শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
মূল: হেরমেন হেসে
ভাষান্তর: বাসার তাসাউফ
তিব্বাই মরু অঞ্চলে ঈশ^রপ্রেমী সন্ন্যাসীদের জীবন সম্পর্কে পূর্বপুরুষদের বহু ভক্তি জাগানো ঘটনা থেকে প্রায়ই এ রকম বর্ণনা পাওয়া যায় যে, শয়তান কেমন করে নানারকম প্রলোভনের মাধ্যমে এইসব পরীক্ষিত ধর্মভীরুদের কামনাতাড়িত করতো। তবে সৃষ্টিকর্তার মহানুভবতাও এ রকম একজন সন্ন্যাসীকে যে প্রলোভনের তাড়নায় লোভাতুর করে তুলতে পারে, উদাহরণস্বরূপ সেরকম একটি ঘটনারই উল্লেখ করেন মিশরের পূণ্যবান মহাপুরুষ য়োহান।
হেলিওপোলিস শহরে একজন অবস্থাপন্ন লোক বাস করতেন। ঠিক একটা নিন্দাহ জীবন যাপন না করে তিনি বরং পৃথিবীর আনন্দময় জিনিসগুলো ভালোবাসতেন। সার্কাস ও হামাসে যেতেন তিনি। মহিলাদের পছন্দ করতেন এবং যেহেতু একজন আরামপ্রিয় ও শান্ত প্রকৃতির লোক ছিলেন, তাই তিনি বিশেষভাবে ঝুঁকে পড়েছিলেন ভোজন বিলাসে।
একদিন প্রচুর পরিমাণে আহার সম্পন্ন করার পর বেদনাপ্লুত হয়ে শুয়ে পড়তে হলো তাকে। এ সময় বিশ^প্রভুর হাত এমন গভীরভাবে স্পর্শ করলো এই সৎ ব্যক্তিটিকে যে, তিনি তার জীবনধারার অসারতা বিহŸলচিত্তে অনুভব করলেন। তখনই সিদ্ধান্ত নিলেন, সেই মুহূর্তে থেকে তিনি বেঁচে থাকবেন শুধু আত্মার পরিশুদ্ধির জন্য। অবিলম্বে নিকটবর্তী ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টানদের খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় নিজেকে এমন পরিবর্তন করলেন যে তিনি সেই মুহূর্ত থেকে পার্থিব জগতের সকল লোভ-লালসার প্রতি বিদায় জানাবার শপথ নিলেন, শপথ নিলেন প্রায়শ্চিত্তকারী একজন সন্ন্যাসীর মতো জীবনটা উৎসর্গ ও নিজেকে উপাসনার কাজে নিয়োজিত করতে। সে কালে তাপসরা যেমনটি করতেন লোকটিও তেমনই হেলিওপোলিস শহর ছেড়ে বেরিয়ে পড়লেন ভয়াল অরণ্যে এবং এক বিরাণ অঞ্চলে একটি পর্বতগুহা খুঁজে পেলেন। সেখানেই বাস করতে লাগলেন তিনি। নগ্ন হাতে প্রয়োজনীয় অতি সামান্য এক টুকরো জমি বপনোপযোগী করে তুললেন লোকটি। তারপর একমুঠো শস্য ও মসুর দানা ছিটিয়ে দিলেন সেখানে এবং ওই কাজের যৎকিজ্ঞিৎ ফসল থেকে জীবন বাঁচাতে লাগলেন। পূণ্যবান ঋষিদের মতো কখনই খাদ্যগ্রহণ করতেন না তিনি যতক্ষণ অকাশে সূর্য দেখা যেতো। বরং সূর্য অস্ত গেলে মাত্র তিনি কিছু খেয়ে নিতেন। অল্পকিছু অথবা ভিজিয়ে রাখা কিছু মসুরদানা। তারপর পাশের একটি ঝর্ণা থেকে পান করতেন কিছু জল। ধর্মপ্রাণ সাধুদের অনুকরণে তিনি ব্যাকুল হয়ে উঠলেন তপস্যা, স্তবসংগীত ও যোগ সাধনার ব্রতে।
তার এই ব্রত সাধনা বেশ আনন্দের সাথে পর্যবেক্ষণ করছিলো ছোট্ট এক দেবদূত। সাধু-সন্তানদের ওপর নজর রাখার কাজে তার মতো অন্যসব দূতের সাথে যে ওই প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থান করছিলো। অনুতপ্ত সন্ন্যাসীকে সহযোগিতা করার ইচ্ছা জন্ম নিলো ক্ষুদ্র দেবদূতের মনে। সৃষ্টিকর্তার নিকট তার ব্রত সাধনা ও প্রার্থনার সাক্ষী হয়ে থাকতে ওই ব্যক্তির অনুশোচনায় পূর্ণ দীর্ঘশ^াস ও অর্চনার কথাগুলো শোনার জন্য প্রায়ই সে অদৃশ্যভাবে তার কাছাকাছি অবস্থান নিতো। বহু দিন ধরে ওই সাধককে পর্যবেক্ষণ করার পর বুকে সাহস বাঁধলো দেবদূত, স্বর্গীয় সিংহাসনের সামনে উপস্থিত হলো এবং সৃষ্টিকর্তাকে বললো, ‘মরুভূমির মধ্যে আমি একজন সাধু ব্যক্তিকে চিনি, দীর্ঘদিন যাবৎ তোমার বন্দেগির নিমিত্তে যিনি অতি নি¤œমানের দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবন যাপন করে আসছেন। অনুমতি দিলে তোমার অফুরন্ত দয়ার নিদর্শনস্বরূুপ আমি সান্ত¡না ও আনন্দদায়ক পৌঁছে দিতাম ওর কাছে।’
তাঁর এ কথা শুনে বিশ^াধিপতি প্রশ্ন করলেন, ‘এই সাধু বিশেষভাবে এমন কী করে তুমি তাকে অন্যদের আগেই সন্তুষ্ট করতে চাও ?’
দেবদূত ভয়ার্ত সুরে বলল, ‘না। আসলে তেমন বিশেষভাবে কিছু করেন না তিনি। এমনই অবদমিত এবং নিষ্প্রভ হৃদয়ের মানুষ তিনি যে বিশেষভাবে কিছু করা সম্ভব নয় তার পক্ষে। বড়ো ভালো লাগে লোকটিকে আমার।’
মৃদু হাসলেন প্রভু। বললেন, ‘ঠিক আছে, অনুমতি দিলাম, ওকে খুশি করতে পারো তুমি। তবে আমার এই মানুষটিকে নষ্ট করে ফেলো না যেন।’
ক্ষুদ্র দেবদূত প্রভুর স্তুতি গাওয়া শুরু করলো এবং দ্রæত মরুভুমির উদ্দেশে রওয়ানা হলো যেখানে সেই সন্তাপী ঋষিরা বাস করতেন। মরুদিগন্তে সূর্য সবেমাত্র অস্তমিত হয়েছে। ধর্মভীরু লোকটি একমুঠো শুকনো মসুর ভিজিয়ে রাখার জন্য বাইরে আসছিলেন। দেবদূত তখনই বুঝতে পারলেন তিনি কী করতে যাচ্ছেন। সেখানে থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলো সে। পরদিন সন্ধ্যেবেলা সাধু পরিত্যাগ করলেন সেই শিলাখÐে যার ওপর বসে উপাসনায় মগ্ন থাকতেন তিনি এবং যার ওপর একটা গর্তের সৃষ্টি হয়েছিলো তার হাঁটুর ভারে। গুহার ভেতর প্রবেশ করলে তার নাকে এলো বহুদিন ধরে অনাঘ্রাতা চমৎকার এক খোশব্।ু প্রস্তর ফলকের ওপর তিনখানা রুটি দেখতে পেলেন তিনি। এগুলো ছিলো বরফের মতো সাদা, তুলোর মতো নরম এবং মধুর মতো সুমিষ্ট। রুটিগুলোর ঘ্রাণ গ্রহণ করলেন তিনি, সেগুলো নেড়েচেড়ে দেখলেন এবং একটুকরো রুটি ছিন্ন করে মুখে পুরলেন। তার মুখমÐলের ওপর এক প্রশান্তির জ্যোতি প্রবাহিত হলো। হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন তিনি। প্রথম রুটিখানা খেয়ে নিলেন। রুটি মধুর মতো মিঠে লাগলো তার কাছে। দ্বিতীয় রুটিখানার স্বাদ ছিলো পীচফলের মতো, জিহŸা ও দাঁতের মাঝে পাকা ফলের শাঁস যেন। তারপর তৃতীয় রুটিখানা ভক্ষণ করলেন তিনি যার খোশবু আরো বেশি গাঢ় এবং স্বাদ আনারসের মতো তৃপ্তিকর। সুস্বাদু এই খাদ্যের মাধ্যমে আশীর্বাদপ্রাপ্ত সন্তাপিত সাধু যেন এক স্বপ্নের মাঝে হাল্কা দীর্ঘশ^াস ছাড়লেন। অন্য একদিন তিনি তার অর্চনার অনুশীলন শুরু করলেন প্রভুর প্রতি কৃতজ্ঞচিত্তে। সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসলে তিনি অবশ্য সময় সময় সূর্যের দিকে তাকাতে লাগলেন এবং সেই রক্তিম গোলক দিগন্তে নিষ্প্রভ হয়ে আসা মাত্রই দ্রæত গুহার মধ্যে প্রবেশ করলেন প্রস্তর ফলকখানা দেখার জন্য। আশ্চর্য ব্যাপার! আবারো তিনখানা রুটি দেখতে পেলেন তিনি সেখানে এবং এগুলোর স্বাদ রসালো জাম ও দুর্লভ প্রজাতির আপেলের মতো। এই রুটিখানা খাওয়ার পর তাপসকে আবার একবার দীর্ঘশ^াস ছাড়তে হলো। তৃতীয় দিন দুপুর গড়িয়ে যাওয়া মাত্রই তপস্বী কখন সন্ধ্যে নামে তাই ভাবতে করতে লাগলেন এবং প্রবল অস্থিরতা দেখা দিলো তার মাঝে এই ভেবে যে, সেদিনকার রুটিগুলোর স্বাদ কেমন হতে পারে! এর মাঝে নিজেকে আবার সামলে নিলেন তিনি। প্রার্থনা করলেন এবং অবনত হয়ে পড়লেন। তবে শীঘ্রই আবার তাকে কখনো জাম, কখনো নাশপাতি, কখনো টাটকা মাখন অথবা ঠাÐা চিকেনের বিষয় ভাবতে হলো। খাদ্যগ্রহণের পর আবার সেই শিলাশিখরে আরোহণ ও তপস্যার কাজে তেমন ইচ্ছে হচ্ছিল না তার। বসে বসেই একটি সংক্ষিপ্ত প্রার্থনাস্তুতি আওড়ালেন তিনি এবং আয়েশে শুয়ে পড়লেন, একেবারে দিবাগমন পর্যন্ত ঘুমিয়ে নিলেন। স্বপ্ন দেখলেন কেবল সেই সব খাদ্যের যেগুলোর কথা বহু দিন চিন্তাও করেন নি। ভোরবেলা সন্ন্যাসী নিজেকে স্মরণ করলেন এবং প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে সিদ্ধান্ত নিলেন যেন তিনি তার কাছে আর কোনো রুটি না পাঠান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে উঠল না। তিনি নিজেকে এভাবে বোঝালেন যে তা হবে অকৃতজ্ঞতার শামিল। তার চেয়ে সকালে তিনি বরং রুটিগুলো কোনোটিই না খাওয়ার মনস্থির করলেন। তারপর দুপুরের দিকে তিনি তার প্রতিজ্ঞায় নমনীয় হলেন এবং ছোট্ট একখানা রুটি খাবার সিদ্ধান্ত নিলেন। তবে সন্ধ্যেবেলা অবশ্য তিনি দু’খানা রুটি খেলেন। বিশ্রামে যাওয়ার আগে তৃতীয় রুটিখানা সেখানেই পড়ে রইলো, যার শুধু খোশবুটুকু উপভোগ করলেন তিনি। অবশ্য ওই রাতে তিনি সামান্যই ঘুমোতে পারলেন। ঘন্টাখানেক পর উঠে পড়লেন। রুটিখানার দিকে তাকালেন, হাতে তুলে নিলেন ও আবার রেখে দিলেন এবং এর এক ঘণ্টা পর খাবেন বলে ভাবলেন।
ততক্ষণে উধাও হয়ে গেছে সেই রুটি সেখান থেকে।
অশুভ দিনের সূচনা হলো। কখনো একখানা রুটি অস্পৃষ্ট রেখে দিতে সফল হতেন তিনি, কখনো আবার খেয়ে ফেলতেন সবগুলোই। তবে অন্তর থেকে মোটেই সন্তুষ্ট ছিলেন না সাধু। উত্তম খাদ্যগ্রহণের ফলে তার চিবুকে বেশ রক্ত ও শরীরে শক্তির সঞ্চারণ হলো। তিনি স্বপ্ন দেখতে লাগলেন তার পছন্দ মতো খাবারের ভর্তি টেবিল, সুমিষ্ট মদিরার, ঈষদ্ষ্ণু সুবাসিত হামামের। অবশেষে কাজে ও উপাসনায় আস্তে আস্তে ভাটা পড়লো তার, শুরু হলো দিনভর সূর্যাস্তের অপেক্ষা। দীর্ঘ অলস সময় শুয়ে শুয়ে কাটাতে লাগলেন দিনে বিছানার ওপর। ক্ষুদ্র দেবদূত উদ্বেগের সাথে দেখছিলো তারই পরিবেশিত খাদ্যগুলো। তবে প্রায়শ্চিত্তকারী ওই সন্ন্যাসীর নিকট থেকে রুটিগুলো সরিয়েও তিনি চাইছিলেন তিনি যার ফলে ঈশ^রের মহিমা সম্পর্কে ওই ব্যক্তি মনে সন্দেহের উদ্রেক হতে পারে। তবে তখন থেকে তার জন্য সে মাত্র একখানা রুটি এবং আরো পরে মাত্র আধখানা রুটি সরবরাহ করতে লাগলো এবং তপস্বীর মনে যতো বেশি অসন্তোষের ভাব সৃষ্টি হতে লাগলো পরিমাণে ততো বেশি কম ও নি¤œমানের রুটি দেখতে পেলেন তিনি তার প্রতীক্ষিত সন্ধ্যাবেলায়।
যাহোক, এভাবে লোকটি আর রক্ষ করা হলো না। পার্থিব জীবনের গৃহকাতরতা প্রচÐভাবে নাড়া দিলো তাকে এবং সেই আকর্ষণই জয়ী হলো শেষে। দু’খানা রুটি সঙ্গে নিলেন তিনি, বেরিয়ে পড়লেন হেলিওপোলিস শহরের উদ্দেশ্যে তার পূর্বেকার স্বচ্চল জীবন ফিরে পেতে। বিহŸল চিত্তে দেখতে পেলেন তা দেবদূত, উড়ে গেলো প্রভুর সিংহাসনের নিকট এবং কান্নাজড়িতভাবে বিশ^পিতার পায়ে লুটিয়ে পড়লো।
এদিকে পূর্ণ অভিলাষে প্রবুদ্ধ তাপস চলতে লাগলেন দ্রæত পায়ে, পা চালাতে লাগলেন নৃত্যালয়ে। মাথায় তখন তার সুন্দর সব ছবি। তবে ক্রমশ ক্লান্ত হয়ে পড়লেন তিনি, সন্ধ্যেবেলা কিছু কুটির দেখে আনন্দিত হলেন। এইসব কুটিরে বাস করতেন আত্মশুদ্ধি কাজে নিমগ্ন অন্য সব খ্রিষ্টান সাধক, তাদের দিকে এগিয়ে গিয়ে অভিবাদন জানালেন তিনি এবং আশ্রয়ের অনুরোধ করলেন। ভ্রাতৃসূলভ আচরণে গ্রহণ করলেন তাকে ওরা, পেশতা ও জল দিলেন, তাকে সঙ্গে নিয়ে আহার করলেন, তারপর তাকে জিজ্ঞেস করলেন কোথা হতে তার আগমন। নিজের জীবন সম্পর্কে সবকিছু বর্ণনা করলেন তিনি, ওদের একজন বিরাট পূণ্যবান ব্যক্তি হিসেবে গণ্য হবার পর তাকে বিশেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলেন তপস্বীগণ। তার আশির্বাদ কামনা করলেন এবং আধ্যাত্মিক আলোচনায় নিমগ্ন হলেন তার সাথে। ভারাক্রান্ত চিত্তে শুনলেন তিনি ওদের কথা, তার মনে লুকানো তখন অন্যরকম সব ভাবনা। তবে ওদের কাছে সব কথা বলতে হলো তাকে এবং যখন তিনি তার দীর্ঘ মরুজীবন সম্পর্কে বর্ণনা করছিলেন সেসময় তার আত্মার নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠলো, ঈশ^রের মতো নিকটবর্তী হয়েছিলেন তিনি, আর এখন কতো দূরে সরে এসেছেন তাঁর থেকে।
শেষে সাধুদের মধ্য থেকে অল্প বয়সের এক ব্যক্তি তার নিকট পরামর্শ চেয়ে বললেন, ‘ওহে প্রিয়, পুণ্যবান পিতা, আমায় সাহায্য করো। আমার আত্মাকে অক্ষত অবস্থায় প্রভুর কাছে পৌঁছে দেয়া ছাড়া আমার আর কোনো অভিলাষ নেই। কিন্তু বয়সে আমি এখনো অপরিণত এবং মাঝে মাঝে আমি কামনার বশীভূত, ইন্দ্রিয়তাড়িত হয়ে পড়ি। তুমি, একমাত্র তুমিই যিনি বহু পূর্বেই এইসব লোভ-লালসার বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছো, আমায় বলতে পারো, কীভাবে আমি এই ইন্দ্রিয়যুদ্ধে জয়ী হতে পারি?’
তার এই কথা শুনে সন্নাসী কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন, নিজেকে ধিক্কার দিলেন এবং সঙ্গীদের সবার নিকট স্বীকার করলেন কী অবস্থায় পতিত হয়েছেন তিনি তখন। সবাই সান্ত¡না দেয় তাকে এবং তাকে নিয়ে একসাথে প্রার্থনা করলেন এবং কয়েকদিন তাদের সঙ্গে রাখলেন। তারপর তারা তাকে বিদায় দিলেন নতুন করে রক্ষা পাওয়া একজন লোক হিসেবে, যিনি কালক্ষেপণ না করে খুঁজে পেলেন তার পূর্বেকার গুহা। পাপস্খলনের প্রার্থনা করলেন, আবার ফিরে গেলেন পবিত্র পুণ্যময় জীবনে। আর কোনো রুটি দৃষ্টিগোচর হলো না তার, ঘামে ভেজা মুখে আবার সেই নুড়িবহুল জমিটুকু বনতে হলো তাকে।
স্বর্গের দূতটি কিন্তু অদৃশ্যভাবে থাকতে লাগলো তার পাশে এবং তপস¦ীর জীবনের শেষ মুহূর্তটি উপস্থিত হলে স্তবগান গাইতে গাইতে তার মুক্ত আত্মা বয়ে চললো স্বর্গপানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।