Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীন নমনীয় হলেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে কঠোর যুক্তরাষ্ট্র

| প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : রফতানিতে বিশেষ সুবিধা পেতে চীনের অন্যায্য ভর্তুকি ও অর্থনীতি বিরুদ্ধ শিল্প নীতিমালার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়ে অটল অবস্থানে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এ কঠোর মনোভাব থাকলেও দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে নমনীয় ভূমিকায় রয়েছে বেইজিং। শুধু মার্কিন পণ্য আমদানি বৃদ্ধিই নয়, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিও কমিয়ে আনতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ রবার্ট লাইটিজার এক সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন, চীন যাতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডবিøউটিও) নীতিমালা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করে সে বিষয়ে জোর তৎপরতা শুরু করবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। ‘কেভিন ম্যাককোলাহ রেডিও’তে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি আরো বলেন, নিজেদের দেশে কর্মসংস্থান ও সম্পদের পাহাড় গড়ার উদ্দেশ্য নিয়ে চীন তাদের শিল্প নীতিমালা তৈরি করেছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা তাদের কোনোভাবেই অন্যায্য পথে চলতে দেব না। মার্কিন ইস্পাত ব্যবসা শিল্পে দীর্ঘ সময় আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা লাইটিজার আশির দশকে ডেপুটি ইউএসটিআর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বলেন, চীন ডবিøউটিওর নীতিমালা ভঙ্গ করেছে এ রকম ভূরি ভূরি উদাহরণ রয়েছে। উৎপাদন খরচের চেয়ে পণ্যের মূল্য কম নির্ধারণ, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্যায্যভাবে ভর্তুকি প্রদান ও অর্থনীতি বিরুদ্ধ নীতিমালা এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। গত সপ্তাহে চীনের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের দ্বিপক্ষীয় অর্থনীতি-বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চীনের মাত্রাতিরিক্ত ইস্পাত উৎপাদন হ্রাস অথবা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে দেশটির সেবা খাত উন্মুক্ত করা নিয়ে চুক্তি সম্পন্নের কথা থাকলেও তাতে ব্যর্থ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এমন মন্তব্য করা হলো। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-চীন ক¤িপ্রহেনসিভ ইকোনমিক ডায়ালগ শেষে কোনো সংবাদ সম্মেলন বা যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়নি। ২০০৬ সাল থেকে এই দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক আলোচনা শুরুর পর এই প্রথম এ ধরনের ঘটনা ঘটল। তবে চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কঠোরতা প্রকাশ করলেও সবকিছু ইতিবাচকভাবেই তুলে ধরছে বেইজিং। অর্থনৈতিক ডায়ালগ শেষে দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ইস্পাতের অতিসরবরাহ হ্রাসে উভয়পক্ষই সক্রিয় ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে একমত হয়েছে। অন্যদিকে ওয়াশিংটনে ইনস্টিটিউট অব চায়না-আমেরিকা স্টাডিজের বার্ষিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত চীনের দূত চুই তিয়াঙ্কাই জানান, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো বাড়াতে আগ্রহী। এরই মধ্যে ১৪ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের গরুর গোশত আবার চীনের বাজারে আসতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুল পরিমাণ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চ মানসম্পন্ন প্রযুক্তিপণ্যও আমদানির আগ্রহ রয়েছে চীনের। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি এ ধরনের বাণিজ্যে থাকা কিছু বিধিনিষেধ তুলে নেয় তাহলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরো স¤প্রসারিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে চীনের উদ্বৃত্ত প্রসঙ্গে চু বলেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের চিত্র খালি চোখে যেমনটা দেখা যাচ্ছে বাস্তবে তা আরো জটিল। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করা অনেক পণ্যের যন্ত্রাংশই অন্য দেশে তৈরি করা। এক্ষেত্রে অ্যাপলের আইফোনকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। আইফোনের যন্ত্রাংশগুলো চীনে সংযোজন করা হলেও চিপের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশগুলো অন্যদেশ থেকে আমদানি করা হয়। অথচ তা যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য হিসেবে রফতানি করা হয়। তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সেবা পণ্য বাণিজ্যে বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে। তবে সন্তোষজনক ক্রয় সক্ষমতা থাকা চীনা পর্যটক ও বর্ধনশীল চীনা শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে ভোগব্যয় এবং অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সা¤প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, চীনের পর্যটক ও শিক্ষার্থীরা গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। রয়টার্স, সিনহুয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ