বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বেসরকারি এয়ারলাইন্স টিকেট বিক্রি করছে সাড়ে ৭ হাজার টাকায়
অস্বাভাবিক প্রবল বর্ষণের পাশাপাশি নিয়মিত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে তহবিল সঙ্কটে সড়ক-মহাসড়কগুলোর দূর্বল ও নাজুক অবস্থার মধ্যে নৌপথই এবারের ঈদে দক্ষিণাঞ্চলমুখি ঘরে ফেরা মানুষের অন্যতম প্রধান অবলম্বন হলেও নানা ধরনের ঝুকিতে শংকিত আমজনতা। এমনকি এবারের ঈদেও চট্টগ্রাম-বরিশাল নৌপথে নিরাপদ উপক’লীয় স্টিমার সার্ভিসটি চালু করার কোন উদ্যোগ নেয়নি বিআইডবিøউটিসি। অথচ এ ব্যাপারে আরো তিন বছর আগে ওয়াদা ছিল নৌ পরিবহন মন্ত্রীর। তবে বেসরকারী নৌযান মালিকগন ২৮আগস্ট থেকেই রাজধানী ঢাকার সাথে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস চালু করছে। এবার শুধু ঢাকা-বরিশাল নৌপথে ঈদের আগে পরে প্রতিদিন ১৮টি নৌযান প্রতি ২৪ ঘন্টায় দুটি করে ট্রিপে যাত্রী পরিবহন করবে। ফলে রজাধানীর সাথে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্বম বরিশাল নদী বন্দরে প্রতিদিন ৩৬টি নৌযান ছাড়াও ২টি ক্যাটামেরন যাত্রী পরিবহন করবে। এসব নৌযানে প্রতিদিন লক্ষাধীক যাত্রী চলাচল করার কথা রয়েছে। এর বাইরেও রাষ্ট্রীয় জাহাজ চলাচল প্রতিষ্ঠান-বিআইডবিøউটিসি’র নিয়মিত রকেট স্টিমারের পাশাপাশি প্রতিদিন অতিরিক্ত ১টি বিশেষ নৌযান ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে পিরোজপুরের হুলারহাট পর্যন্ত চলাচলের কথা বলা হয়েছে। তবে গতকাল পর্যন্ত সংস্থাটির ৬টি নৌযানের একটি বিকল ছিল। অপর দুটি প্যডেল জাহাজের অবস্থাও যথেষ্ঠ নাজুক। বৃহস্পতিবার ‘এমভি বাঙালী’ জাহাজটি আনডক করে ঢাকা ঘাটে পৌছলেও ‘এমভি মধুমতি’র প্রপেলার ও তার স্যাফট-এর বুস ’এর মেরামত কাজ শেষ হয়নি।
রেল বিহীন দক্ষিণাঞ্চলে ঈদকে সামনে রেখে সরকারী-বেসরকারী নৌযানগুলোতে কেবিন টিকেটের জন্য হাহাকার চলছে বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে। গত এক দশকে নৌযানের সংখ্যা তিনগুন বাড়লেও কেবিন টিকেটের সঙ্কট এখনো কাটেনি। ঈদকে সামনে রেখে বেসরকারী নৌযান মালিকগন ডেক শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণী ও ভিআইপি কেবিনের ভাড়া বৃদ্ধি করছে। যাত্রীগন তা মেনে নিলেও টিকেট মিলছে না। একটি কেবিন টিকেটের জন্য তারা হণ্যে হয়ে ঘুরছেন এক নৌযানের অফিস থেকে অন্য অফিসে। এরই মধ্যে বিআইডবিøউটিসি অপ্রেয়াজনীয়ভাবে ঈদের পরদিন বরিশাল-ঢাকা রুটে বিশেষ সার্ভিস পরিচালনা করে ৫সেপ্টেম্বর থেকে তা বন্ধ করে দিচ্ছে। অথচ দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঈদ পরবর্তি কর্মস্থলমুখি মূল জন স্রোত অব্যাহত থাকবে ৯সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নৌ পরিবহন সংস্থাটি অতীতের ধারাবাহিকতায় কর্মস্থলমুখি মানুষকে পৌছে দেয়ার ক্ষেত্রে নুন্যতম কোন ভূমিকা রাখছেনা এবারেও।
তবে উজানের ঢলের প্রবল স্রোতে এবার নৌপথ যথেষ্ঠ সমস্যা শংকুল। উত্তরাঞ্চলের প্রবল বন্যার স্রোত সাগরমুখি হবার মুখে মেঘনা ও এর ভাটির শাখা নদ-নদীগুলোতে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি করছে। বন্যার বহমান অতিরিক্ত বালু মিশ্রিত পানির স্রোতে অনেক নৌপথেই নিত্য নতুন ডুবো চড়ারও সৃষ্টি হচ্ছে। ভাটিমুখি ঢলের স্রোতের গতি ঘন্টায় প্রায় ৫নটিক্যাল মাইল। এসব বিষয়গুলো মাথায় রেখেই চালকদের নৌযান পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছেন বিআইডবিøউটিএ’র দায়িত্বশীল মহল। নৌযানের চালকগনও সুষ্ঠু হাইড্রোগ্রাফী জরিপের মাধ্যমে অবিলম্বে রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি নৌপথেই বয়া-বাতি সহ নৌ সংকেত ব্যবস্থা নিশ্চিত করনের দাবি জানিয়েছেন। নচে সুষ্ঠু নৌ পরিবহন ব্যবস্থা আরো ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
তবে এসব ঝুকি ও বিড়ম্বনার মধ্যেও নৌপথই এবারের ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখি মানুষের অন্যতম প্রধান অবলম্বন। আসন্ন ঈদ উল আজহার আগে পরে অন্তত দশ লাখ মানুষ রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করবে। যার সিংহভাগই নৌপথে চলাচল করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সে নৌপথ ও নৌযানে নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সহ আইন-শৃংখলা বাহিনী এবং বিআইডবিøউটিএ’কে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ওয়াকিবাহাল মহল।
তবে সড়ক পথে ঢাকার সাথে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় ঈদের আগে পরে প্রতিদিন দিন ও রাতে অন্তত ৩শ যাত্রীবাহী বাস চলাচল করবে। এছাড়াও মওয়ার শিমুলিয়ার অপর পাড়ের কাঠালবাড়ী থেকে প্রতিদিন অরো শতাধীক বাস বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গšতব্যে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ সহ বরিশাল-খুলনা রুটেও প্রতিদিন আরো প্রায় অর্ধশত বাস চলাচল করবে। তবে সময়মত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের পাশাপাশি এবারের প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়ক সহ উত্তরবঙ্গ মুখি বিভিন্ন মহাসড়কে যানবহন চলাচল খুব একটা নির্বিঘœ নাও হতে পারে। সড়ক ও জনপথ অধিদফ্তর প্রতিটি মহাসড়কে জরুরী রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ঈদের তিন দিন আগেই সবগুলো মহাসড়কে যানবাহন চলাচল নিরাপদ করার কথা জানিয়েছে। তবে গতকালও প্রবল বর্ষণে এসব সড়ক মহাসড়ক মেরামত কাজ যথেষ্ঠ ব্যহত হয়।
এদিকে আসন্ন ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিমানবন্দর বরিশালের আকাশ পথে বেসরকারী ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ৩১ আগস্ট ও ১সেপ্টেম্বর দুটি বিশষ ফ্লাইট সহ ঈদের আগের ৫দিনের সবগুলো ফ্লাইটের টিকেট বিক্রী শেষ হয়ে গেছে আরো এক সপ্তাহ আগে। সরকারী এয়ারলইন্সের কর্তাদের চোখ খুলে ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে বেসরকারী এ আকাশ পরিবহন সংস্থাটি ঢাকা-বরিশাল ৬৭এ্যরোনটিক্যাল মাইলের আকাশ পথে ৩হাজার ২শ টাকা থেকে সাড়ে ৭হাজার টাকায়ও টিকেট বিক্রী করেছে। তবে যথারিতি জাতীয় পতাকাবাহী রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থাটি বরিশাল সেক্টরে কোন বিশেষ ফ্লাইট রাখছেনা এবারের ঈদেও। বিমান ঢাকা থেকে সৈয়দপুর ও যশোর সহ দেশের অন্য সব সেক্টরেই বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছে ঈদের আগে পরে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।