Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মসনবী শরীফ

কাব্যানুবাদ ঃ রূহুল আমীন খান | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী রহঃ

 

৬৯. বক্ষভরা কান্না-নিয়ে যখন তিনি নিদ্রা যান

স্বপ্ন মাঝে বৃদ্ধকে এক সম্মুখে তার দেখতে পান।

৭০. বৃদ্ধ বলেন : পুরবে আশা, নেই কোনই ভাবনা আর
আগামীকাল তোমার কাছে আসবে চলে দূত আমার।

৭১. সত্য জেনো আগন্তুকে, আস্থা রেখো তাঁর ওপর
বিশ্বাসী সে, দ্রষ্টা সঠিক হাকিম অতি শক্তিধর।

৭২. দেখতে পারে তিলিস্মাতী চিকিৎসা সে ডাক্তারের
পাঁচনে তঁর দেখতে পাবে শক্তি খোদায়ী কুদরতের।

৭৩. স্বপ্ন দেখে টুটিল নিদ, ঘুচল মনের হা-হুতাশ
বাদশা এবার বাদশা হলো, রইল না আর দাসীর দাস।

৭৪. ছাই করিয়া রশ্মি তারার উজাল করে পূব গগন
হাসল রবি হলো হাযির প্রতীক্ষিত শুভক্ষণ।

৭৫. ‘মনযারাতে’২ আসন গেড়ে করতে ছিলেন ইন্তেযার
ফলবে কখন বাস্তবেতে রহস্যময় স্বপ্ন তার।

৭৬. দেখেন তিনি জনৈক সুধী সৌম্য সুধীর পুন্যশ্লোক
আসছে যেন ছায়া ভেদি দীপ্ত উজাল সূর্যালোক।

৭৭. আসছে চলেÑ নভোনীলে হাসছে যেন নওহেলাল
আসছে বুনে কল্পনাতে আলো-ছায়ার ইন্দ্রজাল।
৭৮. কল্পনাতো মন-গহীনে নিরাবয়ব যেমন ‘নাই’
অথচ এ কল্পনাতেই চলছে নিখিল বিশ্বটাই।

৭৯. সন্ধি লড়াই, শান্তি সবই, ফলাফল এ কল্পনার
কল্পনারই কারণে সবÑ লজ্জা, গরব, অহংকার।

৮০. খেয়াল ধেয়ান কল্পনা যা ফন্দি ওলী-দরবেশের
প্রতিচ্ছবি কেবল এসব খোদায়ী বাগের চাঁদ মুখের।

৮১. বাদশা যে রূপ দেখেছিলেন স্বপ্নাবেশে কল্পনার
চেহারাতেও মেহমানের প্রতিচ্ছায়া দেখেন তাঁর।

৮২. ওলীর মাঝে বিচ্ছুরিত হয় খোদায়ী নূর-আলোক
সেজন কেবল দেখে সে নূর রয়েছে যার মনের চোখ।

৮৩. দূর থেকে ওই খোদার ওলী হলেন যখন দৃশ্যমান
বিচ্ছুরিত হচ্ছিল তাঁর শরীর থেকে আলোর বান।

৮৪. দৌবারিকের বদলে শাহ্ স্বয়ং আগান ফুল্ল মন
গায়বী মেহমানে গিয়ে জানান স্বাগত সম্ভাষণ।

৮৫. দু’জনাই সাগরচারি, সন্তরণে শক্তিমান
বিনে সুতার বন্ধনেতে শক্তবাধা উভয় প্রাণ।

৮৬. তৃষ্ণা-কাতর একজনা আর পানের পানি অন্য জন
শরাব নেশায় একে বেঘোর, অন্যে শরাব তার সদন।

৮৭. ওই দাসী নয়, মাশুক ছিলে তুমিই আমার ধরার মাঝ
এইতো নিয়ম, একটি কাজের কার্যকারণ অন্য কাজ।

৮৮. আমি যেন ওমর, তুমি মিসাল নবী মোস্তফার
তোমার সেবায় বিলিয়ে দেব জীবন-পরান সব আমার।

আদবের সুফল ও বেয়াদুবির কুফল

৮৯. তাওফীক চাই তোমার দ্বারে শিষ্টাচারের হে মোর রব
তোমার দয়াÑ ফযল থেকে বঞ্চিত হয় বে-আদব।

৯০. অশিষ্টÑ অনিষ্ট-ক্ষতি করে না কেবল নিজের
বরং সে হয় ক্ষতির কারণ বিশ্বজগৎ সংসারের।

৯১. আকাশ থেকে আসত খাবার যমানায় হযরত মূসার
চেষ্টা কোশেষ খরিদ ছাড়া দয়াতে মহান খোদার।

৯২. কিন্তু নবীর কওমে ছিল ধৃষ্ট বেয়াদবের পাল
ভালোটা ত্যাগ করে তারা বললো কোথা রসুন, ডাল ?

৯৩. বন্ধ হলো নভোরিযিক আনলো ডেকে সর্বনাশ
ভাগ্যলিপি হলো তাদের কাস্তে-কোদাল-নাঙ্গল-চাষ।

৯৪. ঈসা মসিহ্্ খোদার দ্বারে গায়বী খাবার যখন চান
আকাশ থেকে খাঞ্চা ভরে করেন খোদা খাদ্য দান।

৯৫. কৃতঘœরা দিল তাদের আদব-লেহায বিসর্জন
মিসকিনেরি মত তারা করল খাবার সঞ্চয়ন।

৯৬. কোমল ভাষে ঈসা তাদের দেন উপদেশ, খুব বুঝান
সঞ্চিত কেউ করবেনাকো থাকবে জারী খোদার দান।

৯৭. ভোজ সভাতে হাযির হয়ে ধনির গেহেÑ দিল্্দারাজ
লোভ-লালসা বদগুমানি পোষণকরা কুফরি কাজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন