Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কৃষক ও খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে সরকার ত্রাণমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : উত্তরাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাড়ি ভিটা উঁচুকরণ ও স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। সরকার প্রত্যেকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে। সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পর্যাপ্ত অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী মন্ত্রণালয়ের হাতে রয়েছে বলে জানান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট ও বেড়িবাঁধ মেরামত ও নির্মাণে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে কৃষকদের কৃষিবীজ ও সার বিতরণ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খামারিদের পাশে দাঁড়ানো সরকারের এখন প্রধান কর্তব্য। সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি। যেসব এলাকায় বেড়িবাঁধ এখনো ঝুঁকির মধ্যে আছে সেগুলো দ্রæত মেরামতের জন্য মন্ত্রী অনুরোধ করেন।
মায়া চৌধুরী বলেন, এ বছর হাওরে অকাল বন্যা, ঘূর্ণিঝড় মোরা, পাহাড় ধস ও উত্তরাঞ্চলে আগাম বন্যার মতো চারটি বড় দুর্যোগ সরকার সাফল্যের সাথে মোকাবিলা করছে। সরকারের পূর্বপ্রস্তুতি, দুর্যোগকালে তাৎক্ষণিক ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের কারণে প্রত্যেকটি দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি নেমে আসায় মধ্যাঞ্চল ও নি¤œাঞ্চলে পানি বাড়তে পারে। সরকার এসব জেলার প্রশাসনকে সার্বিক প্রস্তুতি রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব এলাকায় আগাম খাদ্যশস্য ও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, সরকার প্রত্যেকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত বন্যা ও ত্রাণ কার্যক্রমের খোঁজখবর নিচ্ছেন। মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে থেকে বন্যা পরিস্থিতি ও ত্রাণ বিতরণ তদারকি করছেন। মধ্যাঞ্চল ও নি¤œাঞ্চলের জেলাসমূহের জেলা প্রশাসকদের অতি দ্রæত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে বন্যার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি গ্রহণ করতে তিনি অনুরোধ করেন।
মন্ত্রী বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ইজিপিপি (অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান) প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। পানি নামতে শুরু করায় উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে। বন্যার পানি এখন মধ্যাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে চাপ দেবে। এসব এলাকায় জেলা প্রশাসকদের আমি অনুরোধ করব অতি দ্রæত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে বন্যার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি গ্রহণ করতে। মন্ত্রী বলেন, বন্যার পর সিলেট, মৌলভীবাজার ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। বন্যা প্লাবিত মানুষের জন্য এ যাবৎ ১২ হাজার মেট্রিক টন চাল, ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার দিয়েছি। প্রত্যেক জেলায় পানি বিশুদ্ধকরণ মোবাইল গাড়ি পাঠিয়েছি। এ ছাড়া ৩ হাজার বান্ডিল ঢেউটিন ও ৯০ লাখ টাকা দিয়েছি ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য। আমরা জেলা প্রশাসকদের বলেছি, তাদের চাহিদামতো প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য, আর্থিক বরাদ্দ দেয়া হবে। একটি লোকও খাবারের কারণে যাতে কষ্ট না পায় এটা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ত্রাণসমগ্রী বিতরণে যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ করেছি। এনজিওদের ঋণের কিস্তি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করেছি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সরকার কৃষক ও খামারিদের ঘুরে দাঁড়াতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সহযোগিতা দেয়া হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত ও নির্মাণ, রাস্তাঘাট ও বেড়িবাঁধ মেরামত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামত, কৃষকদের কৃষিবীজ ও সার বিতরণ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খামারিদের পাশে দাঁড়ানো সরকারের এখন প্রধান কর্তব্য। আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাই।
বিএনপি জনগণের দুঃখ-কষ্ট নয়, নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত : মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, বন্যায় অসহায় মানুষদের সাহায্য করা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে ফাঁকা আওয়াজ দেয়া হয়েছে। বিএনপি নেত্রী ত্রাণ বিতরণ দূরে থাকুক, বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমিয়েছেন। আর ওনার মহাসচিব ঢাকায় বসে বড় বড় কথা বলছেন। তারা জনগণের দুঃখ-কষ্ট নয়, নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছেন। আমি তাদের উদ্দেশে বলব, ফাঁকা আওয়াজ না দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান। আপনাদের সামর্থ্য না থাকলে আমাদের কাছ থেকে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যান।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো: শাহ কামাল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ত্রাণমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ