মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : এখনও রাখাইনে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অবশিষ্ট মানুষকে তাড়িয়ে দিতে দ্বিগুণ শক্তিতে অভিযান শুরু করেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। এতে পালিয়ে আসতে থাকা রোহিঙ্গা স্রোত আরও প্রবল হয়েছে। রাখাইনে থেকে যাওয়া বিপন্ন মানুষদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জেনেছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি। জাতিসংঘের আশঙ্কা, এখনও রাখাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গারাও পালিয়ে আসবে। মিয়ানমার স¤প্রতি রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ঘোষণা দিলেও পালিয়ে আসা শরণার্থীরা বলছেন, পশ্চিম রাখাইনে থেকে যাওয়া অবশিষ্ট রোহিঙ্গাকে দেশছাড়া করতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ফের তাÐব শুরু করেছে। তাদের তাড়িয়ে দিতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান দ্বিগুণ জোরদার করা হয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগের ইতি ঘটাতে ব্যক্তিগতভাবে আহŸান জানিয়েছেন জাতিসংঘের অভিবাসী বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)-এর মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইং। বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, আইওএমের হিসাবে ভয়াবহ মানবিক অবস্থায় বসবাস করছেন কমপক্ষে ৫ লাখ রোহিঙ্গা। আইওএম এ কথা বলার পরেই উইলিয়াম লেসি সুইং ওই আহŸান জানিয়েছেন। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, প্রতিদিন সীমান্তে ছুটছে হাজার হাজার মানুষ। বহু গ্রাম এখন একেবারেই জনমানবশূন্য। খবরে বলা হয়েছে, এখনও প্রতিদিন ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন ছাড়ছে। পালিয়ে এসেছেন মংডুর বাসিন্দা রাশিদা বেগম। তিনি এএফপিকে বলেন, স্থানীয়রা আমাদের কয়েক সপ্তাহে ধরে বলছিল যে আমরা সেখানে থাকলে তারা নিরাপত্তা দেবে। কিন্তু এরপর সেনারা এসে ঘরে ঘরে তল্লাশি শুরু করে। তারা আমাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। তিনি বলেন, স্থানীয়রা আশ্বাস দিয়েছিল, তারা আমাদের কোনো ক্ষতি করবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে বাড়িতে আগুন দেয়। হাসিনা খাতুন নামের আরেক পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারী বলেন, স্থানীয়রা আমাদের বলেছিল, তোমরা যেও না। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আমরা তাদের বিশ্বাস করেছিলাম। আমি গ্রামেই থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। শেষ পর্যন্ত আমাদের চলে আসতে হল। সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, সেনাবাহিনী এখন আর কাউকে হত্যা করছে না, শুধুমাত্র বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে। যদিও সীমান্ত থেকে বাড়িঘরে আগুনের কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ওয়াকিনস বলেন, রোহিঙ্গারা খুবই নাজুক অবস্থায় আছে। তাদের অনেকেই এখন সেই বিভীষিকা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তাদের বসবাসও করতে হচ্ছে অনেক মানবেতর পরিস্থিতিতে। আমাদের লক্ষ্য ১২ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের জন্য প্রস্তুত থাকা। আইওএম বলেছে, ২৫ শে আগস্ট থেকে দ্রæততার সঙ্গে ও ব্যাপক মাত্রায় এসব রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দেয়। তারা রাখাইনে সৃষ্ট সহিংসতা থেকে বাঁচতে হাজারে হাজারে পালিয়ে যায়। এতে ভয়াবহ এক মানবিক জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উইলিয়াম লেসি বলেছেন, বিশ্ব শুধু রোহিঙ্গাদের দুর্দশার ভয়াবহ চিত্র, তাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও অগ্নি সংযোগের কাহিনী জেনে প্রতিক্রিয়াই দিচ্ছে। কিন্তু এই ভয়াবহতা মোকাবিলা করতে হলে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে পদক্ষেপ নিতে হবে, কারণ, আমরা সীমান্তের দু’পাশেই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে চাই। তিনি আরো বলেন, এই মানবিক সঙ্কট মোকাবিলার জন্য এখন থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত ১২ কোটি ডলার সহায়তার আহŸান জানাচ্ছে আইওএম। যদি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় এই টার্গেট পূরণ করতে না পারে তাহলে শরণার্থীদের পরিণতি হবে পীড়াদায়ক। জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয়, খাদ্য নয় এমন ত্রাণ সামগ্রী, পয়ঃনিষ্কাশন সহ বিভিন্ন কাজে এই অর্থ প্রয়োজন। যদি এ চাহিদা পূরণ করা না যায় তাহলে রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে অপর্যাপ্ত প্লাস্টিকের শিটের নিচে ভারি বৃষ্টি উপেক্ষা করে উন্মুক্ত অবস্থায় দুর্ভোগ পোহাতে হবে। পরিষ্কার পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনে ঘাটতি থাকলে তাতে কলেরাসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। এরই মধ্যে মলমূত্র মিশে গেছে পানিতে। এএফপি, সিনহুয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।