Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিধিনিষেধের বেড়াজালে দারুণ দুঃসময় উইঘুর মুসলিমদের

| প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : চীনের সুদূর পশ্চিমের নগরী কাশগারের কেন্দ্রীয় মসজিদের প্রবেশ পথে মেটাল ডিক্টেটর বসানো হয়েছে। মুসুল্লিরা এর মধ্য দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করছে। মুখ ব্যদান করে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা তল্লাশী করে তাদের ঢুকতে দিচ্ছে। গোলযোগপূর্ণ জিনজিয়াং অঞ্চলে দাড়ির ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং প্রকাশ্যে নামাজ পড়ার অনুমতি নেই। অঞ্চলটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নামাজের সময় কাশগার মসজিদের বাইরেও মুসুল্লিতে পূর্ণ হয়ে যেত। মুসুল্লির তুলনায় স্থান অনেক কম হওয়ায় তাদের গাদাগাদি করে ঈদের নামাজ পড়তে হত। তবে এ বছর এর ব্যতিক্রম দেখা গেছে। ঈদুল ফিতরের নামাজে সবচেয়ে কম মুসুল্লি জড়ো হয় এখানে। দেশটির কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে বলেন, সরকার নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঈদ উপলক্ষে কয়েকটি চেকপয়েন্ট স্থাপন করেছে। একজন ব্যবসায়ী বলেন, অঞ্চলটি ধর্মকর্ম করার জন্য উপযুক্ত নয়। এখানে এতে বাধা দেয়া হয়। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঠেকাতেই এই বাধা ও ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, জিনজিয়াং একটি উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার লা ট্রোবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ জেমস লিবোল্ড বলেন, চীন সরকার নজিরবিহীনভাবে দেশটিকে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করছে। আঞ্চলিক রাজধানী উরুমকিতে একের পর এক দাঙ্গায় প্রায় ২শ’ লোকের প্রাণহানির পর ২০০৯ সালে চীন সরকার জিনজিয়াংয়ে মুসলিমদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা শুরু করে। ৫০ বছরের কম বয়সী কেউ এখানে প্রকাশ্যে নামাজ পড়তে পারে না। এমনকি ৫০ বছরের নীচের কাউকে দাড়িও রাখতে দেয়া হয়না। এছাড়াও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রমজান মাসের রোজা রাখারও অনুমতি নেই। পাকিস্তান সীমান্তবর্তী তাশুকুরগানে রমজানের ছুটিতে খাবার পরিবেশনে অস্বীকার করায় শাস্তি হিসেবে একটি হালাল রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এক শিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তা বলেন, স্কুলগুলোতে আসসালামু আলাইকুম না দেয়ার জন্য শিশুদের নিরুৎসাহিত করা হয়। তিনি বলেন, সরকার মনে করে এই সব ইসলামিক শব্দ বিচ্ছিন্নতাবাদের নামান্তর। হোতানের একটি মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে ঢোকার সময় মুসুল্লিদেরকে পুলিশের ব্যারিকেডের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ সময় দুটি চেকপয়েন্টে তাদেরকে পরিচয়পত্র দেখাতে হয়। চীনের কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে উইঘুর মুসলিমদের ওপর দমনপীড়নের পক্ষে সাফাই গাইতে এই মুসলিমদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সম্পৃক্ততার কথা বলে আসছে। তারা দাবি করছে, আল-কায়েদার মতো বিদেশী চরমপন্থীদের সঙ্গে এরা যোগ দিচ্ছে। সা¤প্রতিক বছরগুলোতে উইঘুররা ভিড়ের মধ্যে নির্বিচারে ছুরিকাঘাত ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে। ছাড়াও দাঙ্গা ও সরকারি বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েকশ’ লোক প্রাণ হরিয়েছে। আশপাশের দেশ থেকে সহিংসতার ঢেউ চীনেও আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেন। তিনি বলেন, আমরা আরেকটি পাকিস্তান বা আফগানিস্তান হতে চাই না। তিনি আরো বলেন, তবে মুসলিমদের মধ্যে অল্প কয়েকজন লোকই চরমপন্থী। সিনহুয়া।



 

Show all comments
  • Fazlul Haq ১৪ জুলাই, ২০১৭, ২:৩৮ পিএম says : 0
    Every muslim country should to support them
    Total Reply(0) Reply
  • Kabir Hossain ১৪ জুলাই, ২০১৭, ২:৩৮ পিএম says : 0
    Bad news
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুসলিমদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ