বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পাহাড় কাটা ও পাহাড়ের ঢালে অবৈধ বসতি গড়ে তোলার সাথে জড়িতদের কঠোরভাবে প্রতিরোধের আহবান জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, দখলদাররা দলীয় লোক হলেও তাদের ছাড়া হবে না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে অবৈধ কাজের সুযোগ নেই। তারা যতই প্রভাবশালী হোক পাহাড় থেকে অবৈধ বসতি সরাতে হবে। মন্ত্রী রোববার সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পাহাড় ও ভূমি ধস মোকাবিলায় জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে আয়োজিত র্যালীর শুরুতে এ কথা বলেন। তবে মন্ত্রীর এ নির্দেশনা কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ ১৫ এপ্রিলের মধ্যে অবৈধ বসতি থেকে সরে যাওয়ার সময় বেধে দিলেও প্রশাসনের ওই নির্দেশনা মানেনি কেউই। সরকারি হিসেবে এখনও ২৮টি পাহাড়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে ৬৮৪টি পরিবারের কয়েক হাজার সদস্য।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মন্ত্রী মায়া বলেন, এ বছর পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের ঢালে বসবাসকারীদের অবিলম্বে সরে যেতে হবে। অবৈধভাবে পাহাড় কাটায় জড়িদের দলীয় পরিচয় বা প্রভাব না দেখে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন তিনি। তিনি গত কয়েক বছরের পাহাড় ধসের বেদনায়ক ঘটনা উল্লেখ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের ঢালে বসবাস না করতে স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানান। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শাহ কামাল, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিভিন্ন এনজিও, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকগণ র্যালীতে অংশগ্রহণ করেন। র্যালীটি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস থেকে শুরু হয়ে কাজির দেউড়ি, আলমাস সিনেমা ও ওয়াসার মোড় হয়ে হয়ে পুনরায় সার্কিট হাউসে এসে শেষ হয়।
প্রসঙ্গত প্রতিবছর বর্ষার শুরুতে পাহাড়ে বেঘোরে মৃত্যু ঠেকাতে অবৈধ বসতি উচ্ছেদে তোড়জোড় শুরু করে প্রশাসন। তবে বর্ষা চলে গেলে বিষয়টি আবার চাপা পড়ে যায়। নতুন নতুন পাহাড়ে গড়ে উঠে নতুন নতুন বসতি। এবারও অবৈধ বসতি উচ্ছেদে নানা তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তবে বাস্তবে এখনও উচ্ছেদ অভিযান পুরোদমে শুরু করা যায়নি। উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। পাহাড় ধস এড়াতে প্রশাসনের বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে কেউই পাহাড় ছাড়েনি। চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা মিলিয়ে ২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণভাবে ৬৮৪টি পরিবার বসবাস করছে। এসব পাহাড়ের অধিকাংশের মালিক রেলওয়ে, চট্টগ্রাম ওয়াসা, গণপূর্ত বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, বনবিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। প্রভাবশালীরা এসব পাহাড় দখল করে সেখানে বসতি গড়ে তুলে। আর তাতে ভাড়া থাকেন লোকজন। এসব অবৈধ বসতিতে রয়েছে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ। এর সাথে প্রভাবশালীরা জড়িত থাকায় অভিযান চালাতে পারছে না প্রশাসন। এদিকে এখনও পাহাড় কাটা থামেনি। জেলার পাশাপাশি মহানগরীতেও চলছে নির্বিচারে পাহাড় কাটা। সরকারি সংস্থার বিরুদ্ধেও পাহাড় কাটার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামকে উদ্দেশ্য করে পাহাড় কাটা প্রতিরোধে সিডিএর ব্যর্থতাকে দায়ী করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।