Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কালো টাকার দৌরাত্ম্য কমাতে বদ্ধপরিকর ভারত

| প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : স্বাধীন দেশ হিসেবে ৭০ বছর পার করেছে ভারত। দীর্ঘ এ সময়ের মধ্যে ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও অর্থনীতি উদার করেছে দেশটি। এর সুবাদে ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম দ্রæত বর্ধনশীল অর্থনীতি। এ অবস্থায় দেশের স্বার্থ রক্ষায় কালো টাকার দৌরাত্ম্য কমিয়ে আনার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৭১তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লায় দেয়া ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নোট বা মুদ্রা রহিতকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন-উত্তর সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে ১ দশমিক ৭৫ লাখ কোটি রুপি নগদ অর্থ জমা পড়ে। এছাড়া ১৮ লাখের বেশি মানুষের সামঞ্জস্যহীন আয় সরকারের নজরদারির বাইরে রয়েছে। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, প্রকাশিত সম্পদের তুলনায় বাস্তবিক অর্থে এদের সম্পদের পরিমাণ অনেক বেশি। এ তালিকায় এক লাখের মতো মানুষ রয়েছেন, যারা জীবনে কখনই কর দেননি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ ও খেটে খাওয়া মানুষের সম্পদ লুটেরাদের শান্তিকে ঘুমোতে দেয়া হবে না। গত নভেম্বরে ৫০০ ও ১ হাজার রুপির নোট বাজার থেকে প্রত্যাহারের পর ৩ লাখ কোটি রুপির মতো হিসাব-বহির্ভূত অর্থ ব্যাংক ব্যবস্থায় আবার ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, সরকারের কোনো গবেষণা থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়নি; বাইরের বিশেষজ্ঞদের মত এটি। প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ নভেম্বর ভারত সরকার মুদ্রা রহিতকরণের ঘোষণা দেয়। এর আওতায় মহাত্মা গান্ধী সিরিজের ৫০০ ও ১ হাজার মূল্যমানের ব্যাংক নোট প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। সরকারের দাবি ছিল। এ ধরনের পদক্ষেপের সুবাদে অবৈধ কার্যক্রম ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ করা যাবে। তবে সরকারের হঠাত্ নেয়া সিদ্ধান্তে বাজারে নগদ অর্থের ঘাটতি দেখা দেয়; কমে যায় অর্থনৈতিক উৎপাদন। গোটা অর্থনীতিকেই এর মাশুল গুনতে হয়। অবশ্য ভারত সরকার বলছে, এ ধরনের উদ্যোগের ফলে দেশে কালো টাকার দৌরাত্ম্য অনেকটাই কমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, মুদ্রা রহিতকরণ পদক্ষেপ গ্রহণের পর ব্যাংকে জমা পড়া অর্থের মধ্যে ১ দশমিক ৭৫ লাখ কোটি রুপি নিয়ে সরকার তদন্তে নেমেছে। এছাড়া ২ লাখ কোটি রুপির বেশি কালো টাকা ব্যাংকগুলোয় জমা থাকার খবর পাওয়া গেছে। এ ধরনের অর্থ জমা করতে আসা গ্রাহকদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে। নতুন করে কালো টাকা তৈরি হচ্ছে কিনা, তা জানতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। শুধু কালো টাকা নয়, সার্বিকভাবে দুর্নীতি কমিয়ে আনার পক্ষে জোর দিচ্ছে ভারত। এর ধারাবাহিকতায় ১ দশমিক ৭৫ লাখ শেল কোম্পানি বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কারণ কালো টাকার মালিকরা এসব কোম্পানিতেই তাদের অবৈধ সম্পদ ও অর্থ লুকিয়ে রাখে। মুদ্রা রহিতকরণের সময়ে এ রকম তিন লাখ শেল কোম্পানির হদিস পেয়েছে ভারত সরকার। উল্লেখ্য, কর ফাঁকি দিতে নামমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোম্পানি খোলা হয়। এসব কোম্পানি সরাসরি কোনো ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্পন্ন করে না। এরাই মূলত শেল কোম্পানি হিসেবে পরিচিতি পায়। মোদি বলেন, জানলে অবাক হবেন, একই ঠিকানা ব্যবহার করে ৪০০টি শেল কোম্পানি খোলা হয়েছে। এসব কোম্পানি কোনো ধরনের নজরদারির মধ্যে নেই। বরং সরকারি কর্মকর্তা ও কর ফাঁকিবাজদের যোগসাজশে কোম্পানিগুলো বহাল তবিয়তে টিকে রয়েছে। মোদি বলেন, দেশের সম্পদ যারা চুরি করেছে, তাদেরকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি ১ ঘণ্টার বক্তৃতায় বাস্তবায়িত একক কর ব্যবস্থা গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি) নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, জিএসটি পুরোপুরি বাস্তবায়নের পর চেক পোস্ট সরিয়ে নেয়া হবে। এর ফলে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সময় সাশ্রয় করা যাবে। ইকোনমিক টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ