পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফয়সাল আমীন : বাড়ি ও জমি দখলের কাহিনী শুনালেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক আওয়ামী লীগ নেত্রী। চোখে পানি ছেড়ে তার কষ্টের কথা তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট। লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে দখলের প্রত্যক্ষ মদদদাতা হিসাবে অভিযুক্ত করলেন সিলেট-৩ আসনের এমপি মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কয়েছ কে। আবেগঝরা কথা মালা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বুঝাতে চাইলেন, এমপি কয়েছে লোভ ও স্বার্থের মোহে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে দলের এক কর্মীর মাতৃভূমির ঠিকানা গ্রাস করে নিতে চাচ্ছেন। এতে করে দেশে যাবার কোন ঠিকানা থাকবে না তার। গত বৃহস্পতিবার লিখিত আবেদন সহ প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে সম্পত্তি দখলের ঘটনা তুলে ধরেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেত্রী রাহেলা শেখ। এসময় তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদটিও ফিরে পেতে চান তিনি। নেত্রীর আদেশে সেই পদও তৎক্ষণাত ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। যুক্তরাজ্য লন্ডনের স্টেনর্ডে ‘সবো’ হোটেলে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার সময় দেখা করেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান শরিফ, সেক্রেটারী সৈয়দ ফারুক, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি রুম্মান আহমদ সহ অনেকে। দীর্ঘ ২০মিনিট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনিার সাথে কথা বলার সুযোগ লাভ করেন রাহেলা শেখ। ৩৩ পোলার স্ট্রীট লন্ডন এনডাবøুফোর ৪আরআর এ বসবাসরত রাহেলা শেখ এর গ্রামের বাড়ি সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জের ঘিলা-ছড়া ইউনিয়নের বাদেদেউলি গ্রামে। গ্রামের শেখ তাহির আলীর স্ত্রী তিনি। ৪০ বছর ধরে স্ব-পরিবারে লন্ডনে বসবাস করছেন রাহেলা শেখ। ২০১২ সালে ‘দেশে গিয়ে স্বামীর মৌরসী সম্পত্তিতে দু’তলা বাড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষচারা রোপন করে বাড়িটিকে শোভাষিত করেন তিনি। কিন্তু চলতি বছরের ১২জুলাই স্থানীয় এমপি মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কয়েছের প্রত্যক্ষ মদদে বাড়টি দখল করে নেয় তার সমর্থিত জামাত শিবিরের একটি দখলদার সন্ত্রাসী চক্র। তারা কেয়ারটেকার মুসলিম আলম এর উপর হামলা করে ঘরের তালা ভেঙ্গে দখল করে নেয় ঘরটি। রাহেলা শেখ প্রতিকারের আশায় পুলিশ সহ সংশ্লিষ্ট স্থানে সহযোগিতা চাইলেও তা পাননি। এরপর কথা বলেন স্থানীয় এমপির কয়েছের সাথে। এমপি তার কথা কর্ণপাত না করে, উল্টো দখলদারদের পক্ষ নিয়ে হুমকি ধমকি দেন তাকে। তারর্পও সহযোগিতার জন্য বারবার চেষ্টা করলেও এমপি তাকে সদত্তোর দেননি। অসহায় হয়ে পরবর্তীতে লন্ডন হাইকমিশনে আবেদন করেন। গত ০১ তারিখ লন্ডনে অবস্থানকালীন এক সংবর্ধনা সভায় বাংলাদেশ পুলিশ এর মহাপরিদর্শক শহিদুল ইসলামের সাথে দেখা করে ঘর ও জমি দখলের জন্য স্থানীয় এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েছ কে দায়ি করে ঘটনার বিষদ বর্ণনা তুলে ধরেন রাহেলা শেখ। এসময় পুলিশ প্রধান তাকে আশ্বাস দেন, ঘটনা তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় আইনী সহযোগিতা প্রদান করা হবে। অবস্থার এমন পর্যায়ে বৃহস্পতিবার একই বিষয়ে নিজের অসহায়ত্ব তুলে ধরে কোটি টাকার বাড়ি ও বিশাল জমি দখলের ঘটনা জানিয়ে তা উদ্ধারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান রাহেলা শেখ। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি তার বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শুনেন। তার অভিযোগ ফাইলটি গ্রহন করে সার্বিক প্রতিকারের আশ্বাসও দেন তিনি। রাহেলা শেখ জানান, প্রধানমন্ত্রী মাধ্যমে তার হারানো সহায় সম্পত্তি উদ্ধার হবে, এমন প্রত্যাশা তার। তিনি বলেন, স্বামীর মৌরসী সম্পত্তি নিয়ে শরিকানদের মধ্যে চাপা মতানৈক্য থাকাটা-ই স্বাভাবিক। যদিও বিষয়টি পূর্বে মিমাংসিত। তিনি বলেন, আমি দলের ত্যাগি ও একনিষ্ট কর্মীও। প্রধানমন্ত্রী তাকে আশ্বাস দিয়েছে বলেছেন, দুর্নীতিবাজ, দখলবাজ কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধী অপরাধী-ই, সে যেই হোক। রাহেলা শেখ এও বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে কোনো সহযোগিতা করেনি। স্থানীয় এমপির নিষেধ থাকার কারনে কোনো সহযোগিতা তাকে দেওয়া যাবে না বলে জানায় পুলিশ। তবে পুলিশ আদালতের সরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন রাহেলা শেখ কে। ওসি (তদন্ত) জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, রাহেলা শেখ এর কেয়ারটেকার মুসলিম আলমের দেয়া অভিযোগের আলোকে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হাই কমিশনে রাহেলা শেখের আবেদনের পেক্ষিতে তদন্ত করেছেন ওসি ইনচার্জ নাজমুল হক। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে, তার পক্ষে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
এব্যাপারে এমপি মাহমুদ-উস-সামাদ কয়েছে চৌধুরী বলেন, রাহেলা বেগমের স্বামী শেখ তাহির আলী। তারা ৮বোন ১ভাই। পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য প্রবাসী। জায়গা জমি নিয়ে তাদের পরিবারের বিরোধ দীর্ঘদিনের। তাদের বিরোধ নিস্পত্তিতে স্থানীয় পঞ্চায়েত ভূমিকা রাখছেন। তাদের অনুরোধে আমি এ বিষয়টি মিমাংসায় উদ্যোগি হই। কেউ যদি ব্যক্তিস্বার্থে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করে তাহলে বিষয়টি চরম দুঃখজনক। কারন এখানে আমার বৈষয়িক কোন স্বার্থ জড়িত নই। আমি জনগনের প্রতিনিধি হিসাবে সেবার মানসিকতায় বিরোধীপূর্ণ ঘটনা নিস্পত্তিতে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি মাত্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।