নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
কাগুজে বাঘের যেমন তর্জন-গর্জন নেই, ভেতরটা ফাঁপা, কেবল আছে বাঘের মতো একটা আদল। ঢাকার ক্রিকেটে আবাহনী আর মোহামেডান ম্যাচও যেন এখন অনেকটাই তাই। কোন এক যুগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, উত্তাপ ছিল। তা আজ আর নেই। পুরাতনের জেরেই এটি পায় বড় ম্যাচের তকমা। কিন্তু পুরো আবহেই তার তাপ নেই। এবারের মৌসুমের প্রথম আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের আগেও সেই ম্যাড়ম্যাড়ে ছবিই দিচ্ছে ঝাঁজ মিইয়ে যাওয়ার প্রমাণ। আজ মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রথম মুখোমুখি হচ্ছে ঢাকার ক্রিকেটে অনেক ইতিহাসের সাক্ষী আবাহনী লিমিটেড আর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
দল হিসেবে আবাহনী এই মৌসুমে সেরা একথা যে কেউই বলবে। একাদশে খেলা ৮ জনই বাংলাদেশ জাতীয় দলের। মর্যাদার লড়াই এই ম্যাচের আগে গতকালও হালকা অনুশীলন করেছে দু’দল। আবাহনী অধিনায়ক জানালেন সেরা দলটাই নামাবেন তারা। খেলবেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, চোট কাটিয়ে ফিরেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। নিউজিল্যান্ড সফরের পর বিশ্রাম শেষে মোহামেডানের হয়ে নামতে পারেন লিটন কুমার দাসও। এবার এই পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের চারটিই জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের শিষ্যরা।
এদিকে, ঢাকা প্রিমিয়ারলিগে বিগত ৫ মৌসুমে দু’দলের ৫ বারের মোকাবেলায় ৩ বারই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আবাহনী। পক্ষান্তরে মোহামেডান শিবিরে জয় ধরা দিয়েছে দু’বার। তার চাইতে মর্মান্তিক হলো ২০১৩ সাল থেকে আজ অব্দি আবাহনী শিরোপা ঘরে তুলেছে ২ বার। কিন্ত মোহামেডান এখনো শিরোপার মুখ দেখেনি। আগেরবারের চেয়ে অনেক ভালো দল নিয়ে এবার প্রথম তিন ম্যাচ জিতে ভিন্ন কিছুর আভাস দিয়েছিল মোহামেডান। অভিষেক মিত্র, আব্দুল মজিদ, মোহাম্মদ আশরাফুল, ইরফান শুক্কুর, নাদিফ চৌধুরী, সোহাগ গাজীদের নিয়ে গড়া দলটি শেষ দুই ম্যাচেই হেরে আছে পাঁচ নম্বরে।
পয়েন্ট টেবিল বলুন, নামে ভারে বলুন এই আবাহনীর সঙ্গে কোন তুলনাই চলে না মোহামেডানের। এক সময় এই দু’দলের দ্বৈরথে মাঠে থাকত ভরপুর দর্শক। দুই দলের সমর্থকদের উপস্থিতিতে স্নায়ুচাপে ভুগতেন খেলোয়াড়রা। এখন পাঁড় সমর্থকরাও খেলা দেখতে মাঠে আসেন না। প্রায় ফাঁকা গ্যালারির সামনে নিয়ে মাঠের খেলাও ছড়ায় না রোমাঞ্চ।
খেলোয়াড়রাও টের পান না উত্তেজনা। এবার আবাহনীর অধিনায়কত্ব করা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত স্বীকারই করলেন এই ম্যাচের আলাদা কোন শিহরণ তার কাছে নেই, ‘আসলে সকালে প্র্যাকটিসে আসার পর মনে হয়েছে কাল মনে হয় আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ। আবাহনী-মোহামেডান সবসময়ই শুনে আসছি খুব প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ একটা ম্যাচ হয়। সেই উত্তেজনা আসলে মাঠে পাওয়া যায় এখন। আগে অনেক বেশি দর্শক থাকে না। আবাহনীর একটা সাইড থাকত, মোহামেডানের একটা সাইড থাকত। পুরো ভরা থাকত গ্যালারী। এখন হয়তো গুটিকয়েক দর্শক থাকে মাঠে, আমরা প্লেয়াররা তাদের মত খেলি। এটাই চলছে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে।’
তবে মোহামেডান কোচ মঞ্জুরুল ইসলামের কথা বেশ ঝাঁঝাঁলোই শোনাল। ৫ ম্যাচের ৩ জয়ে টেবিলে ৫ নাম্বারে থাকা দলটি টপারদের টেক্কা দিতে বেশ মুখিয়ে আছে, ‘আজকের ম্যাচটি কোন ফটোকপি হবে না। ম্যাচটি সত্যিকারের একটি ক্রিকেট ম্যাচ হবে।’ খেলোয়াড়ি জীবনে তার বড় সময়ই কেটেছে সাদা-কালোদের জার্সি গায়ে। তার মতে ঢাকাই ক্রিকেটের সেই জম্পেশ ঐতিহ্য আবার জমে উঠবে, ‘এটা কিন্তু পুরো বহুমাত্রিক একটা পরিস্থিতি তৈরি করে। আমার জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল মোহামেডানের পক্ষে খেলে, মোহামেডানের পক্ষে পারফর্ম করে। এখনো আমি বিশ্বাস করি, আপনি যদি দেখেন সেরা খেলোয়াড়রা আবাহনী মোহামেডানে খেলছে। অন্য টিম গুলোতে খেলছে না তা না, মাশরাফি বিন মুর্তজা, লিটন দাস বলেন, সোহাগ গাজি বলেন, নাদিফ চৌধুরী বলেন, রকিবুল আছে। যে ঐতিহ্য বলছেন হারিয়ে যাবে, এটা কিন্তু ফেরাতে হবে আমাদেরকেই, খেলোয়াড়দেরকেই করতে হবে। আমি মনে করি না এটা কখনই হারাবে, এটা চলবে।’
¤্রয়িমান বাস্তবতা সামনে রেখেও মোসাদ্দেক আর মঞ্জুরুল দুজনেই দিলেন দারুণ লড়াইয়ের আশা। কে জানে আজ দারুণ রোমাঞ্চকর কোন লড়াইই হয়ত হয়ে যাবে। ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট নিয়ে দর্শকদের নিভে যাওয়া আগ্রহেও হয়ত মিলবে নতুন জ্বালানি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।