Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আউশের মাঠে প্রতিক‚লতা কাটিয়ে কৃষকের মুখে হাসি

| প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) ঃ চট্টগ্রামের কৃষি প্রধান জনপদ মীরসরাই উপজেলার ফসলের মাঠে চলছে এখন আউশ ধান কাটার উৎসব। মৌসুমের শুরুতে এবার বার বার বৈরী আবহাওয়ার পর সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে আউশের ফলন ভালো হওয়ায় অবশেষে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। কেউ কেউ ধান কাটার প্রস্তুুতি নিতে শুরু করেছে । কেউ বা ধান কেটে ঘরে নিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে ক্ষয়ক্ষতির পরও এবার গেল বছরের তুলনায় আবাদ ও ফলন ৪’শ হেক্টর বেশী হয়েছে।
ঈদের আমেজ ছাপিয়ে কৃষকের এই ধান ঘরে তুলতে কৃষক কৃষাণি কারও যেন একটুও ফুসরত নেই। চারদিকে এখন ধান কেটে ঘরে তোলার প্রতিযোগিতা। আকাশে ঝড়ের ঘনঘটা দেখলে ও কৃষক তাড়াতাড়ি আউশ ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। দীর্ঘ দিনের এই পরিশ্রমের ফসল আউশ ধান সংরক্ষন করে ঘরে তুলতে কেউ কেউ অন্য জেলা থেকে শ্রমিক এনেছেন আবার কেউ কেউ এলাকার শ্রমিক নিয়ে এই ধান কাটার মহা উৎসবে ব্যস্ত।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় কৃষক, কৃষাণি ও ছেলে মেয়ে এবং অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়ে নিজ নিজ জমির আউশ ধান কর্তন করছে, কেউ আবার মেশিনের মাধ্যমে মাড়াই করে খড় থেকে ধান ছাড়াচ্ছেন, কোথাও কোথাও কৃষাণিরা সংঘবদ্ধ হয়ে ধান সিদ্ধ করছেন। কোথাও আবার দেখা যায় বাড়ির উঠানে এবং বাড়ির আঙ্গিনায় অস্থায়ী উঠান করে ধান রোদ্রে শুকাচ্ছেন। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় বাম্পার ফলন হলেও কর্তনের সময় আবহাওয়া পরিস্থিতি ভাল না থাকায় আউশ ধান ঘরে তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কৃষক কৃষাণিদের।
পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক নুরুল আলম (৫৪) জানায় এবার শুরু থেকে বারবার পাহাড়ী ঢল অনেক ক্ষতি করেছে। এরপরও আমার ১০ গন্ডা জমির আউশ পঁচে গেছে। কিন্তু বাকী ২০ গন্ডা টিকে উঠায় রক্ষা পেয়েছি। এখন আবার ধান তুলতে ও শুকাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। আকাশে কিছু সময় বৃষ্টি আবার কিছু সময় রৌদ্র এবং বৃষ্টির পানি উঠানে লেগে থাকায় আমাদের ধান শুকাতে সমস্যা হচ্ছে। মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম জানান এবার পুরো উপজেলায় ৮৮৫০ হেক্টর জমিতে আউশের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৪০০ হেক্টর নষ্ট হয়ে গেছে। এরপরও গতবছরের তুলনায় ৪০০ হেক্টর বেশী জমিতে ফলন হয়েছে। এবারের ফলন ৩৫ হাজার ৪শত নব্বই মে.টন বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে আমরা সার, সেচ, পোকা মাকড় ও আগাছা দমনসহ সকল বিষয়ে উপযুক্ত সময়ে পদক্ষেপ গ্রহন করে চাষীদের পরামর্শ প্রদান করেছি। যে কারনে এ বছর বর্ষা মৌসুমী প্রতিকূলতা কাটিয়ে ফসল আউস ধানের ভাল ফলন হয়েছে এই উপজেলায়।
এসময় তিনি আরো বলেন, যেসব কৃষকের ধান পাকা এবং কাটার উপযোগি হয়েছে তারা সময় নষ্ট না করে দ্রæত ধান কেটে ফেলাই উত্তম। এতে ফলনের সঠিক পরিমান ঠিক থাকবে। নির্দ্দিষ্ট সময়ে ধান কর্তন না করলে বৃষ্টিপাতে ধান ঝরে পড়ে যাবে এবং যে পরিমানে ধান পাওয়ার কথা তার থেকে কম পাবে। সব শেষে তিনি, নির্দ্দিষ্ট সময়ে ধান কর্তন করে সংগ্রহ করার আহবান জানান কৃষক কৃষানীদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আউশ

২৯ জুন, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ