পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ২০ জেলায় বন্যায় প্রায় ছয়লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। বন্যার্তদের জন্য সরকারি ত্রাণ তৎপরতা নিয়ে ফাঁকা আওয়াজ না দিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী।
গতকাল সোমবার চলমান বন্যা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে রাজধানীর মহাখালীতে এক সংবাদ সম্মেলনে মায়া এ কথা বলেন। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপি নেত্রী গত রোববার এক বিবৃতিতে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় শুধু মুখের কথা ছাড়া সরকারের কার্য্কর কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ আনার পর একথা বললেন ত্রাণমন্ত্রী। চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় দফার বন্যার সবশেষ পরিস্থিতি জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে মায়া বলেন, বিদেশে বসে ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে কোনো লাভ হবে না। আমরা বন্যা প্লাবিত মানুষের পাশে আছি। মন্ত্রী বলেন, আপনি বা আপনার নেতারা কোথায় আছেন, সেটা জনগণ ঠিকই দেখতে পাচ্ছেন। আপনাদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের সামর্থ না থাকলে আমাদের কাছ থেকে ত্রাণ সমাগ্রী নিয়ে হলেও জনগণের পাশে দাঁড়ান।ওই বিবৃতিতে খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেছিলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় কোনো জরুরি ত্রাণ তৎপরতা নেই। বন্যা দুর্গত মানুষকে নিরাপদে উঁচু জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা এখনও দেখা যাচ্ছে না। সরকারের লিপ সার্ভিস ছাড়া এই ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলায় বাস্তব কোনো সার্ভিস নেই। বিএনপির নেত্রীর এ অভিযোগ নাকচ করে ত্রাণমন্ত্রী মায়া বলেন, আমরা প্রত্যেকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছি। প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত বন্যা ও ত্রাণ কার্যক্রমের খোঁজখবর নিচ্ছেন, আমাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। যতগুলো দুর্যোগ আমরা মোকাবেলা করেছি, ততবারই বলেছি সকল দলমত নির্বিশেষে সবাই এই দুস্থ মানুষদের পাশে এসে দাঁড়াতে। কিন্তু ওইভাবে কারো সাড়া আমরা পাইনি।ত্রাণমন্ত্রী বলেন, নেত্রী (খালেদা জিয়া) লন্ডনে বসে যে বিবৃতি দিয়েছেন আমি অত্যন্ত হতাশ হয়েছি। উনি তো আগের বন্যায়ও কোথায় যাননি। এখন উনি বিদেশে বসে কি করছেন সবাই জানি। আমি অনুরোধ করব আপনি চলে আসেন। মানুষের পাশে দাঁড়ান, যেটা দরকারৃ এসব বাইরে বসে ফাঁকা আওয়াজ না দেওয়াই ভালো, এখন মানুষ কিন্তু অনেক সজাগ-সচেতন।
বন্যায় ১৯৮৮ সালে বিপর্যের কথা স্মরণ করে মায়া বলেন, ইনশাল্লাহৃ ৮৮ সালের চেয়ে বড় বন্যা হলেও আমি বিশ্বাস করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন, যে মজুদ আমাদের রয়েছে, আমরা মোকাবেলা করতে পারব, আমাদের সঙ্কট নেই। চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় দফার বন্যায় এ পর্যন্ত ২০ জেলার পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকার তিন লাখ ৬৮ হাজার ৫৮৬ জন মানুষকে ৯৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, উজানের দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও ভুটানে মারাত্মক বন্যার বিষয়টি মাথায় রেখেই সরকার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। আমরা উজানের দেশের বন্যা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রাখছি। উজানের দেশগুলোতে বন্যা হলে ভাটির দেশ হিসেবে উজানের প্রভাব আমাদের উপর পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। মন্ত্রী জানান, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নেত্রকোণা, সিলেট, সুনামগঞ্জ,খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিসহ ২০ জেলার ৩৫৬টি উপজেলার ৩৫৮টি ইউনিয়ন দ্বিতীয় দফার এই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। মাঝে কয়েকদিন বিরতি দিয়ে অগাস্টের শুরু থেকে দ্বিতীয় দফার এই বন্যা শুরু হয়, যাতে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ ছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।