Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলায় প্রস্তুতি আউশ-আমনে বিশেষ নজর

রফিক মুহাম্মদ : | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাস মহামারি ও বৈশ্বিক খাদ্য সঙ্কটের কথা বিবেচনা করে সরকার খাদ্য উৎপাদনে বিশেষ নজর দিয়েছে। বিশেষ করে করোনার আঘাতের পর খাদ্য সঙ্কট যেন কোনোভাবেই প্রকট হতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতেই চলতি আউশ ও আসন্ন আমন মৌসুমকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয় দ্রুত ও উচ্চ ফলনশীল জাতের আমন ধান কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে।
কৃষিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আবাদ যোগ্য এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে। তার এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন। দেশে পতিত (স্থায়ী ও অস্থায়ী পতিত) জমি রয়েছে প্রায় ১০ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার শতক। যা দেশের মোট জমির প্রায় ৫ শতাংশ। এ জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সমন্বিতভাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বসে তারা কোন জমিতে কি ধরনের ফসল চাষ হবে তা নির্ধারণ করবে এবং দ্রুত তাতে চাষাবাদ শুরু করবে।
এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে চলতি আউশ আবাদ ও আসন্ন আমান আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বীজ, সার ভর্তুকিসহ অন্যান্য সুবিধা দেয়া হচ্ছে। যেখানে সরকারি সেচ প্রকল্পের ব্যবস্থা আছে সেখানে সেচও সুলভে দেয়া হচ্ছে। আমনের উৎপাদন বাড়াতে এবার সরকারিভাবে আমন বীজ ১০ টাকা কমিয়ে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) তথ্য মতে, সরকারের আমন বীজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।
কৃষি সচিব নাসিরুজ্জামান বলেন, এ বছর আমন বীজে সরকার ১০ টাকা করে ভর্তুকি দিচ্ছে। আগে ৪০ টাকা কেজিতে আমন বীজ বিক্রি হলেও এ বছর তা ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে সারাদেশে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫৯ লাখ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৫৪ লাখ টন। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এবার আমন ধান উৎপাদন বাড়াতে কম ফলনশীল জাতের আবাদ কমিয়ে আধুনিক অথবা উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের আবাদ সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি চলতি আউশ ধান চাষেও বিশেষ নজর দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। আউশ চাষেও সরকারের পক্ষ থেকে সার, বীজ ও সেচ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আর এতে কৃষক আউশ চাষেও আগ্রহী হচ্ছেন। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ লাখ হেক্টর জমিতে আউশ চাষ হলেও আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টন। গত অর্থবছরের চেয়ে এবার আউশ উৎপাদন সাড়ে ৭ লাখ টন বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার রানিখামার গ্রামের কৃষক রতন জানান, এবার ৫ বিঘা জমিতে আউশ ধান রোপণ করেছেন। গত মৌসুমে তিনি ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করে ভালো দাম পান। প্রতিমণ ধান তিনি এক হাজার থেকে এক হাজার পঞ্চাশ টাকা দরে বিক্রি করেন। বোরো ধানে ভালো লাভ পেয়ে এবার আউশ ধান চাষে তার আগ্রহ বেড়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ