পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিএনএন ইন্টারন্যাশনাল : সোমবার ভোরে উত্তর লন্ডনের একটি মসজিদের মুসল্লিদের উপর হামলা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে সন্ত্রাসবাদ নানা রূপে ও প্রকারে আসতে পারে। ৯/১১-র কারণে গত দেড় দশক ধরে রাজনীতিক, মিডিয়া ও জনগণের কাছে সন্ত্রাসের রূপ এটাই দাঁড়িয়েছিল যে এটা হচ্ছে ইসলামী রাজনৈতিক সহিংসতা যে সন্ত্রাসের ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকা দরকার।
কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু হামলা থেকে দেখা যাচ্ছে যে সন্ত্রাসের এই রূপকাঠামো খুবই সংকীর্ণ। সন্ত্রাসের সাধারণভাবে গৃহীত সংজ্ঞা হচ্ছে যে এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত সহিংসতা যা রাষ্ট্রের বদলে বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়। এ ধরনের হামলা চরম ডানপন্থী, চরম বামপন্থী, যে কোনো রঙের বর্ণবাদী ও জিহাদিদের কাছ থেকেও আসতে পারে।
দৃষ্টান্ত স্বরূপ বলা যায়, সোমবার লন্ডনের মসজিদে হামলা সুস্পষ্টভাবে মুসলিম বিরোধী সন্ত্রাসবাদের কাজ। মসজিদের কাছে মুসল্লিদের উপর ভ্যান চালিয়ে দেয়ার ঘটনায় ৪৮ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছে। এতে একজন নিহত ও ১০ জন মুসল্লি আহত হয়েছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে লন্ডন ব্রিজ ও ম্যাঞ্চেস্টার জিহাদি হামলার মতই এটিকে সর্বতোভাবে অসুস্থতাকর কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, লন্ডন ব্রিজ হত্যাকান্ডের পর মুসলিম বিরোধী অপরাধ হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে।
গত সপ্তাহে ৬৬ বছর বয়স্ক জেমস টি. হজকিনসন তৃতীয় ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়ায় বেসবল অনুশীলনকারী কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যদের আক্রমণ করে। এ হামলায় হাউস সংখ্যাগরিষ্ঠ হুইপ স্টিভ স্ক্যালাইজসহ ৫ জন আহত হন। হজকিনসনকে এক পুলিশ অফিসার গুলি করেন এবং সে তখনি মারা যায়।
হজকিনসন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এক কঠোর সমালোচক ছিল । ফেসবুকে পোস্টে সে লিখেছিল ঃ ট্রাম্প একজন বিশ^াসঘাতক। ট্রাম্প আমাদের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। এখন ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের ধ্বংস করার সময়। এ হামলা চালানোর আগে সে বেসবল অনুশীলনরত কংগ্রেসের রিপাবলিকান দলীয় দু’জন প্রতিনিধি ফ্লোরিডার রন ডি. স্যান্টিস ও ক্যালিফোর্ণিয়ার জেফ. ডানকানকে জিজ্ঞেস করে যে খেলোয়াড়রা রিপাবলিকান না ডেমোক্র্যাট। ডানকান বলেন, তারা রিপাবলিকান।
হজকিনসনের হামলা সুস্পষ্টভাবে বামপন্থী সন্ত্রাসবাদের কাজ।
দু’মাস আগে ১৮ এপ্রিল ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রেসনোতে কারি আলি মুহাম্মদ তিনজন শে^তাঙ্গকে গুলি ও হত্যা করার আগে তাদের পথ আটকায়। সামাজিক মাধ্যমে মুহাম্মদ শে^তাঙ্গদের শয়তান বলে আখ্যায়িত করে এবং কৃষ্ণাঙ্গ বিচ্ছিন্নতাবাদের উপর পোস্ট দেয়। মুহাম্মদের বাবা লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে বলেন যে তার ছেলে মনে করত যে সে কালো ও সাদাদের মধ্যকার বিরোধের অংশ এবং একটি লড়াই সংঘটিত হতে চলেছে।
মুহাম্মদের হামলা সুস্পষ্টরূপে বর্ণবাদ প্রভাবিত একটি সন্ত্রাসী হামলা।
জিহাদি জঙ্গি নয় আমেরিকার এমন সন্ত্রাসীদের হামলাকে কোনো কোনো সময় সন্ত্রাসবাদ না বলার কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদ হচ্ছে অপরাধ যা কিনা কোনো না ভাবে আইএসআইএসের মত চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রæপের সাথে সম্পৃক্ত। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর কর্তৃক এসব গ্রæপ চিহ্নিত এবং সেগুলো অনিবার্যভাবে বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন।
এ ধরনের কোনো গ্রপের সাথে জড়িত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধ। কিন্তু সকল ঘৃণামূলক বক্তৃতা ও ধারণা প্রথম সংশোধনীতে সুরক্ষা পাওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রস্থ নিও নাজি গ্রæপ বা অন্যান্য সংগঠনগুলো যারা ঘৃণামূলক মত পোষণ করে তারা সন্ত্রাসী সংগঠন বলে আইনত বিবেচ্য নয় যদিও তাদের অনুগামীরা কখনো কখনো সন্ত্রাসবাদের সমতুল্য আচরণ করে।
এটা সম্ভবত বিস্ময়কর নয় যে এই মেরুকরণের যুগে যখন কিছু পশ্চিমা দেশে অভিবাসন বিরোধী মনোভাব শক্তিশালী এবং যেখানে রাজনৈতিক আবেগ উঁচুতে (তা সে যুক্তরাজ্যে ব্রেক্সিট নিয়েই হোক আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিয়েই হোক) আমরা চরম বাম ও চরম ডান উভয় দিক থেকেই রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা দেখতে পাচ্ছি। সেগুলো জিহাদি জঙ্গিদের হামলার অতিরিক্ত হয়ে আসছে যা আসলেই অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হয়ে রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।