Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আওয়ামী লীগ না চাইলেও বিএনপি নির্বাচনে আসবে -ওবায়দুল কাদের

আগস্ট মাসের কর্মসূচি পালনের নামে চাঁদাবাজি বন্ধের নির্দেশ

| প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ না চাইলেও আগামী নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে সম্পাদকমন্ডলীর জরুরি সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এক কথা বলেন। আগস্ট মাসের কর্মসূচি পালনের নামে ভুয়া কোনো সংগঠন বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি যেন করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কাদের বলেন, বিএনপির রূপকল্প বা ভিশন ২০৩০ মানেই বিভিন্ন জেলায় জেলায় নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীষণ মারামারি। সদস্য সংগ্রহের নামে তারা জেলায় জেলায় যেভাবে বিশৃঙ্খলা করছে, তাতে করে দলটির নেতাকর্মীদের গায়ে কাপড় থাকে না, এগুলো দেখে হাসি পায়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয় সেগুলো দেখার পর বিএনপি তা নকল করে করতে গিয়েই বিপাকে পড়ে। বিএনপি আওয়ামী লীগকে অনুকরণ করে দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকের ভিশন শুধু নয়, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর আমরা সেøাগান দিয়েছিলাম, এক মুজিব লোকান্তরে, লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে, পরে জিয়াউর রহমান হত্যার পরও বিএনপিকে দেখেছি এক জিয়া। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসায় ‘চা-চক্রে পুলিশের বাধা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি, আ স ম আবদুর রব ভাই আমার নেতা ছিলেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তাঁর বাসায় উল্টাপাল্টা কিছু ঘটে থাকলেও অবশ্যই খবর পেতাম। তেমন কিছু ঘটেনি। তারপরও আমি খবর নেব। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার কারণে এখনো নামাজ পড়তে সেজদা দিতে পারি না। আমার চেয়ে অনেকেই পঙ্গত্ববরণ করেছেন। আইভী রহমানসহ ২৩ জন তো জীবনই দিয়েছেন। এরপর সেই সময়ের সরকার মামলার আলামত নষ্ট করে দিয়ে, তথাকথিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত, জজ মিয়া নাটক, এফবিআইকে পৃঃ ৫ কঃ ১
আওয়ামী লীগ না চাইলেও
তদন্ত করতে না দিয়ে সাধু সাজতে চেয়েছিল। ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৭ আগস্ট সারা দেশের ৬৩টি জেলায় সিরিজ বোমা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। বাংলা ভাই-শায়খ আবদুর রহমানদের উত্থান বিএনপির আমলেই হয়েছিল। শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য চট্টগ্রামে, বরিশালের ওগৗরনদী, নাটোর, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে। কই খালেদা জিয়ার ওপর তো কোনো হামলার কথা শোনা যায়নি। আমরা কি বেগম জিয়ার মিটিংয়ে হামলা চালিয়েছি? আওয়ামী লীগের আহসানউল্লাহ মাস্টার, শাহ এ এম এস কিবরিয়া, সাংবাদিক মানিকসহ কত নাম বলব যাদের হত্যা করা হয়েছে। কত গুম, কত খুন করেছে বিএনপি তার হিসাব নেই। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নামে ২৫০ জনকে পুড়িয়ে মেরেছে। এখনো বার্ন ইউনিটে আহাজারি শোনা যায়, যোগ করেন ওবায়দুল কাদের। গণমাধ্যমের প্রতি বিশেষ করে প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক একটি দল। আমাদের ঘরোয়া গণতন্ত্র, তর্ক-বিতর্ক নিয়ে, সঠিক তথ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করুন। তথ্য যাচাই না করে রং চড়ানোর দরকার আছে কি? অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের সমালোচনা আমরা করব। কেউ কেউ এমন বিষয় নিয়ে আসেন, যেগুলো তথ্য নয়। আংশিক সত্যও আসে না, পার্টির মুখপাত্রের সঙ্গে কথা বলে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আমি কোনো নিউজ করার পক্ষে নই, গঠনমূলক সমালোচনা করলে আমরা দল হিসেবে শুদ্ধ হতে পারি। গণমাধ্যমকে আমরা শত্রæ মনে করি না।
সারা দেশে ৩১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় খুব ভালোভাবে সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়নি বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতলে খবর আসে না। এটা যদি বিএনপি করত, তবে বড় করেই খবর প্রকাশ হতো। বৃহস্পতিবার সারা দেশে ৩১টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্য দুটি স্থগিত হয়েছে বন্যাজনিত কারণে। বাকি ২৯টিতে আওয়ামী লীগ ২২, স্বতন্ত্র ৪, বিএনপি ৩। তৃণমূলে আমরা শক্তিশালী, আমরা মুখে বলি না, কাজেও দেখিয়েছি। তৃণমূলে যারা শক্তিশালী তারাই আগামী নির্বাচনে জিতবে। আগস্ট মাসের কর্মসূচি পালনের নামে ভুয়া কোনো সংগঠন বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি যেন করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।



 

Show all comments
  • S. Anwar ১৫ জুলাই, ২০১৭, ৮:৩০ এএম says : 0
    দেশের একজন উচ্চপদস্থ বিজ্ঞ ব্যক্তির মুখে অবোধ শিশুসুলভ বাস্তবতা বর্জিত কথাবার্তা শুনলে সত্যি পুরা জাতিটার জন্য কেমন যেন দুঃখ হয়.!!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ