মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও চরমপন্থি বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের নির্যাতন-হত্যা থেকে বাঁচতে গত দুই সপ্তাহে প্রায় ১ লাখ ৬৪ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়েছে। রোহিঙ্গাদের দাবি, সরকারি মদদেই এই হত্যা-নির্যাতন চলছে। আবার মিয়ানমার সরকারের দাবি রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরাই এ কাÐ ঘটাচ্ছে। কারটা সত্য? স¤প্রতি বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংবাদদাতা জোনাথান হেড রাখাইনে গিয়েছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে ফিরে তিনি জানিয়েছেন, রাখাইন বৌদ্ধরাই রোহিঙ্গাদের গ্রামে অগ্নিসংযোগ করছে। জোনাথান হেডের জবানিতেই পড়ুন তার বিবরণ। মংড়ুর পরিস্থিতি দেখতে মিয়ানমার সরকার যে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল আমি সেই গ্রুপেরই সদস্য ছিলাম। এই সফরে যোগ দেওয়ার পূর্বশর্ত ছিল আমরা দলবদ্ধভাবে থাকব এবং স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারব না। একইসঙ্গে সরকারের বাছাই করা স্থানে আমাদের যেতে হবে। অন্যান্য এলাকায় এমনকি কাছের কোনো স্থানেও আমাদের যাওয়ার প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছিল নিরাপত্তার অজুহাতে। মংড়ুর দক্ষিণের শহর আই লি থান কিয়াঅ পরিদর্শন শেষে আমরা ফিরছিলাম। শহরটি তখনো জ্বলছিল, যা দেখে বোঝা যায় বেশ কিছু সময় আগে এতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পুলিশ আমাদের জানালো, মুসলমান বাসিন্দারাই তাদের নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। অবশ্য ২৫ আগস্ট শহরের পুলিশ চৌকিতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির যোদ্ধাদের হামলার পরপর অধিকাংশ বাসিন্দাই পালিয়ে গেছে। আমরা উত্তর দিকে বেশ কিছুটা দূরে কমপক্ষে তিনটি ধোঁয়ার কুÐুলি দেখতে পাচ্ছিলাম। এসময় থেমে থেমে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। সাধারণত গ্রামের চিহ্ন হিসেবে ধানক্ষেত থাকে। আমাদের পেছনে ধানক্ষেতগুলোর মধ্যে সারিবদ্ধ গাছের ভেতর থেকে ধোঁয়ার কুÐুলি দেখতে পেলাম। আমরা গাড়ি থেকে বের হলাম এবং ধানক্ষেত পেরিয়ে সেখানে যাওয়ার জন্য দৌড় দিলাম। প্রথমেই দেখতে পেলাম গ্রামের ভবনগুলো কেবল জ্বলছে। এই গ্রামের বাড়িগুলো ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে ছাইয়ে পরিণত হয়ে গেল। এটা সুনিশ্চিত কিছুক্ষণ আগেই এখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একটু হেঁটে যাওয়ার পর আমরা একদল তরুণকে রামদা, তলোয়ার ও গুলতি হাতে চলে যেতে দেখলাম। আমরা তাদেরকে সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু তারা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানালো। যাহোক, আমাদের মিয়ানমার সহকর্মী ক্যামেরা সরিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বললো। তারা জানালো, তারা সবাই রাখাইন বৌদ্ধ। ওদের মধ্যে একজন স্বীকার করলো সে গ্রামে অগ্নিসংযোগ করেছে এবং পুলিশ তাকে সহযোগিতা করেছে। সামনে এগুনোর পর একটি মাদ্রাসা দেখতে পেলাম যেটির ছাদ তখনো জ্বলছে। আগুন আরেকটি বাড়ির পাশে ছড়িয়ে পড়ায় তিন মিনিটের মাথায় এটি রীতিমতো নরকে পরিণত হলো। গ্রামে কোনো মানুষই নেই। আমরা যাদেরকে দেখেছিলাম ওরা ছিল হামলাকারী। রাস্তার ওপর গৃহস্থালি সামগ্রী, শিশুদের খেলনা, নারীদের কাপড়চোপড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল। রাস্তার মাঝে একটি খালি জগ দেখতে পেলাম যেটার ভেতর থেকে তখনো পেট্রোলের ঝাঁঝ বের হচ্ছিল, আরেকটি পড়ে থাকা জগে কিছুটা পেট্রোল অবশিষ্ট ছিল। যখন আমরা বের হয়ে আসছিলাম পোড়া বাড়িগুলোতে আগুন ধিকিধিকি করে জ্বলছিল, কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যাচ্ছিল চারপাশ। বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।