মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ব্রিটেনে পর্নোগ্রাফির শিকার হয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক এ ধরনের ঘটনায় প্রাণ দিতে হয়েছে কমপক্ষে ৬ নারী ও বালিকাকে। তারা হলেন হান্নাহ পিয়ারসন (১৬), জেন লংহার্সট (৩১), জোয়ানা ইয়েটস (২৫), বেকি ওয়াটস (১৬), জর্জিয়া উইলিয়ামস (১৭) ও এপ্রিল জোনস (৫)। তাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে ঘাতকরা। এসব ঘাতক প্রত্যেকেই পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত ছিল। এরই এক পর্যায়ে তারা এসব নারী ও বালিকাকে তাদের শিকারে পরিণত করে। স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে তারা যেসব পর্নো ছবি দেখেছিল, তাতে অভিনেতা অভিনেত্রীরা যেসব কুরুচিপূর্ণ আচরণ করেন, তারাও এসব নারী ও বালিকার ওপর তা প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছিল। এভাবে নরপিশাচদের হাতে জীবন হারানো নারীদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অনলাইন ডেইলি মেইল। তাতে বলা হয়েছে, এক কৃষকের মেয়ে হান্নাহ পিয়ারসন (১৬)। সে ছিল তার স্কুলের ক্যাপ্টেন। অ্যানোরেক্সিয়া নামের জটিলতার সঙ্গে দু’বছর লড়াই করার পর সে আবার নতুন করে সব শুরু করছিল। কিন্তু তার সামনে কি আছে তা কেইবা জানতো। গত বছর জুলাইয়ে ভীষণ গরম এক সন্ধ্যায় তার জীবন সংক্ষিপ্ত হয়ে আসে। তার চেয়ে ৮ বছরের বড় জেমস মর্টনের হাতে তাকে জীবন হারাতে হয়। পরে দেখা যায় মর্টন ছিল যৌনতা নিয়ে ভীষণ উত্তেজিত। সে হান্নাকে প্রথমে এলকোহল প্রয়োগ করে। এরপর সে পর্নো ছবিতে দেখেছে এমন একটি অশালীন দৃশ্যে তাকে ব্যবহার করে। তারপর তাকে হত্যা করে। এ নিয়ে মামলা হয়েছে। সেখানে শুনানিতে জানা গেছে এর আগেও একজন নারী পার্টনারকে সে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওই নারীর মতো সৌভাগ্যবতী নয় হান্নাহ। এ নিয়ে নটিংহ্যাম ক্রাউন কোর্টে বিচারে তাকে ১২ বছরের জেল দিয়েছেন বিচারক জাস্টিস কার। ওদিকে ২০০৩ সালের এপ্রিলে ওয়েস্ট সাসেক্সে উডল্যান্ডে পুড়ে যাওয়া একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই লাশটি ছিল মেধাবী শিক্ষিকা ও সঙ্গীতজ্ঞ জেন লংহার্সটের। যখন তার লাশ উদ্ধার করা হয়, তখন তাতে পচন ধরেছিল। এ ঘটনায় পুলিশ অনুসন্ধান শেষে দেখতে পায় এর সঙ্গে জড়িত রির্ডি নামক স্থানের গ্রাহাম কোটস (৩৯)। সে লংহার্সটের প্রিয় বান্ধবী লিসার প্রেমিক। লিসা ও গ্রাহাম যে বাড়িতে একসঙ্গে অবস্থান করতো সেই বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল লংহার্সটের। এক পর্যায়ে লংহার্সটকে বেঁধে ফেলে গ্রাহাম। তার শ্বাসরোধ করে। নিয়ে যায় একটি স্টোরেজ ইউনিটে। সেখানে তার ওপর চালায় নৃশংস পাশবিকতা। এরপর তাকে হত্যা করে। এ ঘটনার বিচারেও বেরিয়ে আসে পর্নোগ্রাফি। বলা হয়, লংহার্সটকে হত্যা করার আগের দিন গ্রাহাম ভয়াবহ সব পর্নো ছবি ডাউনলোড করে। আদালতে গ্রাহাম বলেছে, দুর্ঘটনায় মারা গেছেন লংহার্সট। তার দাবি, দু’জনের সম্মতিতে তাদের যৌন সম্পর্ক হয়েছিল। কিন্তু আদালত তা আমলে নেয়নি। বর্তমানে জেলে রয়েছে গ্রাহাম। বৃস্টলে একটি ফ্লাটে বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে বসবাস করতেন আর্কিটেক্ট জোয়ানা ইয়েটস। তাদের পাশেই থাকতো ভিনসেন্ট তাবাক নামে এক নোংরা মনের যুবক। ডাচ ইউ যুবক ইন্টারনেটে পর্নো ছবি দেখে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে জোয়ানার দিকে। ২০১০ সালের বড়দিনে সমারসেটে একটি সড়কের পাশে অর্ধনগ্ন অবস্থায় হিমায়িত লাশ উদ্ধার করা হয় জোয়ানার। এর আট দিন আগে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন। তার পোস্টমর্টেম রিপোর্টে দেখা যায়, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। দেহের বিভিন্ন স্থানে ৪৩টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় তাবাককে অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু সে অস্বীকার করে। সেও দাবি করে, দুর্ঘটনায় মারা গেছে জোয়ানা। সে জোয়ানাকে কোমল পানীয় পান করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। এক পর্যায়ে তাবাক তাকে চুমু দেয়ার চেষ্টা করে। তখন তাকে চুপ করানোর চেষ্টা করে সে। এতে দুর্ঘটনাবশত জোয়ানা মারা যায়। কিন্তু তদন্তে দেখা যায়, তাবাক ছিল ইন্টারনেটে ভয়াবহ রকম পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। তার কম্পিউটারে পাওয়া গেছে এক নারীর আপত্তিকর ছবি, যাকে দেখতে হুবহু জোয়ানার মতো। তাছাড়া তাবাকের ল্যাপটপে পাওয়া গেছে শিশুদের পর্নোগ্রাফি। এ ঘটনায় তাবাককে জেলে পাঠানো হয়েছে। টিনেজার বেকি ওয়াটস মারা যায় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে। বৃস্টলে তার নিহের বেডরুমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তাকে। পেটে ১৫ বার ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর তা কেটে টুকরো টুকরো করে ভরা হয় প্লাস্টিকের ব্যাগে। তা সংরক্ষণ করা হয়। পরে বাগানে গাছের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়। তাকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয় তার সৎভাই নাথান ম্যাথিউ ও তার গার্ল ফ্রেন্ড শাউনা হোয়ারে। এ ঘটনা অনুসন্ধানে গিয়ে পুলিশ ম্যাথিউয়ের ল্যাপটপে পায় ২৩৬টি পর্নো ছবি ও ২১টি পর্নো সিনেমা। ৬ বছর ধরে সে এমন ভিডিও ডাউনলোড করে যাচ্ছিল। আদালতে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলÑ কখন সে পর্নো ছবি দেখে। জবাবে ম্যাথিউ বলেছে, প্রায় দিনই। অন্যদিকে ২০১৩ সালে শ্রোপশায়ারে ওয়েলিংটনের বাড়িতে একটি ফটোশুটের জন্য পারিবারিক বন্ধু জেমি রেনল্ড আমন্ত্রণ জানায় জর্জিয়া উইলিয়ামসকে। কিন্তু সেখানে কি ঘটতে যাচ্ছে তা তিনি আন্দাজ করতে পারেননি। কিন্তু জেমি ছিল ভয়ঙ্কর রকমভাবে পর্নো আসক্ত। তার কম্পিউটারে পাওয়া গেছে ১৬৮০০ পর্নো স্টিল ছবি ও ৭২টি পর্নো সিনেমা। এক পর্যায়ে তার চোখ পড়ে জর্জিয়ার দিকে। তাকে শিকারে পরিণত করে সে। গলায় রশি পেঁচিয়ে জর্জিয়াকে পোজ দিতে উদ্বুদ্ধ করে রেমন্ড। এর পরই তা টেনে তাকে হত্যা করে সে। পুলিশ একটি ছবি উদ্ধার করেছে। তাতে দেখা যায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসছেন জর্জিয়া। এ সময় তিনি যে বক্সের ওপর দাঁড়িয়ে এই পোজ দেন তা অকস্মাৎ লাথি দিয়ে সরিয়ে দেয় রেমন্ড। ওয়েলসের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী এপ্রিল জোনসকে অপহরণ করা হয় ২০১২ সালে। সর্বশেষ তাকে দেখা যায় মার্ক ব্রিজার নামে একজনের ভ্যানে। তার কাছে হার্ডকোর পর্নো ছবির যেন একটি লাইব্রেরি উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ বলেছে, এর মধ্যে বেশির ভাগেই যা প্রতিফলিত হয় তাহলো সে শিশু পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। সেই এপ্রিলকে একটি ছবির অভিনেত্রীর মতো আচরণ করতে বাধ্য করে। এরপর তাকে হত্যা করে। ডেইলি মেইল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।