নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : জাতীয় দলে খেলেছেন যতদিন, হিসেব করলে তারচাইতে বোধকরি মাঠের বাইরেই কেটেছে তার বেশি সময়। উপেক্ষায় থাকার জেদ থেকেই হোক কিংবা ফিরে আসার স্পৃহা থেকে- তার ব্যাটে ফুলঝুরি ছুটেছে বারংবার। এবারও দলের সঙ্গে আয়ারল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন নাসির হোসেন। ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে ডাবলিনে ব্যাটিংয়েল সুযোগ না পেলেও বল হাতে ৪৭ রানে দুই উইকেট নিয়ে দলের বিশাল জয়ে রেখেছিলেন অবদান। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে না থাকায় এর পরদিনই দল যখন ফ্লাইট ধরেছে বার্মিংহ্যামের ঠিক একই সময় ঢাকার ফ্লাইটে চড়েেেছন ‘ফিনিশার’ তকমা পাওয়া এই অলরাউন্ডার।
ফিরেই আবারও ঝলসেছে তার ব্যাট। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে আবারও দূর্দান্ত এর্ক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন নাসির। গতকাল ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে তার ব্যাটে চড়েই টানা তিন ম্যাচ হারের পর জয়ের মুখ দেখেছে গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্স। তার ক্যারিয়ার সেরা (১১৩ বলে ১৩৪) ইনিংসের পর তরুণ পেসার আবু হায়দার রনির ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে (৬/৩৫) উড়ে গেছে শেখ জামাল ধানমÐি ক্লাব। সুপার লিগের ম্যাচে গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্সের কাছে হেরেছে ১৭৭ রানের বড় ব্যবধানে। ফতুল্লায় টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ৩৫০ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে গাজী। জবাবে ৩৮.১ ওভারে মাত্র ১৭৩ রানেই অলআউট হয়ে যায় শেখ জামাল।
লিগে ছিলেন দারুণ ছন্দে, লম্বা বিরতির পর ফিরে যেন শুরু করলেন ঠিক সেখান থেকেই। ৪৯তম ওভারে যখন মাঠ ছাড়েন নাসির, তখন নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ১৩৪ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি। এক আসরে দ্বিতীয়বার লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নিজের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেললেন তিনি। প্রথম পর্বে মোহামেডানের বিপক্ষে খেলা অপরাজিত ১০৬ রান ছিল তার আগের সেরা। নাসিরের অধিনায়কোচিত ইনিংসটি গড়া ৭টি চার ও ৬টি ছক্কায়। চমৎকার এই ইনিংসে তিনিই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
এদিকে, আবাহনী-মোহামেডান দুই দলের আগের ম্যাচে হয়েছিল রান উৎসব। চীরপ্রতিদ্ব›দ্বীদের এবারের লড়াইয়ে রাজত্ব করেছেন বোলাররা। তার মধ্যে বিধ্বংসী এক ইনিংসে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন লিটন দাস (২২ বলে ৫০)। লিগের চলতি আসরে মোহামেডানকে তৃতীয় সর্বনিম্ন রানে অলআউট করে আবাহনী জিতেছে ৫ উইকেটে। সুপার লিগে এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয়। আগের ম্যাচে গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্সকে হারানো মোহামেডানের সুপার লিগে এটা প্রথম পরাজয়। এদিন বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৩৩.৪ ওভারে ১০০ রানে অলআউট হয়ে যায় মোহামেডান। জবাবে ১৫.৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আবাহনী। দলের ভারতীয় অলরাউন্ডার মনন শর্মা ৪ উইকেট নেন ২১ রানে। শুরুতে মোহামেডানকে কাঁপিয়ে দেওয়া সাকলাইন ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা। মোহামেডানের শামসুর রহমান ও জুবায়ের হোসেন নেন দুটি করে। লেগ স্পিনার জুবায়ের এক বছরের বেশি সময় পর খেললেন লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট। গত বছরের ১৬ মে শেষ এই সংস্করণে খেলেছিলেন তিনি।
এছাড়া সুপার লিগের অপর ম্যাচে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। রজত ভাটিয়া, আরাফাত সানির দারুণ বোলিংয়ে লক্ষ্যটা ছিল ধরা ছোঁয়ার মধ্যেই। মার্শাল আইয়ুব ও শাহরিয়ার নাফীসের ব্যাটে বাকিটা সেরেছে প্রাইম দোলেশ্বর। বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ২৪১ রান করে প্রাইম ব্যাংক। জবাবে ৮ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় প্রাইম দোলেশ্বর। দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্স ও আবাহনীর মতো দোলেশ্বরের পয়েন্টও ২০।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
গাজী গ্রæপ-শেখ জামাল
গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্স : ৫০ ওভারে ৩৫০/৫ (এনামুল ১, মুনিম ৩৫, মুমিনুল ৬৬, নাসির ১৩৪* আহত অবসর, জহুরুল ৬, গুরকিরাত ৭৪, শুভ ১৭*, হায়দার ৩*; জিয়া ২/৫৬, সোহাগ ১/৭৫, সানি ২/৬১)।
শেখ জামাল ধানমÐি ক্লাব : ৩৮.১ ওভারে ১৭৩ (মাহমুদ ৭, চোপড়া ৩৭, আল মামুন ২৫, তানবীর ১৭, জিয়া ৪৬, রাজিন ২৫, শাহাদাত ৯*; হায়দার ৬/৩৫, হোসেন ১/২৮, গুরকিরাত ২/২৭, শুভ ১/৩৪)।
ফল : গাজী গ্রæপ ১৭৭ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : নাসির হোসেন (গাজী গ্রæপ)।
আবাহনী-মোহামেডান
মোহামেডান : ৩৩.৪ ওভারে ১০০ (শামসুর ২৩, সৈকত ১০, তাইজুল ১৪, নাজমুল ১৭, সাজেদুল ১৬, আজিম ৪*; জায়েদ ২/২৩, সাইফউদ্দিন ১/১৭, মনন ৪/২১, সাকলাইন ৩/২৪)।
আবাহনী : ১৫.৩ ওভারে ১০৪/৫ (লিটন ৫০, সাদমান ২৪*, মিঠুন ১৬, নাজমুল ৮, শুভাগত ৬*; সাজেদুল ১/২২, জুবায়ের ২/১৮, শামসুর ২/৭)।
ফল : আবাহনী ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : সাকলাইন সজীব (আবাহনী)।
প্রাইম ব্যাংক-প্রাইম দোলেশ্বর
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব : ৫০ ওভারে ২৪১/৮ (মারুফ ৪৪, জাকির ১১, ঈশ্বরণ ৭১, তাইবুর ১৯, আসিফ ৬২*, রায়হান ১৫*; রেজা ১/৪৯, সানি ২/৪০, ফেরদৌস ১/২৬, ভাটিয়া ৩/৫০)।
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব : ৪৮.৪ ওভারে ২৪২/৪ (ইমতিয়াজ ৩২, শাহরিয়ার ৭৮, মার্শাল ৮৪, ভাটিয়া ২৩*, রেজা ১১*; রায়হান ২/২৮, আসিফ ১/৩৮, তাইবুর ১/৪৭) ।
ফল : প্রাইম দোলেশ্বর ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মার্শাল আইয়ুব (দোলেশ্বর)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।