Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়

আর্থিক কারণে বন্ধ হয়ে গেল মোনার্ক এয়ারলাইনস

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ব্রিটিশ বিমান সংস্থা মোনার্ক এয়ারলাইনস আর্থিক বিপর্যয়ের কারণে গত সোমবার এর কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। ব্রিটিশ সরকার এক জরুরি সিদ্ধান্তে এয়ারলাইনসের অপেক্ষমাণ ১ লাখ ১০ হাজার গ্রাহককে বিশেষ ভাড়া করা বিমানে দেশে ফেরত আনতে যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, ব্রিটেনের ইতিহাসে এটা এ খাতে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। গত সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় অডিট কোম্পানি কেপিএমজি জানায়, ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘদিন টিকে থাকা এ এয়ারলাইনস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে যুক্তরাজ্য থেকে এর সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং সেগুলোকে রিসিডিউল করা হবে না। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ (সিএএ) জানায়, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তারা ৩৪টি ভাড়া করা বিমানের মাধ্যমে মোনার্কের গ্রাহকদের যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনবে। মোনার্কের যেসব গ্রাহকের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাজ্যে ফেরার কথা ছিল, তারা কোনো বাড়তি খরচ ছাড়াই ফিরতে পারবেন এবং তাদের ভ্রমণ সংক্ষিপ্ত করার প্রয়োজন নেই বলে জানায় রেগুলেটরি সংস্থাটি। তবে এর পরের তিন লাখ বুকিং বাতিল করা হয়েছে। সিএএ’র প্রধান নির্বাহী অ্যান্ড্রু হাইনেস বলেন, এটি ব্রিটিশ এয়ারলাইনের ইতিহাসে বৃহত্তম ব্যর্থতা। তিনি আরো বলেন, মোনার্কের যেসব গ্রাহক বিদেশে আটকা পড়েছেন, তাদের অবকাশ যাপন শেষে বাড়তি খরচ ছাড়া দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার সিএএ’কে নির্দেশ দিয়েছে। পরিবহন সচিব ক্রিস গেইলিস এক বার্তায় বলেন, এটি বিদেশে অবকাশ যাপন করতে যাওয়া ব্রিটিশদের জন্য বিশাল হতাশার ব্যাপার এবং তার প্রথম লক্ষ্যই হচ্ছে সেসব নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনা। তিনি বলেন, এ কারণে তারা দেশটির ইতিহাসে স্বাভাবিক সময়ে সবচেয়ে বড় প্রত্যাবর্তনের কর্মসূচি দিয়েছেন, যেটিকে তিনি আখ্যা দেন অভূতপূর্ব অবস্থায় অভূতপূর্ব সাড়া হিসেবে। কাতার এয়ারওয়েজ ও ইজিজেটসহ ১৬টি ভিন্ন এয়ারলাইনস এসব যাত্রীর জন্য আগামী দুই সপ্তাহে ৭০০ ফ্লাইট পরিচালনা করবে, যাদের স্পেনের বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে সবচেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহনের কথা রয়েছে। গেইলিস আশা করেন, এ রকম একটি বিশাল চ্যালেঞ্জের ব্যাপারটা সবাই অনুধাবন করবেন এবং যাত্রীরা ধৈর্যসহকারে সিএএর নির্দেশ মেনে চলবেন। এক টুইটার বার্তায় মোনার্ক জানায়, যুক্তরাজ্যের মোনার্ক গ্রাহকরা বিমানবন্দরে যাবেন না। সেখানে মোনার্কের কোনো ফ্লাইট থাকবে না। গত সপ্তাহে একই রকম ঘটনা ঘটে, যখন বিমান সংস্থা রায়ান এয়ার পাইলটস্বল্পতার কারণে হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল করে। একজন হতাশ গ্রাহক হলি রে কুপল্যান্ড টুইটারে বলেন,‘যখনই আপনি ভাবলেন যে, রায়ান এয়ারের ফ্লাইট বাতিল এড়াতে পেরেছেন, সেদিনই মোনার্ক এয়ারলাইনস তার কার্যক্রম বন্ধ করল।’ কেপিএমজির সহযোগী এবং সহপ্রশাসক বেøয়ার নিম্মো জানান, খরচের চাপ এবং ইউরোপে স্বল্প দূরত্বের ফ্লাইটের বাজারে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার কারণে মোনার্ক গ্রুপ লম্বা সময় ধরে ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এর ফলে মোনার্কের ২ হাজার কর্মী এখন চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন। ব্রেক্সিট ও জঙ্গিবাদের কারণে সৃষ্ট অস্থিরতায় অবকাশ কাটানো যাত্রীদের বহনকারী এ সংস্থার আর্থিক অবস্থা টালমাটাল হয়ে পড়েছে। মোনার্কের সবচেয়ে বড় দুটি বাজার মিসর ও তিউনিসিয়ায় জঙ্গি হামলার পর ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়। তুরস্কের অস্থিতিশীল অবস্থাও তাদের ব্যবসায় বাজে প্রভাব ফেলে। পাউন্ডের মূল্যহ্রাসে ডলারে কেনা জ্বালানি ও বিমানবহরের জন্য তাদের প্রতিবছর বাড়তি ৫ কোটি ইউরো ব্যয় করতে হয়। গত বছরের অক্টোবরে তাদের সিংহভাগ শেয়ারের মালিক গ্রেবুল ক্যাপিটাল তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য ১৬ দশমিক ৫ কোটি ইউরো প্রদান করে। কিন্তু চলতি বছর সেপ্টেম্বরে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সিএএ সেটি পুনরায় নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এএফপি, গার্ডিয়ান, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিটেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ