রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
রামগড় (খাগড়াছড়ি) থেকে রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা : পার্বত্যাঞ্চলের গর্ব একটি বৈচিত্রময় দৃষ্টিনন্দন তীব্র প্রবাহমান খরস্রোতা নদী। সে ফেনী নদীর কুলঘেসে দেখতে অবিকল কলসীর আকৃতিতে গড়ে উঠেছে বলেই গ্রামটির নাম দেয়া হয়েছে কলসীমুখ। ১শ থেকে ১শত বিশ গজ দৈর্ঘ্যর প্রবেশ প্রথটির ভেতরটা অবিকল কলসীর আদলেই গড়া আর এ কারণেই গ্রামটি এখন খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার একটি ব্যতিক্রমী পর্যটন এলাকা হিসেবে বেশ পরিচিত। গ্রামের প্রবেশ মুখে পাহাড়ের উপরে স্থাপিত বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের লাচারীপাড়া বিওপি ক্যাম্প থেকে তাকালে মনে হবে এ যেন এক দৈত্যকার কলসীর প্রতিস্থাপন। উপজেলা সদর হতে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ২শত ৫০ একরের সীমান্ত গ্রামটিতে প্রায় ৫০ পরিবারের তিনশত উপজাতি মারমা-ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসবাস। তিন দিক থেকে ফেনী নদীর গতিপথ বেষ্টিত গ্রামটির পুরাটাই ভারতে গর্ভে। গ্রামে প্রবেশের পথে ১শ থেকে ১শত বিশ গজ প্রবেশ মুখের পূর্ব পাশে সম্প্রতি ফেনী নদীর পাহাড়ী ঢলে ধারাবাহিক তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে গ্রামটিতে প্রবেশ মুখে তথা কলসীর মুখের ভাঙন ঠেকানো না গেলে ভারতের গর্ভে বিলীন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার। ফেনী নদীর তীব্র প্রবাহমান খরস্রোতা থেকে গ্রামটিকে রক্ষা করা না হলে বাংলাদেশ থেকে গ্রামটি সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যাওয়ার আশংকা গ্রামবাসীর। প্রতিনিয়ত পানির স্রোতধারা কলসীর মুখে ধাক্কা দেয়ায় ধাপে ধাপে ভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া গ্রামটির উত্তর দিকে নতুন করে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।
কার্বারী অ্যাসোসেয়শনের সভাপতি আনন্দ মোহন ত্রিপুরা জানান, রামগড় উপজেলা বিভিন্ন এলাকা যেমন- লাচাড়ি পাড়া, বড়খেদা, কাশিবাড়ী, কার্বারী পাড়া, বল্টুরামটিলা, মন্দিরঘাট, পরশুরাম ঘাট, বৈদ্য পাড়া ডাক বাংলোঘাট এসব এলাকার নদীরপাড় রক্ষা খুব দ্রæত প্রয়োজন বলে মনে করেন। এদিকে আনন্দপাড়া, রামগড় বাজার ঘাট, থানা ঘাট, দা রোগা পাড়া, মহামুনী ও ফেনীরকুল সীমান্তে শহর রক্ষা বাঁধ হিসেবে নির্মিত সি সি বøকগুলি ফেনী নদীর পানিতে তলীয়ে যাচ্ছে। এক যুগ আগে অপরিকল্পিত ভাবে এসব সি সি বøক নির্মাণ করায় হুমকিত রামগড় শহর এমনটাই মনে করছেন বিশেজ্ঞরা।
গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি থিংথোয়াই মারমা জানান, কলসীর আকৃতিতে গড়া সমতল গ্রামটি এখন রামগড় উপজেলার একটি বৈচিত্রময় দৃষ্টিনন্দন কৃষি সমৃদ্ধ গ্রাম ও ব্যক্তিক্রমী পর্যটন গ্রামও বটে। তিন দিক থেকে সীমান্ত নদীঘেরা গ্রামটির প্রবেশ মুখের ধারাবাহিক ভাঙনে আমাদের অস্তিত্ব এখন হুমকীর মুখে। দ্রæত ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে হয়তো কোন এক সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবো বাংলাদেশ থেকে আমরা এখন বিচ্ছিন্ন এক জনপদের বাসিন্দা।
ওয়ার্ড মেম্বার থুইমং জানান, গ্রামটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গ্রামবাসির পক্ষ থেকে উর্দ্বতন সব মহলকে অবহিত করা হলেও প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছেনা। অথচ সামান্য কয়েক লাখ টাকার সিসি বল্ক স্থাপন প্রকল্প হাতে নিলে গ্রামটির প্রবেশ মুখের ভাঙন রোধ করা সম্ভব অন্যথায় গ্রামটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে দেখা দেবে সীমান্ত জটিলতা আর সেতু বা সংযোগ পূর্ণস্থাপনে লাগবে কয়েক কোটি টাকা।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল কাদের বলেন, কলসীর মুখে ভাঙনের খবর পেয়ে আমি এলাকটি সরজমিনে পরিদর্শন করেছি। ভাঙনটি রক্ষায় বিলম্ব হলে গ্রামটি বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের সহায়তা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল-মামুন মিয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, খবরটি শুনে আমি ভাঙনটি পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ করেছি। দ্রæত ভাঙনটি রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।