নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আজ লন্ডনের দ্য ওভাল স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে মুখোমুখি চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী পাকিস্তান-ভারত। একদিকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত চাইতে তাদের ভ শিরোপা অক্ষুন্ন রাখাতে, অন্যদিকে প্রথম শিরোপার দিকে তাকিয়ে তাক লাগিয়ে প্রথমবারের মত ফাইনালে ওঠা পরিবর্তিত পাকিস্তান। দুই দলের গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালের আগে স্মৃতির পট ঘেঁটে ক্রিকেট রোমান্টিকদের জন্য এশিয়ার দুই পরাশক্তির স্মরনীয় কিছু মুহুর্ত তুলে ধরেছেন ইমরান মাহমুদ-
পরিসংখ্যানের আলোয়
ভারত দু’দল পাকিস্তান
১২৮ ম্যাচ ১২৮
৫২ জয় ৭২
৪ টাই/পরি. ৪
শচীন ৬৯ সর্বাধিক ম্যাচ ইনজি/আফ্রিদি ৬৭
আজহারউদ্দিন ২৫ অধিনায়ক হিসেবে ইমরান খান ২৪
৩৫৬/৯ সর্বোচ্চ দলীয় ৩৪৪/৮
৭৯ সর্বনি¤œ দলীয় ৮৭
১৪০ রান, ৮ উইকেট বড় জয় ১৫৯ রান, ৯ উইকেট
শচীন ২৫২৬ সর্বাধিক রান ইনজামাম ২৪০৩
কোহলি ১৮৩ সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সাঈদ আনোয়ার ১৯৪
শচীন ৫টি সর্বাধিক সেঞ্চুরি সালমান বাট ৫টি
শচিন/সিধু ২৩১ সেরা জুটি সাঈদ/ইজাজ ২৩০
অনিল কুম্বলে ৫৪ সর্বোচ্চ উইকেট ওয়াসিম আকরাম ৬০
সৌরভ গাঙ্গুলি ৫/১৬ সেরা বোলিং আকিব জাভেদ ৭/৩৭
আজহারউদ্দিন ৪৪ সর্বাধিক ক্যাচ শহিদ আফ্রিদি ৩০
এমএস ধোনি ৪০ সর্বোচ্চ ডিসমিসাল মঈন খান ৭১
যেভাবে ফাইনালে
ভারত
প্রতিপক্ষ পাকিস্তান
১২৪ রানে জয়ী (ডি/এল)
প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা
৭ উইকেটে পরাজিত
প্রতিপক্ষ দ.আফ্রিকা
৮ উইকেটে জয়ী
প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ
৯ উইকেটে জয়ী
পাকিস্তান
প্রতিপক্ষ ভারত
১২৪ রানে পরাজিত (ডিএল)
প্রতিপক্ষ দ.আফ্রিকা
১৯ রানে জয়ী (ডিএল)
প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা
৩ উইকেটে জয়ী
প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড
৮ উইকেটে জয়ী
সংখ্যায়-সংখ্যায়
ক্রিকেট বিশ্বে মহাগুরুত্বপূর্ণ এ লড়াইয়ের আগে বছরের পর বছর ধরে দুই দেশের মধ্যকার ওয়ানডে ইতিহাসে কিছু পরিসংখ্যান তথা গুরুত্বপূর্ণ ‘সংখ্যা’র দিকে চোখ বুলানো যাক-
# ভারত ও পাকিস্তান এ পর্যন্ত ১২৮ ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে জয়ের পাল্লাটা ভারী পাকিস্তানের পক্ষে। ভারত জয় পেয়েছে ৫২ ম্যাচে এবং পাকিস্তান জয়ী হয়েছে ৭২ ম্যাচে। বাকি ৪টি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত।
# উভয় দল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মোট চার বার মুখোমুখি হয়েছে এবং জয় পরাজয় সমান ২টি করে।
# আইসিসি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে এ পর্যন্ত মোট ১১ ম্যাচের সব ক’টিতেই জয়ী হয়েছে ভারত।
# বিভিন্ন টুর্নামেন্টের ফাইনালে এ পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছে ১০ ম্যাচে। যেখানে ৭টিতে জয় পেয়েছে পাকিস্তান, ৩টিতে জয় পেয়েছে ভারত।
# শচিন টেন্ডুলকার সবচেয়ে বেশি রান করেছেন পাকিস্তানের পাকিস্তানের বিপক্ষে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬৯ ওয়ানডে ম্যাচে ৪০.০৯ গড়ে টেন্ডুলকারের মোট রান ২৫২৬।
# ইনজামাম উল হক সবচেয়ে বেশি রান করেছেন ভারতের বিপক্ষে। ভারতের বিপক্ষে ৬৭ ওয়ানডে ম্যাচে ৪৩.৬৯ গড়ে ইনজামামের মোট রান ২৪০৩।
# ওয়ানডে ক্রিকেটে বিরাট কোহলির ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ইনিংস পাকিস্তানের বিপক্ষে।
# ওয়ানডে ক্রিকেটে পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ারের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৯৪ রানের ইনিংস ভারতের বিপক্ষে।
# পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৫৪ উইকেট শিকার করেছেন অনিল কুম্বলে।
# ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৬০ উইকেট শিকার করেছেন ওয়াসিম আকরাম।
ধ্রæপদি ৫ লড়াই
এপ্রিল ১৮, ১৯৮৬ (শারজাহ)
পাকিস্তান ১ উইকেটে জয়ী
এমন একটি ম্যাচ সীমান্তবর্তী দুই দেশের কোন সমর্থক ভুলতে পারবে না। অস্ট্রেলেশিয়া কাপের শিরোপা স্পর্শ করতে ইনিংসের শেষ বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ৪ রান। ভারতীয় পেসার চেতন শর্মার একটি ফুল টস বলে পুল করে ছক্কা হাকান জাভেদ মিঁয়াদাদ। তাৎক্ষণিকভাবে মিঁয়াদাদ পাকিস্তানের জাতীয় বীরে পরিণত। ঐ একই কারণে খলনায়কে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি দেশে ফিরে অপমানিত হন শর্মা। ওই হারে জ্বালার বহুদিন মনে মর্টার সেলের মত বিঁধে ছিল ভারত সমর্থকদের মনে।
মার্চ ১, ২০০৩ (সেঞ্চুরিয়ন)
ভারত ৬ উইকেটে জয়ী
বিশ্বকাপের ম্যাচটি ছিল দুই বিশ্ব তারকা ভারতের শচিন টেন্ডুলকার ও পাকিস্তানী ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতারের মধ্যকার লড়াই। ৭৫ বল মোকাবেলায় টেন্ডুলকারের ৯৮ রান করে দলকে ২৭৪ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। পক্ষান্তরে রাওয়ালপিÐী এক্সপ্রেস ১০ ওভারে ৭২ রান খরচ করে কেবলমাত্র টেন্ডুলকারের একটি উইকেট শিকার করতে সক্ষম হন। ম্যাচের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন পাকিস্তান ওপেনার সাঈদ আনোয়ার (১০১)। তারপরও ম্যাচটি জিতে নেয় ভারত।
সেপ্টেম্বর ১৯, ২০০৪ (এজবাস্টন)
পাকিস্তান ৩ উইকেটে জয়ী
আজ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারলে পাকিস্তান আনন্দিত হবে। চার বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বার্মিংহামের এজবাস্টনের ম্যাচটিতে চার বল বাকি থাকতেই জয় পেয়েছিল পাকিস্তান। রানা নাভেদ ও শোয়েব আখতারের চার উইকেট শিকারে ‘টেনিস এলবো’ ইনজুরির কারণে টেন্ডুলকারবিহীন ভারত গুটিয়ে যায় মাত্র ২০০ রানে। জবাবে অবশ্য ২৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। তবে ইউসুফ ইয়োহানার (মোহাম্মদ ইউসুফ) অপরাজিত ৮১ রানে ভর করে জয় পায় পাকিস্তান।
মার্চ ২০, ২০১১ (মোহালি)
ভারত ২৯ রানে জয়ী
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিজ মাঠে জয় পায় ভারত। অবশ্য এ ক্ষেত্রে কৃতিত্বটা বেশি সফরকারীদের। কেননা তারা ৮৫ রান করা টেন্ডুলকারের ক্যাচ ফেলেছেন চার বার। এছাড়া দুই বার এলবিডবিøউর হাত থেকে বেঁচে যান তিনি। এরপর স্বাগতিকদের টাইট ফিল্ডিংয়ের কারণে পাকিস্তান আর জয় সম্ভব হয়নি। মিসবাহ-উল-হক ৭৬ বল খেলে মাত্র ৫৬ রান করায় দারুনভাবে সমালোচিত হন।
মার্চ ২, ২০০৪ (ঢাকা)
পাকিস্তান ১ উইকেটে জয়ী
ঢাকাতে এশিয়া কাপ ফাইনালে আগে ব্যাটিং করে ভারত ৮ উইকেটে ২৪৫ রান করলে জয়ের জন্য ৪ উইকেট হাতে থাকা পাকিস্তানের দরকার পড়ে শেস ১০ বলে ১১ রান। কিন্তু দ্রæত তারা ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে। বরিচন্দ্রন অশ্বিনের ওভারে শেষ চার বলে পাকিস্তানের দরকার ৯ রান। কিন্তু আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত শহিদ আফ্রিদি পরপর দুই বলে ছক্কা হাকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
বদলে যাওয়া এক পাকিস্তান
প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান। সেমি-ফাইনালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে শোচনীয়ভাবে ৮ উইকেটে হারিয়ে ৮ জাতির এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে এশিয়ার এই ক্রিকেট দলটি। র্যাংকিংয়ে সবচেয়ে নীচের দল হিসেবে টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া পাকিস্তান ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে উপমহাদেশের আরেক ক্রিকেট পরাশক্তি চির প্রতিদ্ব›িদ্ব ভারতকে। যারা সেমিফাইনালে ৯ উইকেটে বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
পাকিস্তান দলের এই ফাইনালের মিশনটি বলতে গেলে রূপকথার গল্পের মত। ভারতের কাছে পরাজয় দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যাত্রা শুরু করা ‘আনপ্রেডিকটেবল’ দলটি পরে টানা সফলতার মাধ্যমে ফাইনালে উঠে এসেছে। এই পথে তারা পরাজিত করে শ্রীলংকা ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে। অবিষ্মরনীয় এই ফাইনালের পথে পাকিস্তান দলের সেরা ৫টি পারফর্মেন্স-
১. দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হাসান আলীর সারা জাগানো স্পেল: ভারতের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে একাদশের বাইরে থাকা হাসান আলী পরের ম্যাচে সুযোগ পেয়েই তার নিখুঁত বোলিংয়ের মাধ্যমে সবাইকে মুগ্ধ করেছেন। লাইন ও লেন্থ ঠিক রেখে ২৩ বছর বয়সি এই পেসার বৈচিত্র্যময় বোলিং দিয়ে একাই ধ্বসিয়ে দেন প্রোটিয়া ব্যাটিং বিভাগকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাকিস্তানের ব্যবধান গড়ে দেয়া ওই ম্যাচে ৮-১-২৪-৩ বোলিং ফিগার নিয়ে সেরার পুরস্কারটিও আদায় করে নেন এই উদীয়মান পেসার। হাসানের নিখুঁত বোলিংয়ের কারণে প্রেটিয়া ব্যাটসম্যানরা রানের চাকা সচল রাখতে ব্যর্থ হয়। এই ধারাবহিকতা তিনি পরের ম্যাচগুলোতেও ধরে রেখেছিলেন।
২. শ্রীলংকার বিপক্ষে মোহাম্মদ আমির ও জুনায়েদ খানের লড়াই: মোহাম্মদ আমির ও জুনায়েদ খানের লড়াকু বোলিংয়ের কল্যানে লংকানদের বিরুদ্ধে ৩ উইকেটের জয় নিয়ে সেমিফাইনালের ছাড়পত্র পেয়ে যায় পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাটিং শুরু করা লংকান ব্যাটসম্যান এঞ্জেলো ম্যাথুস ও ডিকবেলা বড় একটি লক্ষ্য স্থিরের ইঙ্গিত দিলেও আমির এবং জুনায়েদ নিজেদের বোলিংয়ের সময় রিভার্স সুইংয়ের অসাধারণ স্পেল পার করেন। তাদের ওই বোলিং তান্ডবে ১৬৭ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলংকা। ৩ উইকেটে ১৬১ রানে থাকা লংকানরা পরবর্তী ২২ বলের মোকাবেলায় ৬ রান যোগ করতেই হারিয়েছে চার উইকেট। আমির ৭৩ রান সংগ্রহকারী ডিকবেলা এবং ৩৯ রানের ম্যাথুজকে ফিরিয়ে দেন। আর জুনায়েদ ফিরিয়ে দেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (১) ও থিসারা পেরেরাকে (১)। ১০ ওভার করে বল করে আমির ৫৩ রানে ২ উইকেট এবং জুনায়েদ ৪০ রানে ৩ উইকেট লাভ করেন। জুনায়েদের স্পেলের উল্লেখযোগ্য দিক হচেছ তিনি ৩টি মেডেন ওভার আদায় করেছেন।
৩. ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হাসান আলীর স্পেল : পাকিস্তান দলের অধিনায়কের রাখা আস্থার প্রতিদান কড়ায় গন্ডায় মিটিয়ে দিয়েছেন হাসান আলী। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে প্রথম ম্যাচে নাস্তানাবুদ হওয়া পাকিস্তানকে দারুনভাবে লড়াইয়ে ফিরে এনেছেন তিনি। তিনি যা করেছেন তাতে তাকে পাকিস্তানের সেরা বোলার বললে অন্যায় হবেনা।
হাসান আলীর ৩৫ রানের বিপরীতে ৩ উইকেট সংগ্রহের ঘটনা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালের চেহারাই পাল্টে দেয়। এ পর্যন্ত ১০ উইকেট সংগ্রহের মাধ্যমে আলী এখন টুর্নামেন্টের শীর্ষ উইকেট সংগ্রহকারী। ফাইনালেও তিনি এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন বলে আশা করছে পাকিস্তানীরা।
৪. দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইমাদ ওয়াসিমের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার: বৃষ্টি বিঘিœত ম্যাচে দক্ষিন আফ্রিকাকে ১৯ রানে হারানো সম্ভব ছিলনা যদি না দুটি উইকেট নিয়ে ইমাদ ওয়াহিদ খেলার চেহারা পাল্টে না দিতেন। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেয়ার পর উদ্বোধনী জুটিতেই ৪০ রান সংগ্রহ করে ফেলেন প্রোটিয়া দলের ব্যাটসম্যান হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক। ওই ম্যাচে ইমাদই এলবিডবিøউর ফাদে ফেলে প্রথম উইকেট হিসেবে ফিরিয়ে দেন আমলাকে। আমলাকে আউট করার পর তিনি শুন্য হাতে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান এবি ডি বিলিয়ার্সকে। এটি ছিল প্রোটিয়া অধিনায়কের ক্যারিয়ারে প্রথম শুন্য রানে মাঠ ছাড়ার ঘটনা। এই দুই ব্যাটসম্যান টিকে থাকলে যে কোন বিপদের সম্ভাবনা ছিল।
৫. শ্রীলংকার বিপক্ষে সরফরাজ খানের ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস: অধিনায়কোচিত ইনিংস সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সেটি যখন দেখা যায় ম্যাচের সকটাপন্ন সময়ে। অধিনায়ক সরফরাজের এমনই একটি লড়াকু ইনিংসের কল্যানে শ্রীলংকার বিপক্ষে জয়লাভ করেছে পাকিস্তান। যার পলে তারা শেষ চারে জায়গা করে নেয়।
চরম চাপের মধ্যে থেকেও তিনি তিন বিভাগেই সমান পারদর্শীতা প্রদর্শন করেছেন। বোলিংয়ের সময় মধ্যভাগে তিনিই বল তুলে দিয়েছিলেন আমির ও জুনায়েদের হাতে। যার ফলে লংকানদের ২৩৬ রানে বেধে ফেরতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। উইকেট রক্ষক হিসেবে তিনি আমিরের একটি বল তালুবন্দি করেন নিরোশন ডিকবেলাকে উইকেট বানিয়ে। এ সময় লংকান ব্যাটসম্যানের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছিল ৭৩ রানে।
আত্মবিশ্বাসী এক ভারত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ক্রিকেটের সেমি-ফাইনালে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। গ্রæপ পর্ব থেকে ফাইনালে পৌঁছানোর এই পথে ভারতীয় দলের ৫টি স্মরনীয় পারফরমেন্স।
১. রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের জুটি : রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের ওপেনিং জুটি ভারতীয় দলের ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। ২০১৩ সালে ভারতীয় দলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয়েও বড় ভুমিকা রেখেছিল এ দুই ওপেনার । চলতি আসরেও তাদের সেই দ্যুতিময় নৈপুন্য অব্যাহত রয়েছে।
টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে সংগ্রহ করেছিলেন ১৩৬ রান। যা ভারতের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেয়। এমনকি শ্রীলংকার কাছে হেরে যাওয়া ম্যাচেও এই জুটি শুরুতে গড়ে তুলেছিল ১৩৮ রানের পার্টনারশীপ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রোহিত শর্মা কিছুটা আগেভাগে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে ঠিকই সেটি পুষিয়ে দিয়েছেন। যেখানে তিনি সংগ্রহ করেছেন ৮৭ রান।
২. পাকিস্তানের বিপক্ষে যুবরাজ সিংয়ের ইনিংস: যুবরাজ সিং ও আইসিসি টুর্নামেন্টের মধ্যে একটি দারুন সেতুবন্ধন রযেছে। এ টুর্নামেন্টে তিনি সব সময় কিছু ছাপ রেখে যেতে সক্ষম হন। যেটি তিনি রেখেছেন ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচে। মাত্র ২৯ বলের মোকাবেলায় ৮টি চার ও একটি ছয় হাকিয়ে তিনি পূর্ণ করেন অর্ধশতক। তার উপ¯ি’তিতে যেন জ্বলে ওঠে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ¯øগ ওভারে তার উপ¯ি’তিতে মাত্র ৫৮ বল থেকে ৯৩ রান সংগ্রহ করে ভারত। যুবরাজের এই দ্রæততম সংগ্রহের বদৌলতে ৩০০ রান অতিক্রম করতে সক্ষম ভারত।
৩.দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে জসপ্রিত বুমরাহর স্পেল : প্রথমবার ইংল্যান্ড সফর ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচটি অলিখিত কোয়ার্টারফাইনাল হওয়া সত্তে¡ও ২৩ বছর বয়সী জসপ্রিত বুমরাহ অসাধারন বোলিং করেছেন এবং তার সঠিক লইন-লেšে’র কারণে হাশিম আমলা ও কুন্টিন ডি কক কখনোই স্বাভাবিকভাবে রান নিতে পারেননি। ক্রিস মরিস ও আন্দিল ফেলুকুয়াওর উইকেট শিকার করেন তিনি। তার ম্যাচ ম্যাচ ফিগার ছিল ৮-০-২৮-২।
এ পর্যন্ত দারুন নৈপুন্য দেখানো বুমরাহ পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচেও আরেকটি ভাল দিন কাটানোর অপেক্ষায় আছেন।
৪. অধিনায়ক কোহলির ফর্ম : নিজ দেশে কিছু দিন আগে সমাপ্ত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের(আইপিএল) দশম আসরটা মোটেও ভাল না কাটায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তার ফর্ম নিয়ে ভক্তদের মদ্যে বেশ শঙ্কা ছিল। তবে আইসিসির এ নটুর্নামেন্টে এসে ঠিকই তিনি ফর্মে ফিরেছেন। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত তার মোট রান ২৫৩। কেবলমাত্র শ্রীলংকার বিপক্ষে ছাড়া সব প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রান পেয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬৮ বলে ৮১, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০১ বলে ৭৬ এবং সেমিফাইনালে বাংলাদেশের বিপেক্ষ মাত্র ৭৮ বলে অপরাজিত ৯৬ রান করেছেন তিনি। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দারুন ছন্দে থাকা কোহলি বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে বিশেষ বৈশিষ্ট্য মন্ডিত ইনিংসের মাধ্যমে ওযানডে ক্রিকেটে দ্রæত ৮ হাজার রানের রেকর্ড গড়েছেন ।
৫. বাংলাদেশের বিপক্ষে কেদার যাদবের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার : পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনাল খেরার যোগ্যতা অর্জনের পথে সেমিফাইনালে বাংলাদশকে ৯ উইকেটে হারায় ভারত। তবে কেদার যাদব জ্বলে না উঠলে সম্ভবত পার্শবর্তী দেশটির বিপক্ষে ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব হতো না। এ অলাউন্ডার গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট শিকার করেন ম্যাচটি ভারতের পক্ষে ঘুরিয়ে দেন।
তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম জুটি ১২১ রানে জুটি গড়ায় এক পর্যায়ে মনে হ”িছল বাংলাদেশ তিনশ’র বেশি রান করবে। কিš‘ যাদব নিজের দ্বিতীয় ওভারেই হুমকি হয়ে ওঠা দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করেন। তামিম-মুশফিক দু’জনই যাদবের শিকার হন এবং লক্ষ্যমাত্রা ভারতের অনুকুলে রাখা নিশ্চিত করেন। যে কারণে ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করে টিম ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।