Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রাখাইনে ফের সামরিক অভিযান

কথিত মুসলিম বিদ্রোহী এবং বিচ্ছিন্নতাকামীদের নির্মূল করণ

| প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে কথিত মুসলিম বিদ্রোহী এবং বিচ্ছিন্নতাকামীদের নির্মূল করতে সার্জিক্যাল অপারেশন শুরু করেছে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী। দক্ষিণ এশীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম সাউথ এশিয়া মনিটর এই খবর জানিয়েছে। জাতিসংঘের আশঙ্কা, মিয়ানমার এথনিং ক্লিনজিং করতে পারে। এদিকে রাখাইনের অভিযান থেকে বাঁচতে শত শত রোহিঙ্গা পালিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয়প্রার্থী হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা অন্তত ৫শ’। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা চলতি মাসের ১২ তারিখ জানিয়েছিল, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের সুনির্দিষ্ট অঞ্চলে নতুন করে কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানকার সেনা-গণতান্ত্রিক ডিফ্যাক্টো সরকার। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছিল, নতুন করে অভিযান চালানোর স্বার্থে সেখানে মোতায়েনকৃত সেনার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এবার সাউথ এশিয়া মনিটর-এর প্রতিবেদক ল্যারি জাগান জানাচ্ছেন, গত বৃহস্পতিবার ৩৩তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের মোতায়েন শুরু হয়। খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেও হেলিকপ্টারে করে এসব সৈন্যকে রাজ্যের রাজধানী সিত্তইতে নামানো হয়। পরদিন তাদেরকে মোতায়েন করা হয় মংডুতে। ল্যারি জাগান স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানিয়েছেন, মংডুতে নামার পর থেকেই তারা ওই এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। সামরিক বাহিনীর অক্টোবর অভিযানে রাখাইনে পরিকল্পিত ধর্ষণ, খুন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে মিয়ানমার। এমন সময় সামরিক অভিযান শুরু হলো। গত বছর নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর সামরিক বাহিনী ওই অভিযান চালিয়েছিল। অক্টোবরের সেই দমন অভিযানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার খবরে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-ধর্ষণ আর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার তথ্যপ্রমাণ হাজির হয়। বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় নিপীড়নের শিকার প্রায় ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা। পরে ইউএনএইচসিআর-এর বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইনে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের যথাযথ সহায়তা না দিলে তারা আবারও নিপীড়িত হতে পারে। নোবেল বিজয়ী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকার অবশ্য রোহিঙ্গা নিপীড়নের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। অক্টোবরের অভিযান সত্তে¡ও ওই অঞ্চলে থেমে থেমে সহিংসতা চলছে। সরকারের দালাল সন্দেহে গ্রামে ডজন খানেক খুন এবং অপহরণের জন্য বিদ্রোহীদের অভিযানের অজুহাত হিসেবে হাজির করেছে মিয়ানমার। গত বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে আরও কয়েকশ রোহিঙ্গা পালিয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে মুসলিম রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের কারণে অনেকেই পালিয়ে যাচ্ছে। সাউথ এশিয়া মনিটরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমার সেনাবাহিনী বা তাতমাদাও মৌখিকভাবে উত্তর রাখাইনের গ্রামবাসীদেরকে উত্তরের ম্যায়ু পার্বত্য এলাকায় প্রবেশ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। কারণ তারা ওই অঞ্চলে শুদ্ধি অভিযান চালাতে যাচ্ছে। সামরিক বাহিনী মনে করছে, এখানেই সন্ত্রাসীরা লুকিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। কয়েক মাস ধরে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী এই এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। তারা সন্দেহভাজন মুসলিম জঙ্গিদের খুঁজছে বলে সামরিক সূত্র জানিয়েছে। বর্তমানে এসব অভিযানে নতুন করে ৫০০-এর বেশি সৈন্য যোগ দিয়েছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের আলাদা কোনও জাতিগোষ্ঠীই মনে করে না। বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত ওই জনগোষ্ঠীকে তারা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করে দায়িত্ব অস্বীকার করতে চায়। তবে রোহিঙ্গারা নিজেদের মিয়ানমারের নাগরিক বলেই জানে। নাগরিকত্বকে তারা অধিকার হিসেবেই দেখে। তবে নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে গিয়েও তারা অজ্ঞাত হামলার শিকার হচ্ছেন বলে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। চলতি মাসে দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয় রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিককে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। মংদাওয়ের বুথিদংয়ের দুই দিন ছিলেন সাংবাদিকরা। এরপর অভিযুক্ত এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। সাংবাদিকদের অনুরোধে দেখানো হয় কিয়ার গং তং এলাকাও। তবে সময়ের অভাবের অজুহাত দেখিয়ে সব স্থানে নেয়া হয়নি তাদের। এশিয়া মনিটর, বিবিসি, এপি, এএফপি, রয়টার্স।



 

Show all comments
  • selina ১৮ আগস্ট, ২০১৭, ১২:৫০ পিএম says : 0
    Urgently needs meeting. of security. council of UN to save Muslim community of. Myanmar.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাখাইন

১৮ অক্টোবর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ