Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চিকুনগুনিয়ায় ব্যাথা-বেদনা

| প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চিকুনগুনিয়া একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা এডিস মশার ( এডিস এজিপ্টি ও এডিস এ্যালবোপিক্টাস) কামড়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। সম্প্রতি এই রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। ঢাকা সহ ঢাকার আশপাশের এলাকায় এর প্রার্দুভাব বেশী । এই রোগের প্রধান উপসর্গ হল প্রচন্ড জ্বর যা ১০৪ - ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাশাপাশি প্রচন্ড ব্যাথা যা ব্যাক্তি বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন । কারও কারও ক্ষেত্রে সারা শরীর ব্যাথা এবং কারো বা হাত ও পায়ের জয়েন্টগুলিতে ব্যাথা।

এই জ্বরের তীব্রতা তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে কমে গেলেও ব্যাথা বেদনায় কষ্ট পাচ্ছেন আক্রান্ত ব্যাক্তিরা । এই ব্যাথা - বেদনা দেড় থেকে দুই মাস পর্য়ন্ত স্থায়ী হতে পারে । বিশেষ করে বয়স্ক ব্যাক্তিরা জ্বর পরবর্তী আথ্রাইটিস বা জয়েন্টের প্রদাহজনীত ব্যাথায় ভুগছেন । একই সঙ্গে হাত ও পায়ের অনেকগুলি জয়েন্টে ব্যাথা হওয়ায় এই কন্ডিশনকে মেডিকেল পরিভাষায় পলিআথ্রাইটিস বলা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীর হাত ও পায়ের আক্রান্ত জয়েন্টগুলি ফুলে যায়, নাড়াতে কষ্ট হয়, সকালে ঘুম থেকে উঠতে অনেক কষ্ট হয়, এই ধরনের উপসর্গ আরও কয়েক ধরনের আথ্রাইটিসে দেখা যায় যেমন - রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস, জুভেনাইল আথ্রাইটিস, অষ্টিওআথ্রাইটিস ইত্যাদি। তবে এক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগের ইতিহাস, ক্লিনিক্যাল এক্সামিনেশন, প্রয়োজনীয় প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে থাকে।
করণীয়:
১. আক্রান্ত জয়েন্টে বরফ/ঠান্ডা পানির সেক দিতে পারেন, তাওয়েল বা সুতি কাপড়ের মধ্যে বরফ নিয়ে আক্রান্ত স্থানে ৫-১০ মিনিট দিনে ২-৩ বার ঠান্ডা সেক দিতে পারেন। এতে প্রদাহ কমে ব্যাথা কমে যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে সরাসরি বরফ যেন চামড়ায় লাগানো না হয় সেক্ষেত্রে ফ্রস্ট বাইট বা আইস বার্ণ হতে পারে।
২. যেহেতু জ্বরের কারনে শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানি শুণ্যতা দেখা দেয় তাই পচুর পরিমানে খাবার স্যালাইন, ডাবের পানি ও তরল খাবার খেতে হবে ।
৩. এই ধরনের জ্বরে শুধুমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। যেহেতু এসপিরিন বা ব্যাথানাশক ঔষধ খাওয়া ঠিক নয়, তাই ব্যাথা কমানোর জন্য ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা একটি নিরাপদ ও কার্যকারী চিকিৎসা পদ্ধতি। এক্ষেত্রে একজন বিশেষঙ্গ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক রোগীর বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন রকম চিকিৎসা নির্ধারন করে থাকেন। যেমন-ইলেকট্রোথেরাপি, ওয়াক্স বাথ থেরাপি ইত্যাদি
৪. আপনার বাসার আশপাশ পরিস্কার রাখুন মশা যেন বংশবিস্তার করতে না পারে। রাতে ঘুমানোর সময় মশারী টানিয়ে ঘুমান। চিকুনগুনিয়াবাহী মশার কামড় থেকে মুক্ত থাকুন।

ষ ডা: এম ইয়াছিন আলী
চেয়ারম্যান ও চীফ কনসালটেন্ট
ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।
মোবা: ০১৭৮৭ - ১০৬৭০২



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চিকুনগুনিয়া

১৫ জুন, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন