Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আফগান শিশুদের সৈন্য হিসেবে নিয়োগ করে সিরিয়ার যুদ্ধে পাঠাচ্ছে ইরান

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইরান আফগান উদ্বাস্তু শিশুদের সৈন্য হিসেবে নিয়োগের পর যুদ্ধ করার জন্য তাদের সিরিয়ায় পাঠাচ্ছে এবং তারা সেখানে যুদ্ধে নিহত হচ্ছে। মানবাধিকার গ্রæপ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ইরানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনেছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের যুদ্ধে নিয়োগ করা যুদ্ধাপরাধ। আন্তর্জাতিক বে-সরকারী সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআর ডবিøউ) রোববার এক বিবৃতিতে বলে, ১৪ বছর বয়সী আফগান শিশুদের ইরানের ইসলামী বিপ্লবী রক্ষী কোর (আইআরজিসি) ফাতেমিয়ুন ডিভিশনে নিয়োগ করা হয়েছে। আফগান স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে গঠিত এ ডিভিশনটিকে সিরিয়ায় সেখানকার সরকারী বাহিনীর পক্ষে লড়াই করার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এইচআরডবিøউ-র গবেষণার ভিত্তি হচ্ছে ইরানের গোরস্তানগুলোতে কবরের নাম ফলকের ছবি। এসব কবর হচ্ছে সিরিয়ার যুদ্ধে নিহত আফগান শিশুদের। তেহরানের বেহেশত-ই-জাহরা গোরস্তানের শহীদান অংশে ৮টি কবরের মধ্যে ১৪ বছরের এক আফগান শিশুর কবরও রয়েছে।
ইরানি সংবাদ মাধ্যমে কিছু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে এবং আরো ৬ আফগান শিশু সৈনিকের খবর দিয়েছে যারা সিরিয়ায় নিহত হয়েছে।
গোরস্তানে কবরের নামফলকে নিহতদের সবার বয়স ১৮ বছরের উপরে বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের আম্মীয়রা বলেন, তাদের বয়স ১৫-র কম। শুধু ফাতেমিয়ুন ডিভিশনে ভর্তি করার জন্য তাদের বয়স বাড়িয়ে দেয়া হয়।
এইচআরডবিøউর মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক সারাহ লিয়াহ হুইটসন বলেন, ইরানের অবিলম্বে শিশু সৈনিক নিয়োগ বন্ধ করা এবং সিরিয়াতে যুদ্ধ করার জন্য পাঠানো আফগান শিশুদের ফিরিয়ে আনা উচিত।
প্রবাসী আফগানরা আবাসিক কাগজপত্র চায়
ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেবে সেখানে প্রায় ২৫ লাখ আফগান উদ্বাস্তু রয়েছে। তাদের অনেকেরই সেখানে বাস করার কাগজপত্র নেই।
সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী ফাতেমিয়ুন ডিভিশনে ১৪ হাজার সৈন্য আছে যারা ইরান কর্তৃক প্রশিক্ষণ প্রদানকৃত ও সমর্থনকৃত। ২০১৩ সালে এ ডিভিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে এ ব্যাপারে সরকারি তথ্য নেই।
এইচআরডবিøউ কর্তৃক সনাক্তকৃত আলি নামের ২৯ বছর বয়সী এক আফগান আগস্টে গবেষকদের বলেন, তিনি ফাতেমিয়ুন ডিভিশনে যোগ দিলে তার ইরানে বসবাসের পারমিট নবায়ন সহজ হবে বলে একজন নিয়োগকারী তাকে প্রলুব্ধ করার পর তিনি এ ডিভিশনে যোগ দেন। তিনি এইচআরডবিøউকে বলেন, তারা কখনো আমার কাছে কোনে কাগজ বা প্রমাণ চায়নি, কিন্তু তারা নিশ্চিত হতে চেয়েছে যে আমরা আফগান নাগরিক। সৈন্যদলে যোগ দিতে আমাদের বয়স ১৮ বছরের উপর হওয়া প্রয়োজন ছিল। তারা কাগজপত্র দেখেনি।
এইচআরডবিøউ-র এক মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মহিলা গবেষক সেফেরি ফার বলেন, শিশুদের নিয়োগ যে ইচ্ছাকৃত নীতি তা মনে হয় না। এটা হচ্ছে দায়িত্বহীনতা যা কর্তৃপক্ষ বা নিয়োগকারীরা পরোয়া করে না।
আফগান শিশুদের অধিকার
ইরান সরকারিভাবে বলেছে যে ফাতেুময়ুন ডিভিশনে যোগদানকারীরা স্বেচ্ছাসেবী। ইরানের সর্বোচ্চ র্ধীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি কোনো আফগান শিশু, এমনকি যাদের নিবন্ধন করা হয়নি, কেউই স্কুলের বাইরে থাকবে না বলে নির্দেশ দেয়ার পর ২০১৫ সাল ইরান সকল আফগান শিশুকে স্কুলে নিবন্ধনের অনুমতি দেয়।
আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক সৈন্যদলে ভর্তির জন্য বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে এবং ১৫ বছরের নিচে কাউকে সৈন্য হিসেবে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদান যুদ্ধাপরাধ। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম বিধি অনুযায়ী জাতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে ১৫ বছরের নিচে কাউকে নিয়োগ ও শত্রুতাকর্মে সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করা যুদ্ধাপরাধ।
সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এইচআরডবিøউ ইরানে শিশু সৈন্য নিয়োগ তদন্ত করা এবং শিশু সনদ লংঘনকারীদের তালিকায় আইআরজিসিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহবান জানিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ