধানের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা, নির্বাচনী আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস না করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে সেনাবাহিনীর নাম আইনে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়কে গুরুত্ব দেবে। সব দলের জন্য একটিমাত্র পোস্টার ছাপানোর তত্ত¡টি এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনও দিয়েছিল। তাদের প্রস্তাবে নির্বাচনে সব দলের প্রচার-প্রচারণার দায়দায়িত্ব কমিশনের কাছে ন্যস্তকরার কথা বলা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত জনবল-সংকটের কারণে এবং যথেষ্ট প্রস্তুতি না থাকায় কমিশন তাদের এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে যায়। আওয়ামী লীগের এই প্রস্তাব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে সংসদসহ সব ধরনের নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণাসহ যাবতীয় ব্যয়ভার কমিশনকে বহন করতে হবে। শুধু পোস্টার নয়, দলীয় সভা-সমাবেশও এক মঞ্চে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। মাইকে প্রচার চালানো এবং রেডিও- টেলিভিশনসহ সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচারের ক্ষেত্রেও কর্তৃত্ব কমিশনের হাতে নিতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ