বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে জালিয়াতির মাধ্যমে দাতার ছবি ও স্বাক্ষর জাল করে জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগ উঠেছে। মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে সদর সাব রেজিষ্ট্রার নজরুল ইসলামের যোগসাজসে বড় ধরণের এই জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জমির মালিক আব্দুল মানিক চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এদিকে সাব রেজিস্টার নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার সীমাহীন ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ ও দলিল লেখকরা। ভুক্তভোগীরা জানান, চাহিদা মত টাকা দিলেই সব অনিয়ম বৈধ হয়ে যায়। ঘুষ ছাড়া এখানে কোন দলিল রেজিস্ট্রি হয়না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যোগদানের পর থেকেই নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন সাব রেজিস্টার নজরুল ইসলাম। তার মোহরাল আফজালকে সঙ্গে নিয়ে অফিসকে পরিণত করেছেন ঘুষের রাজ্যে। সরকারী নিয়ম নীতির কোন বালাই নেই এই সাব রেজিস্ট্র্রি অফিসে। ম্যানেজ করতে পারলেই অবৈধ সব কাজ বৈধ হয়ে যায় এখানে। এভাবেই ভ‚য়া দলিল দাতা দেখিয়ে একটি জমির দলির রেজিস্ট্রি করে এবার ফেঁসে গেছেন সদর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার নজরুল ইসলাম। গত ১৫ জানুয়ারী সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে জালিয়াতির মাধ্যমে এই দলিল (দলিল নং-৮৫০) রেজিস্ট্রি করা হয়। জমির প্রকৃত মালিক চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নয়ানশুকা ফারাজীপাড়ার বিশু আলীর ছেলে আব্দুল মানিকের স্বাক্ষর ও ছবি জাল করে তার ভাই আব্দুর রাইহান সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের কেন্দুল মৌজার আর.এস-২০৮ দাগের ০.৩২০০ একর জমি রেজিস্ট্রি করে নেন। মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে সাব রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম ও তার মোহরাল আফজালের যোগসাজসে এই জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানতে পেরে জমির মালিক আব্দুল মানিক এই জালিয়াতির ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এদিকে থানায় অভিযোগের পর ওই দলিলের ২টি পাতা সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি সাবের রেজা আহমদ জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম এই জালিয়াতির কথা স্বীকার করে জানান অসাবধানতাবসত এই দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এই অফিসের কর্মকর্তাদের বিরদ্ধে সরকারি রেকর্ডে উল্লিখিত জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে দলিল রেজিস্ট্রির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে জমির শ্রেনী পরিবর্তন করে রেজিস্ট্রি করায় বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। গত বছরের ২৫ নভেম্বর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের মহম্মদখানী মৌজার আরএস- ৫৪, ১৬ ও ১৭ দাগের .৬০২৫ একর জমি আমমোক্তারনামা দলিলের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করা হয়। দলিল নং-১৪৭০৮।
আরএস খতিয়ানে এসব জমির শ্রেণী ডাঙ্গা থাকলেও তা বাঁশঝাড় হিসেবে উল্লেখ করে আমমোক্তারনামা দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। এভাবে জমির শ্রেনী পরিবর্তন করে প্রতিদিন বিপুল পরিমান সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। গত কয়েক বছরের রেজিস্ট্রি করা দলিল পরীক্ষা করলে এমন আরো ঘটনার সন্ধান পাওয়া যাবে বলে মনে করেন অনেকেই।
এদিকে ঘুষ ছাড়া এই অফিসে কোন রেজিস্ট্রি হয়না বলে জানিয়েছেন একাধিক দলিল লেখক। উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলামের নামে প্রতি দলিল রেজিস্ট্রিতে ১ থেকে ২ হাজার টাকা করে বাধ্যতামুলক ঘুষ নেন অফিসের মোহরার আফজাল হোসেন। এভাবে মাসে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এব্যাপারে সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অনেক সময় সরকারি রেকর্ড সরাসরি যাচাই করার সুযোগ না থাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন ভুলবসত শ্রেনী পরিবর্তন হওয়া এমন ২/১টি দলিল রেজিস্ট্রির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে তার বিরুদ্ধে আনা ঘুষ বাণিজ্যর অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।