পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বর্তমানে কাতার ইস্যু সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে সউদি আরব এবং বেশ কয়েকটি দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক ও ভ্রমণ সম্পর্ক ছিন্ন করার পর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নানা মেরুকরণ শুরু হয়েছে। একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কলকাঠি নাড়ছেন, অন্যদিকে রাশিয়া, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কাতারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সবমিলেই মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি নিয়ে বিশ্বে ফের নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে। এদিকে চরমপন্থার সঙ্গে কথিত যোগসাজশের যে অভিযোগ কাতারের বিরুদ্ধে উঠেছে, তা থেকে মুক্তি পেতে নিজস্ব পররাষ্ট্র নীতিকে বাদ দিয়ে বশ্যতা স্বীকার করা হবে না বলে দেশটি প্রতিজ্ঞা করেছে। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি বলেছেন, সঙ্কট সমাধানে তিনি কূটনৈতিক সমাধান চান। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে যে সামরিক উপায়ে বর্তমান সঙ্কটের সমাধান করা সম্ভব নয় বলেও মনে করেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইসলামী চরমপন্থাকে সমর্থনের যে অভিযোগ দেশটির বিরুদ্ধে উঠেছে, কাতার তাও প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিকে, কাতারের গণমাধ্যম আল-জাজিরা বলেছে যে তাদের বিরুদ্ধে সাইবার হামলা হয়েছে। এক টুইট বার্তায় নেটওয়ার্কটি জানায়, তাদের সব ধরণের ব্যবস্থা, ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাইবার হামলার মুখে পড়েছে। চলমান সঙ্কটের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আল-জাজিরা এবং গত মাসের শেষের দিকে অন্যান্য উপসাগরীয় দেশে এটি নিষিদ্ধ করা হয়। আল-জাজিরা তাদের ওয়েব সাইটে জানায় তাদের কার্যক্রম চালু রয়েছে, তবে নানা উপায়ে হামলা জোরদার হচ্ছে। অন্যদিকে, কাতারে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টেশন জানিয়েছে যে হ্যাকিংয়ের চেষ্টা হওয়ার কারণে তারা তাদের ওয়েব সাইট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিচ্ছে। এদিকে, মিশর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে এমন একটি দাবী তদন্ত করে দেখতে অনুরোধ করেছে যাতে বলা হয়েছে যে রাজকীয় পরিবারের কয়েকজন সদস্যের মুক্তির জন্য কাতার ১০০ কোটি ডলার মুক্তিপণ দিয়েছে। বলা হচ্ছে, ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে শিকার করার সময় তাদেরকে অপহরণ করা হয়। কাতারের সাথে সম্পর্কোচ্ছেদের ধারায় এখনও ব্যতিক্রম ওমান। তবে খবরে বলা হয়েছে যে সউদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওমানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য সেদেশে গিয়েছেন। এ ব্যাপারে অবশ্য বিস্তারিত আর কিছু বলা হয়নি। সউদি আরব এবং বেশ কয়েকটি দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক ও ভ্রমণ সম্পর্ক ছিন্ন করে। কুয়েতের আমির সঙ্কট কাটাতে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছেন- তিনি এরই মধ্যে কাতার, সউদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেছেন। দোহায় এক বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বলেন, কাতারকে একঘরে করা হয়েছে কারণ আমরা সফল এবং প্রগতিশীল। আমরা শান্তির স্বপক্ষে একটি প্লাটফরম, সন্ত্রাসের পক্ষে আমরা নই। চলমান এই সঙ্কট পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। আমরা বশ্যতা স্বীকার করতে প্রস্তুত নই। আমরা কখনোই আমাদের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতিকে ধুলায় লুটাতে দেওয়ার জন্যে প্রস্তুত নই। বিবিসির কূটনৈতিক সংবাদদাতা জেমস রবিনস বলছেন, পরিস্থিতি সামলাতে যে চেষ্টা চলছে, রাশিয়ার হস্তক্ষেপ তা আরো জটিল করে তুলতে পারে। কাতারের চলমান সঙ্কট একদিকে যেমন খাদ্য মজুদ প্রবণতা বাড়িয়েছে, অন্যদিকে খাবারের স্বল্পতাও তৈরি করেছে। সউদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর বলেছেন যে একঘরে অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কাতারকে ইসলামপন্থী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এবং মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। আপাতদৃষ্টিতে কাতার সমর্থন পাচ্ছে তুরস্ক থেকে। তুরস্ক এমন একটি বিল অনুমোদন করেছে, যার ফলে আরো বেশী সৈন্য কাতারে পাঠানো যাবে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট মধ্যস্থতা করতেও প্রস্তাব দিয়েছেন। কাতারে অবশ্য রয়েছে ঐ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মার্কিন বিমানঘাঁটি। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সউদি বাদশাহ সালমানের কাছে উপসাগরীয় অঞ্চলে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। তবে এর আগে তিনি দাবী করেছিলেন যে কাতারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে তার হাত রয়েছে। ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল যে তার সউদি আরব সফর ‘ইতিমধ্যে ফল দিতে শুরু করেছে। বিবিসি,রয়টার্স, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।