মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে মসৃণ প্রবৃদ্ধি থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার পাশাপাশি শীর্ষস্থানীয় উদীয়মান বাজারগুলোও বর্তমানে ভালো সময় পার করছে। সার্বিক পরিস্থিতি ইতিবাচক থাকায় চলতি বছরের জন্য বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে বিশ্বব্যাংক। চার বছরের মধ্যে এই প্রথম প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমায়নি সংস্থাটি। তবে প্রবৃদ্ধি আউটলুকে এখনো ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর বাণিজ্য রক্ষণশীলতা বৃদ্ধি ও নীতিনির্ধারণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। সে সময় ধারণা করা হয়েছিল, এটি বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের সা¤প্রতিক গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাসে দেখা গেছে, এবার বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। চার বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখল সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থাকা সত্তে¡ও চলতি বছর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ২ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধিই থাকবে। পরবর্তী দুই বছরে তা ক্রমান্বয়ে বেড়ে ২ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়াবে। বৈশ্বিক বাণিজ্য চাঙ্গা হয়ে ওঠায় দুই বছরের দুর্বল অবস্থা কাটিয়ে শিল্প-কারখানাগুলোর কার্যক্রমও বেড়েছে। যার প্রভাবে প্রবৃদ্ধি গতিশীল থাকবে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক। এদিকে শীর্ষ সাত উদীয়মান অর্থনীতিকে (চীন, ব্রাজিল, মেক্সিকো, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক ও রাশিয়া) বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান চালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গ্রুপ হিসেবে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো চলতি বছর ৪ দশমিক ১ শতাংশ স¤প্রসারিত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ৭ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে এর নেতৃত্বে থাকবে ভারত। চীনের প্রবৃদ্ধি থাকবে সাড়ে ৬ শতাংশ। অন্যদিকে বিগত দুই বছর সংকুচিত থাকার পর চলতি বছর আবারো প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে যাচ্ছে রাশিয়া ও ব্রাজিল। প্রসঙ্গত, পর্যাপ্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে গত বছর ভারতে ফসল আবাদ ভালো হয়েছে। এ সময় কৃষকদের হাতে অর্থ থাকায় গ্রামীণ অঞ্চলে পণ্যের চাহিদাও বেশি ছিল। চলতি বছরও দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস পাওয়া যাচ্ছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ চাহিদা শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে বলেই আশা করছে বিশ্বব্যাংক। দেশটির চলমান নীতিমালা সংস্কার পদক্ষেপ, বিশেষ করে দেশব্যাপী পণ্য ও সেবা কর (জিএসটি) বাস্তবায়ন এতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বিশ্বব্যাংকের মতে, উন্নত অর্থনীতিগুলোতেও স¤প্রসারণ অব্যাহত থাকবে, তবে তা হবে কিছুটা শ্লথ। এর মধ্যে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ২ দশমিক ১ শতাংশ, ইউরো অঞ্চল ১ দশমিক ৭ শতাংশ ও জাপান ১ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির মধ্যে থাকবে। প্রবৃদ্ধির গতি বর্তমানে মসৃণ থাকলেও এর ভবিষ্যৎ ঝুঁকিমুক্ত নয়। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে এ প্রসঙ্গে বলা হয়, রক্ষণশীলতা বৃদ্ধি, নীতিমালা-সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক ঝুঁকির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি আবার টালমাটাল হয়ে উঠতে পারে। প্রতিবেদনটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করা হলেও বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত কর কর্তন ও অবকাঠামো ব্যয় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে প্রণোদনা জোগাবে। বিপরীতে বাণিজ্য নীতিমালায় পরিবর্তন, বিশেষ করে তা প্রতিশোধমূলক হলে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার বাণিজ্যিক অংশীদাররাও এর ভুক্তভোগী হবে। এ ধরনের পরিস্থিতি বাণিজ্য পুনরুদ্ধারের গতিকে আবার পথচ্যুত করবে। বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ আয়হান কজ বলেন, যত দিন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকবে, তত দিন কোম্পানিগুলো ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব করবে। উদাহরণ হিসেবে নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টের (নাফটা) কথা বলা যায়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নাফটা নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করেছেন। উভয় দেশের কোম্পানিগুলো এখন নাফটার চূড়ান্ত রূপ জানতে অপেক্ষা করছে। এছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেয়ার ইস্যুটি বিশ্ব প্রবৃদ্ধির আউটলুকে ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে; তা আরেক দফা বাড়লে ভোক্তা আস্থা ও বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা আর্থিক বাজারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। এএফপি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।